টানা বাজে খেলার ফল হিসেবে ভারতের ক্রিকেটারদের জন্য নেমে এসেছে বিসিসিআইয়ের কড়া বিধিনিষেধ। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হারের পর তাঁদের ১০টি শর্ত দিয়ে দিয়েছিল ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ন্যূনতম ৪৫ দিনের সফরে পরিবারের সঙ্গে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ সময় কাটাতে পারবেন ভারতের খেলোয়াড়েরা।

আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কার্তিকের ‘ডার্ক হর্স’ বাংলাদেশ১ ঘণ্টা আগে

আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, যা শেষ হতে এক মাসের কম সময় লাগবে। ‘১০ দফা’র অন্যতম শর্ত হিসেবে পরিবার ছাড়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে হবে রোহিত শর্মাদের, এমন তথ্য পিটিআইকে জানিয়েছিল বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র। এমনকি একজন ক্রিকেটার এই নিয়ম শিথিল করার অনুরোধ করলেও তা রাখা হয়নি।
তবে এবার জানা গেছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ ও সেমিফাইনাল–ফাইনালের একটিতে চাইলে পরিবারকে নিয়ে যেতে পারবেন ভারতের ক্রিকেটাররা। সবগুলো ম্যাচই তাঁদের খেলার কথা রয়েছে দুবাইতে।

ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘জাগরণ’ জানিয়েছে, নিজেদের কড়া সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বিসিসিআই। পত্রিকাটির দাবি বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে খেলোয়াড়েরা চাইলে এক ম্যাচের জন্য পরিবার সঙ্গে রাখতে পারবেন।

আরও পড়ুনকেন ১ কোটি ৩২ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি করে দিলেন পিসিবি চেয়ারম্যান২ ঘণ্টা আগে

এর আগে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের সময় এক ক্রিকেটার ২৭টি লাগেজ নিয়ে গেছেন বলে খবর ছড়ায়। তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী ও পরিবারের সদস্যদের লাগেজ ছিল এর মধ্যে। এরপর বিসিসিআই নিয়ম করে দেয় কোনো ক্রিকেটার দেড় শ কেজির বেশি মালামাল নিলে বাড়তি অর্থ খরচ করতে হবে তাদেরই।

এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে একই গ্রুপে আছে পাকিস্তান। ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের প্রথম ম্যাচ। তিন দিন পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে নামবে তারা, ২ মার্চ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে ভারত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ