ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ‘নেট জিরো প্রজেক্ট ও প্লাস্টিক-ফ্রি জিরো-ওয়েস্ট ক্যাম্পাস’ উদ্যোগ শুরু
Published: 18th, February 2025 GMT
ছবি: BRAC University (2)
ক্যাপশন: ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে বিশেষ আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে ‘নেট জিরো প্রজেক্ট ও প্লাস্টিক-ফ্রি জিরো-ওয়েস্ট ক্যাম্পাস’ উদ্যোগ শুরু হয়। ছবি: সংগৃহীত
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ও বাংলাদেশ সাসটেইনেবিলিটি অ্যালায়েন্স (বিএসএ) যৌথভাবে শুরু করেছে ‘নেট জিরো প্রজেক্ট ও প্লাস্টিক-ফ্রি জিরো-ওয়েস্ট ক্যাম্পাস’ উদ্যোগ। গতকাল সোমবার ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই উদ্যোগের যাত্রা শুরু হয়েছে।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিকে প্লাস্টিকমুক্ত ও শূন্য–বর্জ্য ক্যাম্পাসে পরিণত করাই এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য। এর জন্য উন্নত রিসাইক্লিং ব্যবস্থা, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা এবং পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্লাস্টিকদূষণ হ্রাসে বাস্তবসম্মত সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ সাসটেইনেবিলিটি অ্যালায়েন্স। ২০২৩ সালের নভেম্বরে গঠিত এই প্ল্যাটফর্মে ব্র্যাক, ইউনিলিভার, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ ও মেরিকো বাংলাদেশের মতো প্রতিষ্ঠান যুক্ত রয়েছে।
উদ্যোগটির অংশ হিসেবে অনুষ্ঠানে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। এতে স্বাক্ষর করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার এবং ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন, নগর উন্নয়ন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির পরিচালক লিয়াকত আলী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি তাঁর বক্তব্যে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে তিনি পরিবেশ সংরক্ষণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ বলেন, ‘ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি উচ্চশিক্ষার একটি নতুন ধারণা তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে টেকসই উন্নয়ন। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রকৃত উৎকর্ষ তখনই আসবে যখন আমরা সবাই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করব।’ পরিবেশের প্রতি যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিবেশ সংরক্ষণকে শুধু পরিবেশবিদ্যা নয়, বরং সব পাঠ্যক্রমের কেন্দ্রে রাখা উচিত। কারণ, এটা আমাদের সবার সম্মিলিত দায়িত্ব।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন–সম্পর্কিত পদক্ষেপগুলো নিয়ে আলোচনায় তিনি বলেন, ‘বর্জ্য কমানো, সম্পদের দায়িত্বশীল ব্যবহার এবং ক্যাম্পাস পরিচালনায় পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি।’ শিক্ষা, গবেষণা ও কার্যকর উদ্যোগের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন প্রচারের জন্য ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় গ্লোবাল সাউথে টেকসই উন্নয়ন শিক্ষার নেতৃত্ব দিতে চায়।’
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার ডেভিড ডাউল্যান্ড। এ ছাড়া ‘টুগেদার টুওয়ার্ডস আ জিরো ওয়েস্ট ক্যাম্পাস’ শীর্ষক বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাসটেইনেবিলিটি অ্যালায়েন্সের প্রধান সমন্বয়ক সংকলিতা সোম। অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ল্যাব আয়োজিত ‘জিরো ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি চ্যালেঞ্জ’ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সিড ফান্ডিং প্রদান করা হয়।
এরপর পরিবেশবান্ধব ধারণা ও প্রকল্প তুলে ধরতে একটি পোস্টার প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সেখানে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বর্জ্য কমানোর উপায়, কীভাবে টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব এবং প্লাস্টিকের পরিবেশবান্ধব বিকল্প কী হতে পারে—এসব বিষয়ে তাদের ধারণা ও উদ্ভাবনী সমাধান উপস্থাপন করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র য ক ইউন ভ র স ট র অন ষ ঠ ন পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।
জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’
অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।
জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া