ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অবমাননা করে মন্তব্য করার অভিযোগে দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধীকে তলব করেছেন উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লক্ষ্ণৌয়ের এমপি এমএলএ আদালত। ইতোমধ্যে তাঁকে তলবের নোটিশও পাঠানো হয়েছে। দেড় বছর আগে ভারত জোড়ো যাত্রার সময় রাহুল ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ।
লক্ষ্ণৌয়ের এই আদালতটি একটি বিশেষায়িত আদালত, শুধু এমপি এবং বিধায়কদের মামলার বিচার হয় এ আদালতে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর অধীন সড়ক নির্মাণ সংস্থা বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের (ব্রো) সাবেক পরিচালক শঙ্কর শ্রীবাস্তবের করা একটি মামলার জেরে রাহুলকে পাঠানো সেই নোটিশে বলা হয়েছে, আগামী মার্চের শেষ সপ্তাহের যে কোনো দিন আদালতে হাজির হতে হবে তাঁকে।
মামলার অভিযোগপত্র অনুসারে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো’ কর্মসূচি চলাকালে এক জনসভায় রাহুল মন্তব্য করেছিলেন, অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় সেনাদের মারধর করছে চীনের সেনারা। একজন দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদ এবং জনপ্রতিনিধির এহেন মন্তব্য ভারতের সেনাবাহিনীর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করেছে, বলা হয়েছে অভিযোগপত্রে। যদিও এই ভারত জোড়ো যাত্রাই কংগ্রেসকে যে উজ্জীবিত করেছে, তা বোঝা গেছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে। এই নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লাড়াই করে দলটি, যার কৃতিত্ব রাহুলকেই দেওয়া হয়।
রাহুল-ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় আসীন বিজেপির সমালোচনা করে এ মন্তব্য করেছিলেন রাহুল। সেনাবাহিনীকে অবমাননা করার কোনো উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না।
ভারতের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী বরাবরই বিজেপির কঠোর সমালোচক। বিজেপিও অবশ্য এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। দলটির অনেক নেতা ইতোমধ্যে রাহুলকে ‘দেশবিরোধী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। অনেকে এমন অভিযোগও তুলেছেন, নিজের পিতার নামে করা সংস্থা রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের জন্য রাহুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিয়মিত চীনের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করেন। এসব দুর্নাম রাহুলকে বিজেপির সমালোচনা করা থেকে ঠেকাতে পারেনি। খবর এনডিটিভির।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।
জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’
অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।
জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া