অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নতুন উপদেষ্টা হলেন মো. মাহফুজ আলম। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আজ বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

গতকাল মঙ্গলবার তথ্য এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করেন মো. নাহিদ ইসলাম। সাধারণত উপদেষ্টার পদ শূন্য হলে তাৎক্ষণিকভাবে সেসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রধান উপদেষ্টার কাছে ন্যস্ত হয়। তিনিই উপদেষ্টাদের দপ্তর বণ্টন করেন।

মাহফুজ আলম গত বছরের ১০ নভেম্বর উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। তবে সে সময় তাঁকে কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ২০ দিনের মাথায় ২৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক করেছেন তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে মাহফুজ আলম রাজনৈতিক-বুদ্ধিবৃত্তিক সহযোগীর দায়িত্বে ছিলেন। অভ্যুত্থানের পরে ছাত্র, নাগরিক ও অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার জন্য গঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক ছিলেন তিনি।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদারকে উপদেষ্টার মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে তাঁকে উপদেষ্টা করা হয়।

প্রথমে তিনি দপ্তর ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত থেকে জনপ্রশাসনসহ সরকারের নানা কাজে যুক্ত ছিলেন। পরে তাঁকে খাদ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত ২০ ডিসেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ মারা যান। এ অবস্থায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয় আলী ইমাম মজুমদারকে। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তিনি ভূমি উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। এখন ভূমি উপদেষ্টার পদে নতুন কেউ আসবেন, নাকি আলী ইমাম মজুমদার অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তা পালন করবেন, সেই আলোচনাও আছেন।

বর্তমানে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে আছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.

) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তাঁকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদ থেকে পদত্যাগের দাবি উঠেছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর প্রথমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তাঁর একটি বক্তব্যকে ঘিরে আলোচনার মধ্যে তাঁকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে তিনি নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র উপদ ষ ট র দ য় ত ব স বর ষ ট র সরক র র মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ