ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করলেন সাফজয়ী আঁখি
Published: 9th, February 2025 GMT
একজন নারী ফুটবলার আঁখি খাতুন, আরেকজন দর্শক টেলিভিশনে খেলা দেখছেন টেনিস কোচ শরিফুল ইসলাম টিংকু। প্রায় ৪ বছর আগে আঁখি খাতুনের খেলা দেখতে চীন থেকে দেশে ফিরেছিলেন চীনের এইজ জি এ টেনিস ক্লাবের কোচ টিংকু। খেলা দেখতে এসে মাঠে পরিচয় হয় আঁখির সঙ্গে। ভালো লাগা থেকে শুরু হয় দু’জনের প্রেম। অবশেষে ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করলেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সাবেক এই খেলোয়াড়।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে আঁখির বাবা আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, দুই পরিবারের সম্মতিতে শুভ বিবাহের কাজটি সম্পন্ন হয়েছে।
নারী ফুটবলার আঁখি খাতুন ও শরিফুল ইসলাম টিংকু
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে দ্বাবাড়িয়া এলাকায় আঁখি খাতুনের পিত্রালয়ে বিয়ের শুভ কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। বর ও কনেকে এক নজর দেখতে আঁখি খাতুনের বাড়ি ভিড় করছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, আঁখির স্বামী মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম টিংকু বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্র। তার বাড়ি রাজশাহীর রাজপাড়া এলাকায়। তিনি বর্তমানে চীনের এইজ জি এ টেনিস ক্লাবে কোচ হিসেবে কর্মরত। আর আঁখি খেলছেন চায়নার স্ককর ওয়ার্ড ক্লাবে।
নারী ফুটবলার আঁখি খাতুন
২০১৮ সালে টেলিভিশনের পর্দায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় আঁখি খাতুনের খেলা দেখে ভালো লেগে যায় চীনের লন টেনিস কোচ শরিফুল ইসলামের। ২০২১ সালে মাঠে বসে আঁখির খেলা দেখতে চীন থেকে দেশে আসেন তিনি। এক পর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের যোগাযোগ চলতে থাকে। ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে উভয়ের মধ্যে। দুজনই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিবারকে জানান। পরিবারের সম্মতিতে ৪ বছর পর বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন তারা।
এরআগে, ২০২২ সালে সাফ জেতার পর অনেকটাই আড়ালে চলে যান আঁখি খাতুন। ২০২৩ সালে অনেক আলোচনা ও বিতর্কের মাঝে মায়ের অসুস্থতার কথা বলে বাফুফে ক্যাম্প ছাড়েন আঁখি। এরপর আর বাফুফে মুখো হননি তিনি। বাংলাদেশের হয়ে ১৮টি ম্যাচ খেলেছেন এই ডিফেন্ডার। এদিকে, পছন্দের মানুষকে জীবন সঙ্গী হিসেবে পেয়ে খুশি হওয়ার পাশাপাশি সবার কাছে দোয়া দেয়েছেন এই নব দম্পতি।
নারী ফুটবলার আঁখি খাতুন ও শরিফুল ইসলাম টিংকু
আঁখি খাতুন বলেন, “আমার খেলার অনেক বড় ভক্ত ছিলো টিংকু। এতই ভক্ত যে চার বছর আগে সুদূর চীন থেকে আমার খেলা দেখতে মাঠে হাজির হয়েছিল। সেটাই আমাকে অনেক বেশি আকৃষ্ট করেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে যোগাযোগের পর আস্তে আস্তে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে আমাদের। এখন তো আমরা জীবনের বন্ধনে জড়িয়ে গেলাম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছেন। তবে বিয়ের পরও পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাটাও চালিয়ে যেতে যান তিনি।”
আঁখির বাবা আক্তার হোসেন বলেন, “দুইজনের পছন্দের পর বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকে আঁখি ও তার স্বামী শাহজাদপুরে আমার বাড়িতে অবস্থান করছে। আগামী ১১ থেকে ১২ তারিখে ঢাকায় যাবে। সেখান থেকে চীনে যাওয়ার কথা আছে। আমি তাদের জন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।”
ঢাকা/অদিত্য/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল র আ খ
এছাড়াও পড়ুন:
দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
তীব্র খরার কবলে পড়েছে ইরানের রাজধানী তেহরান। সেখানে বাসিন্দাদের সুপেয় পানির প্রধান উৎসটি দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ গতকাল রোববার এ খবর জানিয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালক বেহজাদ পারসার বরাত দিয়ে আইআরএনএর খবরে বলা হয়, তেহরানে খাবার পানি সরবরাহের পাঁচটি উৎসের একটি আমির কবির বাঁধ। সেটিতে এখন মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ ঘনমিটার পানি আছে। এটি জলাধারটির মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৮ শতাংশ।
বেহজাদ পারসা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই পরিমাণ পানি দিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহ তেহরানের খাবার পানির চাহিদা মেটানো যাবে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরার মোকাবিলা করছে ইরান। গত মাসে স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, তেহরান প্রদেশে এবার বৃষ্টির যে মাত্রা, তেমনটা গত এক শতাব্দীতে খুব একটা দেখা যায়নি।
এক কোটির বেশি মানুষের নগর তেহরান তুষারাচ্ছন্ন আলবোর্জ পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত। এই পর্বতমালার সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫ হাজার ৬০০ মিটার (১৮ হাজার ৩৭০ ফুট) পর্যন্ত। এই পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন নদীগুলো বহু জলাধারে পানির জোগান দেয়।
বেহজাদ পারসা বলেন, এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ করা বাকি জলাধারগুলোর বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এই কর্মকর্তা।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।
এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।বেহজাদ পারসা, তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালকপানি সাশ্রয়ের পদক্ষেপ হিসেবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তেহরানের বেশ কয়েকটি এলাকায় বারবার সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর চলতি গ্রীষ্মে ঘন ঘন পানি সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘটনাও ঘটেছে।
জুলাই ও আগস্টে পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য দুই দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ইরানে সে সময় তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিদিন একাধিকবার লোডশেডিং হয়েছে।
ওই দুই মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছুঁয়ে গিয়েছিল।
জুলাই ও আগস্ট মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ফারেনহাইট) ছুঁয়ে ছিল।ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আজ যেভাবে আলোচনা হয়েছে, পানিসংকট পরিস্থিতি তার চেয়েও গুরুতর।’
ইরানজুড়ে পানিসংকট একটি বড় সমস্যা, বিশেষ করে দেশের দক্ষিণের শুষ্ক প্রদেশগুলোতে। ভূগর্ভস্থ সম্পদ ব্যবহারে অব্যবস্থাপনা ও সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারকে পানি ঘাটতির জন্য দায়ী করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে ভূমিকা রাখছে।
আরও পড়ুনপ্রচণ্ড গরমে পানির ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ইরানিদের কম পানি ব্যবহারের আহ্বান২০ জুলাই ২০২৫