চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের পদত্যাগ ও ৯ ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে আজ বৃহস্পতিবারও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা।

আজ দুপুর ১২টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এই ভবনে উপাচার্য, দুই সহ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে। কর্মসূচি শেষ হয় বেলা তিনটায়। অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের বিভিন্ন পোস্ট ও কমেন্টের পোস্টার প্রদর্শনী করেছেন।

কর্মসূচিতে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ মোহাম্মদ শিহাব বলেন, ‘যাঁরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন, প্রতিরোধ করেন, তাঁদের বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু যাঁরা অন্যায় করেন, মব নিয়ে হামলা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এমনটা চলতে দেওয়া যায় না। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটতে দেওয়া যাবে না। অবিলম্বে এই প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে। কুরুচিপূর্ণ মনোভাবের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।’

বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নুজহাত তাবাসসুম বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই ছাত্রীদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে প্রশাসন। অথচ যেসব ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, তাদের পর্যন্ত আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়েছে। অন্যায়ভাবে দেওয়া এই বহিষ্কারাদেশ বাতিল করতে হবে, তা না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন তাঁরা।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ধ্রুব বড়ুয়া এই কর্মসূচির সঞ্চালনা করেন।

বহিষ্কৃত ছাত্রীদের সংবাদ সম্মেলন, উপাচার্যকে চিঠি

এদিকে বেলা তিনটায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বহিষ্কৃত পাঁচ শিক্ষার্থী। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠে এক শিক্ষার্থী বলেন, তাঁরা সুষ্ঠু তদন্ত প্রত্যাশা করছেন। তাই তাঁরা নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানাচ্ছেন। নতুন কমিটিতে নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একজন শিক্ষক রাখতে হবে। আর অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও একজন প্রতিনিধি রাখতে হবে।

সংবাদ সম্মেলন শেষে উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহ্‌ইয়া আখতারকে চিঠি দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিকেল চারটায় উপাচার্যকে এই চিঠি দেন তাঁরা। এতে উপাচার্যকে আহ্বান করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফকে অপসারণ করে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি রক্ষা করুন।’

উল্লেখ্য, সহকারী প্রক্টরকে শারীরিক লাঞ্ছনা ও ধর্ম অবমাননার ঘটনায় চলতি ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় ১২ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়। এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জননেত্রী শেখ হাসিনা হলে ছাত্রীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির বাগ্‌বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক কোরবান আলীকে শারীরিক লাঞ্ছনা করতে দেখা গেছে এক ছাত্রীকে। এ ছাড়া কয়েকটি ভিডিওতে প্রক্টরিয়াল বডির একাধিক সদস্যকে ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে দেখা যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপ চ র য

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গঙ্গাচড়ায় হিন্দুবাড়িতে হামলা ঠেকাতে ‘পর্যাপ্ত’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন