লোহাগাড়ায় আ’লীগ নেতার দখলে ১০ কোটি টাকার খাসজমি
Published: 22nd, February 2025 GMT
লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা পহর চান্দা হাছনা ভিটায় আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আলম অবৈধভাবে দখল করে আছেন দুই একর খাসজমি। সেখানে এখন নির্মাণ করছেন মার্কেট। এই জমির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার জেলা প্রশাসক ও লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন শাহ আলম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। অভিযোগে লামা সরই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলমকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই আওয়ামী লীগ নেতা অবৈধভাবে দুই একর সরকারি খাসজমি দখল করে আছেন এবং বর্তমানে পাকা মার্কেট নির্মাণ করছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার পূর্বে হাছনাপাড়া স্টেশনে ডিসি সড়ক সংলগ্ন নূরল আলমের পাকা মার্কেট। ফার্মেসি, নাপিত, মুদি ও চায়ের দোকান রয়েছে সেখানে। রয়েছে চাষের জমিসহ বিশাল মৎস্য প্রকল্প। একটি দুই হাজার বর্গফুটের নির্মাণাধীন পাকা বাড়িও দেখা গেছে। খাসজমিতে ইট, বালু, কংক্রিট ও রড মজুত করা হয়েছে। ৭-৮ জন শ্রমিক টিনের দোকানগুলোর ভেতরে পাকা ঘর নির্মাণ করছেন। স্থানীয় লোকজন জানান, সরকারি খাসজমি জবরদখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছেন আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আলম।
অভিযুক্ত সরই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আলম বলেন, ‘আমি ৬০ শতক খাসজমি বন্দোবস্তি নিয়েছি। সেখানে পাকা মার্কেট ও ঘর নির্মাণ করছি।’ ৬০ শতকের বেশি দুই একর খাসজমি কেন দখলে আছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষ খাসজমি দখলে আছে। এগুলো নিয়ে কেন কথা হয় না।’
স্থানীয়রা বলেন, নুরুল আলম আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আওয়ামী লীগের আমলে তিনি খাসজমি দখল করেছেন। আওয়ামী সরকার পতনের পরও প্রকাশ্যে তিনি নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিযোগকারী শাহ আলম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘পুটিবিলা পহর চান্দা মৌজার ৫নং সিটের ৪০১৬, ৪০২৮, ৪০১৪ বিএস দাগের দুই একর জমি অবৈধভাবে দখল করেছেন নুরল আলম। জনস্বার্থে ও সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছি। এখন অবৈধ দখল উচ্ছেদ করবে কিনা সেটা প্রশাসনের ব্যাপার।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দখল ন র ম ণ করছ ন ন র ল আলম দ ই একর সরক র আওয় ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত
উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”
সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”
এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।
ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।
ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ