Samakal:
2025-08-01@03:09:17 GMT

প্রাণচাঞ্চল্য, উৎসবের আবহ

Published: 12th, February 2025 GMT

প্রাণচাঞ্চল্য, উৎসবের আবহ

ভিড় তো বেড়েছেই। বিভিন্ন স্টলে পছন্দের বইয়ের খোঁজে ছুটে আসছেন পাঠক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, শিশুতোষ রচনা– সব ধরনের বইয়ের চাহিদা বাড়ছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপর প্রকাশিত বইয়ের বিক্রি বেশি। 

গতকাল মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলায় কথাগুলো বলছিলেন ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি জোবায়ের। সরেজমিন দেখা যায়, ঐতিহ্যের স্টলে উপচে পড়া ভিড়। পাশে বাতিঘরের স্টলেও ঢুকতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। স্বল্প পরিসরে সুন্দর করে সাজানো স্টলের প্রতি আগ্রহ বেশি তরুণদের। রিকশা পেইন্টের আদলে নকশা করা স্টল কুঁড়েঘরের সামনে শাড়ি পরে তরুণীদের ছবি তুলতে দেখা যায়। ঢাকা কমিকসের স্টলে শিশু-কিশোরদের ভিড় লেগেছিল। তাদের চোখ আটকে ছিল নতুন কমিকসে। 

স্কুল-কলেজে গতকাল ছিল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঘী পূর্ণিমার ছুটি। এর প্রভাব পড়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মেলা প্রাঙ্গণে। স্কুলপড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তাদের ভিড় ও প্রাণচাঞ্চল্যে মুখর হয়ে ওঠে পরিবেশ। এমনকি শিশু চত্বরেও দেখা যায় বেশ ভিড়। সন্তানদের নিয়ে এসেছেন অভিভাবকরা। ময়ূরপঙ্খী স্টলের সেলসের দায়িত্বে থাকা বীথি বলেন, গত শুক্রবার থেকে মেলায় ভিড় বাড়ছে। মাঝের দু’দিন ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি একটু কম ছিল। তবে মঙ্গলবার তা আবার বেড়েছে।

সম্প্রীতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী রেজাউল করিম বিল্লাল বলেন, যা প্রত্যাশা করেছিলাম, লোকসমাগম ও বিক্রি তার চেয়ে অনেক বেশি। লিটল ম্যাগ চত্বরেও গতকাল সন্ধ্যায় বেশ পাঠকের আনাগোনা দেখা যায়।

সন্তানদের স্কুল বন্ধ থাকায় তাদের নিয়ে আজিমপুর থেকে এসেছেন আহমেদ শফী। তিনি বলেন, আজ অফিস খোলা। তবু এমন ভিড় হবে, ভাবিনি। তবে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়ের মধ্যে মেলা প্রাঙ্গণে বিপুল সংখ্যক হকারের আনাগোনাও দেখা গেছে। কয়েক স্থানে ধূমপান করতেও দেখা যায়, যা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন দর্শক ও পাঠকরা। দর্শনার্থী মাহিদ বলেন, এখানে নারী-শিশুসহ সবাই আসেন। তার মধ্যে ধূমপান বিরক্তিকর।

মেলা প্রাঙ্গণে গত সোমবার ‘সব্যসাচী’ স্টলে হট্টগোলের কোনো প্রভাব মেলায় পরিলক্ষিত হয়নি। কেবল মেলার বিভিন্ন পয়েন্টে বেড়েছে পুলিশের পাহারা। বন্ধ থাকা সব্যসাচী স্টলের সামনে উৎসুক জনতাকে ছবি তুলতে দেখা যায়। অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এর মেলার ১১তম দিনেও ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানটি তেমন শোনা যায়নি। 

নতুন বই
গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ৯১টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য– বাংলা একাডেমি থেকে মোহাম্মদ আশরাফুল হাবীবের ‘কুশান গানের পরিবেশনা রীতির বিবর্তনে গায়েন-অভিনেতার ভূমিকা’; পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.

থেকে তাপস রায়ের ‘রসিক শরৎচন্দ্র’; ভাবনা প্রকাশ থেকে মো. গোলাম রব্বানীর ‘কুড়িয়ে পাওয়া’; বৃত্তকলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ফিরোজ আহম্মেদের ‘রক্তের প্লাবনে আর্তনাদ’; মাছরাঙা প্রকাশন থেকে সম্পাদনা পরিষদ কর্তৃক সম্পাদিত সাহিত্য সংকলন ‘২৪শের আলোর মিছিল’ (চতুর্থ সংকলন)।

মূল মঞ্চের আয়োজন
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আদর্শায়িত কল্পলোক ও শাহেদ আলীর ‘দ্বিধাচিত্ত মন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। চঞ্চল কুমার বোসের সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিবলী আজাদ। আলোচনায় অংশ নেন মোস্তাক আহমাদ দীন। শিবলী আজাদ বলেন, শাহেদ আলীর গল্পে যেমন দার্শনিক প্রতীতি রূপায়ণের চেষ্টা রয়েছে, তেমনি রয়েছে সামাজিক বৈষম্য আর অনাচার ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস। তাঁর রচনাগুলো উত্তাল সময়, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধকালের বৌদ্ধিক ও নান্দনিক প্রতীতির প্রতি লেখকের এক ধরনের প্রতিক্রিয়া।

মোস্তাক আহমাদ দীন বলেন, রাজনীতি-সচেতন সক্রিয় ব্যক্তিত্ব শাহেদ আলী সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনে তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর রাজনৈতিক ও সৃষ্টিশীল জীবনকে কখনও একাত্ম করেননি। এমনকি তাঁর গল্পের মধ্যে কঠোর নীতিবোধও আরোপ করেননি।

‘লেখক বলছি’ মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন নাসির আলী মামুন এবং মামুন সারওয়ার। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেন কবি মুস্তাফা মজিদ, শফিকুল ইসলাম বাহার ও আনজুমান আরা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মো. সালমান, মাহমুনুল হক সিদ্দিক, জাকির হোসেন আখের, সঞ্জয় কুমার দাস, শরণ বড়ুয়াসহ অনেকে।

আজকের আয়োজন
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এর কবিতা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। ফরহাদ মজহারের সভাপতিত্বে এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন হাসান রোবায়েত; আলোচনায় অংশ নেবেন মঈন জালাল চৌধুরী ও আশফাক নিপুন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল বইম ল উপস থ গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।

সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।

ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’

হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’

কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।

এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইয়ের ১১ নাটক নিয়ে শিল্পকলায় উৎসব
  • ১৬ কোটি টাকায় সারা দেশে ফুটবলের তিন টুর্নামেন্ট
  • দুদিনের সফরে কলকাতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
  • ভৌতিক গল্প নিয়ে কানাডায় নুহাশ
  • তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
  • সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
  • ‘মুক্তির উৎসব’ করতে সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাবেক সমন্বয়কের আবেদন
  • এবার পরিবার নিয়ে ঘরে বসেই ‘উৎসব’
  • খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ