ষোলতে বিয়ে, সতেরোতে জমজ সন্তানের মা, আঠারোতে অভিনেত্রীর বিচ্ছেদ
Published: 28th, February 2025 GMT
১৯৭৮ সালের ৯ জুলাই ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন উর্বশী ঢোলাকিয়া। মা-বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। মাত্র ৬ বছর বয়সে খ্যাতনামা একটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের সুযোগ পান উর্বশী। সেই বিজ্ঞাপনে দক্ষিণী অভিনেত্রী রেবতির সঙ্গে দেখা যায় তাকে।
১১ বছর বয়সে ‘শ্রীকান্ত’ শিরোনামে একটি ধারাবাহিকে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। এর মাধ্যমে ছোট পর্দায় অভিষেক ঘটে উর্বশীর। তারপর অভিনয়ে ক্যারিয়ার গড়ার মন স্থির করেন। বলিউড অভিনেতা রাজ বব্বরের স্ত্রী নাদিরা বব্বরের নাটকের দলে যুক্ত হন তিনি। পাশাপাশি ভরতনাট্যমেরও প্রশিক্ষণ নেন।
আরো পড়ুন:
আমার মনে কোনো ক্ষোভ নেই: ইয়ামি গৌতম
বাংলাদেশি তরুণ গায়কের প্রশংসায় অরিজিৎ
উর্বশীর বয়স যখন ১৫, তখন ‘দেখ ভাই দেখ’ নামে একটি হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয়ের সুযোগ পান। সেই ধারাবাহিকে অভিনয়ের সময় এক ব্যক্তির প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করেন উর্বশী। বাড়ির অমতে ১৬ বছর বয়সে বিয়ে করেন উর্বশী। সিদ্ধার্থ কানানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উর্বশী বলেন, “আমি লোকটিকে পাগলের মতো ভালোবাসতাম। সেই সময়ে পৃথিবীর অন্য একটি দিক দেখতে চেয়েছিলাম। তখন আমার বয়স ছিল ১৬ বছর। আমি ম্যাচিউর ছিলাম না।”
বিয়ের পর উর্বশীর জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। অভিনেত্রীর দাবি, “বিয়ের পর তার উপর মানসিক নির্যাতন চলত, যা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারিনি।”
বিয়ের এক বছরের মধ্যে অর্থাৎ ১৭ বছর বয়সে জমজ সন্তানের জন্ম দেন উর্বশী। তবে সন্তান নিয়ে সংসারে অশান্তি সহ্য করতে পারছিলেন না। ১৮ বছর বয়সে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন এই অভিনেত্রী। বিচ্ছেদের পর দুই পুত্রকে নিয়ে আলাদা হয়ে যান উর্বশী। জমজ সন্তানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অভিনয়ও চালিয়ে যেতে থাকেন। স্কুলের পড়াশোনাও ছেড়ে দিতে হয়েছিল তাকে।
অর্থাভাবেও দিন কেটেছে উর্বশীর। এ অভিনেত্রীর ভাষায়, “তখন সন্তানদের পড়াশোনার জন্য ১৫০০ রুপিও ছিল না আমার কাছে। কী করব বুঝতে পারতাম না। সেই ভয়াবহ দিনের মধ্যেও নিজের জীবনশক্তি হারাইনি।”
২০০০ সাল থেকে একের পর এক হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করতে শুরু করেন উর্বশী। ‘ঘর এক মন্দির’, ‘মেহেন্দি তেরে নাম কি’, ‘কাভি সওতন কাভি সহেলি’, ‘দেশ মে নিকলা হোগা চাঁদ’-এর মতো একাধিক ধারাবাহিকে অভিনয় করেন। ২০০১ সালে তার ক্যারিয়ার অন্যদিকে মোড় নেয়।
২০০১ সালে ছোট পর্দায় প্রচার শুরু হয় ‘কসৌটি জিন্দেগি কে’ নামে একটি ধারাবাহিক। এতে খলনায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন উর্বশী। চরিত্রটির নাম— কমলিকা। তার অভিনয় এতটাই জনপ্রিয়তা পায় যে, চরিত্রের নামেই পরিচিতি পেয়ে যান উর্বশী। ধারাবাহিকের পাশাপাশি ‘বাবুল’, ‘ইজ্জত’ সিনেমায়ও অভিনয় করেন তিনি।
সিঙ্গেল মাদার হিসেবে দুই সন্তানকে মানুষ করছেন উর্বশী। অভিনয়ের পাশাপাশি বিগ-বসসহ বিভিন্ন রিয়েলিটি শোয়ে অংশ নেন। একটি নাচের অনুষ্ঠানে মডেল-অভিনেতা অনুজ সাচদেবার সঙ্গে পরিচয় হয়। সেখানে থেকে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। শোনা যায়, বিয়ের কথাও ভেবেছিলেন তারা। কিন্তু অনুজের মা পুত্রবধূ হিসেবে উর্বশীকে মেনে নিতে নারাজ। ফলে ভেঙে যায় এই সম্পর্ক। ৪৫ বছরের উর্বশী এখনো একা জীবনযাপন করছেন।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বছর বয়স য় কর ন র বয়স
এছাড়াও পড়ুন:
দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
তীব্র খরার কবলে পড়েছে ইরানের রাজধানী তেহরান। সেখানে বাসিন্দাদের সুপেয় পানির প্রধান উৎসটি দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ গতকাল রোববার এ খবর জানিয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালক বেহজাদ পারসার বরাত দিয়ে আইআরএনএর খবরে বলা হয়, তেহরানে খাবার পানি সরবরাহের পাঁচটি উৎসের একটি আমির কবির বাঁধ। সেটিতে এখন মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ ঘনমিটার পানি আছে। এটি জলাধারটির মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৮ শতাংশ।
বেহজাদ পারসা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই পরিমাণ পানি দিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহ তেহরানের খাবার পানির চাহিদা মেটানো যাবে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরার মোকাবিলা করছে ইরান। গত মাসে স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, তেহরান প্রদেশে এবার বৃষ্টির যে মাত্রা, তেমনটা গত এক শতাব্দীতে খুব একটা দেখা যায়নি।
এক কোটির বেশি মানুষের নগর তেহরান তুষারাচ্ছন্ন আলবোর্জ পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত। এই পর্বতমালার সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫ হাজার ৬০০ মিটার (১৮ হাজার ৩৭০ ফুট) পর্যন্ত। এই পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন নদীগুলো বহু জলাধারে পানির জোগান দেয়।
বেহজাদ পারসা বলেন, এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ করা বাকি জলাধারগুলোর বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এই কর্মকর্তা।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।
এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।বেহজাদ পারসা, তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালকপানি সাশ্রয়ের পদক্ষেপ হিসেবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তেহরানের বেশ কয়েকটি এলাকায় বারবার সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর চলতি গ্রীষ্মে ঘন ঘন পানি সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘটনাও ঘটেছে।
জুলাই ও আগস্টে পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য দুই দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ইরানে সে সময় তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিদিন একাধিকবার লোডশেডিং হয়েছে।
ওই দুই মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছুঁয়ে গিয়েছিল।
জুলাই ও আগস্ট মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ফারেনহাইট) ছুঁয়ে ছিল।ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আজ যেভাবে আলোচনা হয়েছে, পানিসংকট পরিস্থিতি তার চেয়েও গুরুতর।’
ইরানজুড়ে পানিসংকট একটি বড় সমস্যা, বিশেষ করে দেশের দক্ষিণের শুষ্ক প্রদেশগুলোতে। ভূগর্ভস্থ সম্পদ ব্যবহারে অব্যবস্থাপনা ও সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারকে পানি ঘাটতির জন্য দায়ী করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে ভূমিকা রাখছে।
আরও পড়ুনপ্রচণ্ড গরমে পানির ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ইরানিদের কম পানি ব্যবহারের আহ্বান২০ জুলাই ২০২৫