মেন্টাল অ্যারিথমেটিক প্রতিযোগিতা ও আলোহা সমাবর্তন অনুষ্ঠিত
Published: 16th, February 2025 GMT
আলোহা বাংলাদেশের আয়োজনে গতকাল শনিবার শেষ হয়েছে দুই দিনব্যাপী ১৭তম জাতীয় পর্যায়ের অ্যাবাকাস ও মেন্টাল অ্যারিথমেটিক প্রতিযোগিতা এবং আলোহা তৃতীয় কনভোকেশন। রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে (আইসিসিবি) ছিল এই আয়োজন।
দুই দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় সারা দেশের ছয় শতাধিক স্কুল থেকে ৩ হাজার ৯০০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে, যারা আলোহা বাংলাদেশের বিভিন্ন শাখায় এ কোর্সটিতে যুক্ত আছে। এ আয়োজনে ৫৫০ জন আলোহা গ্র্যাজুয়েট সম্মাননা গ্রহণ করে।
শিশুরা কত দ্রুত ও নির্ভুলভাবে সমাধানে পৌঁছাতে পারে, এটা পরীক্ষার উদ্দেশ্যেই প্রতিযোগিতাটি আয়োজিত হয়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের পাঁচ মিনিটের মধ্যে ৭০টি জটিল গাণিতিক সমাধান করতে বলা হয় এবং বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্ভুলভাবে গাণিতিক সমাধান করে।
আয়োজনের প্রথম পর্ব উদ্বোধন করেন আলোহা মেন্টাল অ্যারিথমেটিকের প্রতিষ্ঠাতা লোহ মুন সাঙ। এরপর শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানানোর পর শুরু হয় পরীক্ষা–পর্ব। মোট চারটি ব্যাচে প্রায় ৩ হাজার ৯০০ শিক্ষার্থী এই গণিত পরীক্ষায় অংশ নেয়।
দ্বিতীয় দিন প্রথম পর্বে প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলোহা মেন্টাল অ্যারিথমেটিকের প্রতিষ্ঠাতা লোহ মুন সাঙ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলোহা ইন্টারন্যাশনাল ডিরেক্টর কিরণ মাতওয়ানি। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আলোহা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সাইফুল করিম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.
স্বাগত বক্তব্যে আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘১৮ বছর ধরে মস্তিষ্কের মানোন্নয়নে কাজ করছে আলোহা বাংলাদেশ। যেহেতেু শিশুদের ১৫ বছর পর্যন্ত কগনেটিভ নলেজের বিকাশ ঘটে, তাই বেশি বেশি এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি তাদের জন্য খুবই জরুরি।’
লোহ মুন সাঙ বলেন, ‘আমরা চাই পৃথিবীজুড়ে শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিমত্তার সৃষ্টিশীল বিকাশ ঘটুক। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর অতিথিদের শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। এরপর আলোহা জিল্যান্ড শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্স, প্রেজেন্টেশন এবং সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। শেষে ফল ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। জাতীয় পর্যায়ে উন্নীত শিক্ষার্থীরা এ বছর কম্বোডিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে।
বিকেলে দ্বিতীয় পর্বে আলোহা বাংলাদেশের তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।