সাইবার আইনে এখনো মামলা হচ্ছে, গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে
Published: 25th, February 2025 GMT
দেশে এখনো সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হচ্ছে এবং গ্রেপ্তার করার ঘটনা ঘটছে। সরকার একাধিকবার সময় নিয়েও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে পারেনি। এখন পর্যন্ত লেখক ও উদ্যোক্তা মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়নি। এতেই প্রমাণ হয়, সাইবার আইন বাতিল নিয়ে সরকারের আগ্রহ নেই।
লেখক ও উদ্যোক্তা মুশতাক আহমেদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তারা এ অভিযোগ করেন।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন মিলনায়তনে এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজন করে ডিএসএ (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) ভিকটিমস নেটওয়ার্ক ও ভয়েস ফর রিফর্ম নামের দুটি সংগঠন।
র্যাবের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে বন্দী ছিলেন মুশতাক আহমেদ (৫৩)। ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ অবস্থায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন অভিযোগ ওঠে যে মুশতাক আহমেদকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
স্মরণসভায় মুশতাক হত্যার বিচার চেয়ে ডিএসএ ভিকটিমস নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক ও সভার সভাপতি গোলাম মাহফুজ জোয়ার্দার বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সরকার জুলুমতন্ত্র ও মাফিয়াতন্ত্রের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে কি না, তার প্রমাণ হবে মুশতাক হত্যা মামলা ও বিচার সরকার করে কি না, সেটার মাধ্যমে। তিনি সব নিবর্তনমূলক আইন অবিলম্বে বাতিলের দাবি করেন।
সভার সঞ্চালনা করেন ডিএসএ ভিকটিমস নেটওয়ার্কের সদস্যসচিব এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘এই সরকার গঠনের পর আমাদের কাছে প্রথম কমিটমেন্ট (অঙ্গীকার) করা হয় সব কালাকানুন বাতিল করা হবে। বারবার সময় নিয়েও তা হয়নি।’
মানবাধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেনিন বলেন, ৫ আগস্টের পর অল্প সময়েই অনেক মামলার সুরাহা হয়েছে, কিন্তু সাইবার সিকিউরিটি আইনে করা মামলায় ভুক্তভোগীদের নিয়ে ভাবেনি সরকার।
সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা মুশতাক আহমেদের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের সময় যখন গুম ও গ্রেপ্তারে বারবার দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাচ্ছিল, তখন আমি মুশতাক ভাইয়ের একটা কথা স্মরণ করতাম, “আমরা তো কোনো অপরাধ করি নাই। আমরা কেন ভয় পাব”।’
ভয়েস ফর রিফর্মের সমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর এখনো সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল না হওয়া এবং এই আইনে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনার সমালোচনা করেন।
লেখক মুশতাক আহমেদ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছবিতে শিল্পকলা একাডেমির দুই দিনের নৃত্যানুষ্ঠান
আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের আয়োজনে শেষ হলো দুই দিনব্যাপী নৃত্যের অনুষ্ঠান। গতকাল ৩০ এপ্রিল বিকেল পাঁচটায় জাতীয় নাট্যশালায় সমাপনী দিনের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘সেমি ক্ল্যাসিক্যাল’ নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘নৃত্যায়ন’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন মনিরা পারভীন। নৃত্যদল ‘কল্পতরু’ পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘অঞ্জলি লহ মোর’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন সম্রাট দত্ত ও নির্দেশনা দিয়েছেন লুবনা মরিয়ম। অমিত চৌধুরীর পরিচালনায় সমবেত নৃত্য ‘বিপুল তরঙ্গ, নিখিল’ পরিবেশন করে কায়া আশ্রম। বাংলাদেশ লোক সাংস্কৃতিক সংসদ ‘লোক আঙ্গিকে নৃত্য’ পরিবেশন করে, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন মো. ইমদাদুল হক।
ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য ‘ইন্সট্রুমেন্টাল’ পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘ধৃতি নর্তনালয়’। কত্থক নৃত্য সম্প্রদায় পরিবেশন করে ‘কত্থক (তারানা)’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন সাজু আহমেদ এবং পুষ্পাঞ্জলি নৃত্যকলা কেন্দ্র পরিবেশন করে ‘দাঁড়ালে দুয়ারে মোর’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন কস্তুরী মুখার্জী। লিখন রায়ের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য ‘বাংলাদেশের ঢোল’ পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘নৃত্যকথা’।
ধ্রুপদি নৃত্যালয় পরিবেশন করে ‘কত্থক আঙ্গিকে নৃত্য’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন স্নাতা শাহরিন। সমবেত নৃত্য ‘ও পৃথিবী এবার এসে’ পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘নৃত্যাক্ষ’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন সালমা বেগম মুন্নি। সোহেল রহমানের পরিচালনায় শিখর কালচারাল অর্গানাইজেশন পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘চাঁদ উঠেছে ঐ’।
গোলাম মোস্তফা ববির পরিচালনায় নৃত্যসংগঠন ‘নৃত্যবৃত্তি’ পরিবেশন করে ‘ভরতনাট্যম (বর্ণম)’ এবং নৃত্যদল ‘নাচঘর’ পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘গান গাই আমার মনরে বুঝাই’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন আইরিন পারভীন। জিনিয়া জ্যোৎস্নার পরিচালনায় জিনিয়া নৃত্যকলা একাডেমি পরিবেশন করে ‘লোক আঙ্গিকে নৃত্য’। আকৃতি একাডেমি পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘আয় বৃষ্টি ঝেপে’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন শহীদুল ইসলাম বাবু।
তামান্না রহমানের পরিচালনায় নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্র পরিবেশন করে ‘সেমি ক্ল্যাসিক্যাল নৃত্য’ এবং ‘বন্ধু বিনে প্রাণ বাঁচে না’ গানের সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘আরাধনা’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন প্রিয়াংকা সাহা। ‘কত্থক (তারানা, তাল-ত্রিতাল)’ পরিবেশন করে পরম্পরা নৃত্যালয়, নৃত্য পরিচালনা করেছেন মো. মাসুম হোসাইন।
মৈত্রী সরকারের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য ‘নাচে শ্যাম রাই’ পরিবেশন করে নৃত্যসংগঠন ‘স্বপ্ন বিকাশ কলাকেন্দ্র’ এবং নৃত্যসংগঠন ‘পরশমণি কলা কেন্দ্র’ পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘মাঠের সবুজ থেকে’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন আমিরুল ইসলাম।
সমবেত নৃত্য ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ পরিবেশন করে নৃত্যসংগঠন ‘নৃত্যছন্দ’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন বেনজির সালাম। ঝংকার ললিতকলা একাডেমি পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘ওর মোর নাইওর না যাইমু’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন ফাতেমা কাশেম। আনিসুর ইসলাম হিরোর পরিচালনায় ‘দারুণ অগ্নিবাণে’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার।
নৃত্যদল ‘স্পন্দন’ পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘দাও হেলানী দিয়ে’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন অনিক বোস। ‘এই দেশ আমার’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যকল্প পারফর্মিং আর্টস। হেনা হোসেনের পরিচালনায় ‘ফাগুনের মোহনায়’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘অভিনয়া’।
অনির্বাণ একাডেমি পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘মিলন হবে কত দিনে’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন জামান পারভেজ। নূরে আলম চন্দনের পরিচালনায় বকুল নৃত্যালয়ের নৃত্যশিল্পীবৃন্দ পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘বাজেরে বাজে ঢোল আর ঢাক’।
জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুই দিনব্যাপী নৃত্যের অনুষ্ঠানমালা।