শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না
Published: 11th, February 2025 GMT
বাংলাদেশের মতো দেশে শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এ জন্য রাজস্ব নীতির পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থাপনার তদারকিও প্রয়োজন। সরকারের নেওয়া সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও সরবরাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে থাকে। পণ্য ও সেবার চাহিদা ও জোগানের পুরোটা প্রতিফলিত হয় না।
তবে স্বস্তির দিক হলো রিজার্ভের পতন ঠেকানো গেছে। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বর্তমানে স্থিতিশীল আছে। ফলে আমদানির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
ঘোষিত মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহারে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। সরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কমানো হয়েছে। আর বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের পণ্য রপ্তানি আয় যে বেড়েছে, তার পেছনে প্রধান কারণ অতিরিক্ত সক্ষমতা ব্যবহার। কিন্তু নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে না। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ব্যাংকঋণের একটি বড় অংশ ব্যবহার হচ্ছে চলতি মূলধন হিসেবে।
ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদের কারণে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে গেছে। এতে নতুন কর্মসংস্থানও বাড়ছে না। তাই উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিকল্প কিছু সুবিধার ব্যবস্থা করা দরকার। কারণ, আমরা দেখছি, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। মজুরিহার বৃদ্ধির সঙ্গে মূল্যস্ফীতির সামঞ্জস্য নেই।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আগেও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু মূল্যস্ফীতি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমেনি। তবে এটাও ঠিক, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা সময় লাগে। আমাদের মতো দেশে শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। রাজস্ব নীতি, বাজার তদারকিসহ অন্যান্য ব্যবস্থাও সমন্বিতভাবে গ্রহণ করতে হবে।
আমি মনে করি, মূল্যস্ফীতি এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে (পিক) আছে। ধীরে ধীরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি হ্রাস পাবে। তবে সরকার চলতি অর্থবছরের জুন মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে। এই মূল্যস্ফীতিও মানুষকে কষ্ট দেবে।
মোস্তাফিজুর রহমান, সম্মাননীয় ফেলো, সিপিডি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রামগড়ে ভ্যাকসিন দেয়ার পর অর্ধশত গরু-ছাগলের মৃত্যু
খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার লামকুপাড়া এলাকায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ভ্যাকসিন দেয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রোগাক্রান্ত গরু ও ছাগল মারা গেছে। গত ১৫ দিনে চারটি গরু ও প্রায় অর্ধশত ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে এলাকা পরিদর্শন করে মৃত পশুর ময়নাতদন্ত ও রোগাক্রান্ত পশুর নমুনা সংগ্রহ করেছেন প্রাণিসম্পদ বিভাগের চট্টগ্রাম থেকে আসা মেডিকেল টিমের সদস্যরা। তারা এলাকায় এসে খামারিদের সঙ্গে কথা বলেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালকের পক্ষে ৬ সদস্যের তদন্ত টিমের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা ভেটেনারি কর্মকর্তা ডা. সাহব উদ্দিন।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে মহাজনী সুদের চাপে শ্রমিকের মৃত্যু, দাবি পরিবারের
নোয়াখালীর মাদরাসায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা
স্থানীয়রা খামারিরা জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পশু চিকিৎসকের পরামর্শে সরকারি ভ্যাকসিন দেয়ার পর এ ঘটনা ঘটেছে। খামারিরা মনে করছেন, এ সব ভ্যাকসিনে সমস্যা ছিল অথবা একই সিরিঞ্জে সবগুলো পশুকে ভ্যাকসিন দেয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ভ্যাকসিন দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পশুর অতিরিক্ত জ্বর, চামড়ায় গুটি ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতে গরু ও ছাগল মারা যায়। কোনো চিকিৎসায় আর বাঁচানো যাচ্ছে না।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে মৃত পশু মাটিচাপা দেয়া এবং আক্রান্ত পশুকে অন্য পশু থেকে আলাদা রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা/রূপায়ন/বকুল