ইউক্রেন একদিন রাশিয়ার হবে: ট্রাম্প
Published: 12th, February 2025 GMT
ইউক্রেন একদিন রাশিয়ার হতে পারে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তির পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে ট্রাম্প সোমবার ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে এ কথা বলেন। চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। এর আগেই ট্রাম্পের এ মন্তব্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে।
প্রায় তিন বছর ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে এই যুদ্ধ হতোই না। কিন্তু যুদ্ধের তিন বছর পূর্তির মাত্র কয়েক দিন আগে ইউক্রেন নিয়ে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করলেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইউক্রেন হয়তো রাশিয়ার সঙ্গে কোনো সমঝোতা করতে পারে। আবার সেটা নাও হতে পারে। আবার এমনটাও হতে পারে, ইউক্রেন একদিন রাশিয়ার হয়ে গেল। ট্রাম্পের এমন মন্তব্য ঘিরেই চলছে জোর চর্চা। ঠিক কী বলতে চেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে ওয়াকিবহাল মহল।
চলতি সপ্তাহেই জেলেনস্কির সঙ্গে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক হতে চলেছে। বৈঠকের মাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একটি গতি করতে চান ট্রাম্প। সমঝোতার পাশাপাশি নিজের লাভের কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সহায়তার বিনিময়ে একটি লাভের প্রত্যাশা থাকতেই পারে। কিয়েভের প্রাকৃতিক সম্পদ, যেমন– বিরল খনিজ দিয়ে এর বিনিময় মূল্য দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে।
এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে হলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সব শর্ত পুরোপুরি পূরণ করতে হবে। সোমবার এমন কথা জানিয়েছেন রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক প্রধান। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, মস্কো ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকলেও, এ সংঘাতের ‘মৌলিক কারণগুলো’ সমাধান করা হলেই কেবল যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব। খবর রয়টার্স ও বিবিসির।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন য দ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।