হাবের নতুন কমিটির দুর্নীতি-অন্যায় না করার শপথ
Published: 1st, March 2025 GMT
দুর্নীতি-অন্যায় করবে না, অন্যদেরও করতে দেবে না এমন অঙ্গীকার করে আগামী দুই বছরের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সৈয়দ গোলাম সরওয়ার ও ফরিদ আহমেদ মজুমদারের নেতৃত্বাধীন হজ্জ অ্যাজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদ কমিটি।
শনিবার (০১ মার্চ) রাজধানীর নয়াপল্টনের একটি হোটেলে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তারা এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নবনির্বাচিত সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার ও মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদারসহ কমিটির অন্য সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
নতুন সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে সৈয়দ গোলাম সরওয়ার বলেন, আমি দুর্নীতি-অন্যায় করব না, অন্যদের করতে দেব না। এটাই আগামী দিনে চলার অঙ্গীকার। যতক্ষণ পর্যন্ত মানব কল্যাণে সৎ ও সত্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারি ততক্ষণ পর্যন্ত থাকব। হজ্জ যাত্রীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা কাজ করে যাব।
তিনি বলেন, এবার হজ ব্যবস্থাপনা আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে। কারণ মিনারের লোকেশন, তাঁবু, বাড়িভাড়া এবং ট্রান্সপোর্ট বুকিং দেওয়া হয়নি। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ এগিয়ে থাকলেও আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। আগে এজেন্সিগুলোর বুকিং দেওয়ার দায়িত্ব থাকলেও এখন ধর্ম মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব। টাকা জমা দেওয়ার পর এই কাজ অনেকটাই স্থবির রয়েছে। তাই মিনারের লোকেশন বরাদ্দসহ বাকি কাজ আরেকটু গতিতে এগিয়ে নিতে সরকার ও ধর্ম মন্ত্রণালয়কে প্রতি আহ্বান জানান।
মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, বিগত কয়েক বছরে হাবের নেতৃত্বে কোনো গতিশীলতা সৃষ্টি হয়নি। বিশেষ করে সদ্য বিদায়ী কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বের ক্ষমতার একচ্ছত্র ব্যবহারের ফলে মন্ত্রণালয়ের সাথে হাবের যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, আমরা সে দূরত্ব কমিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। হজের বাড়তি টাকা নিয়ে জনগণের মধ্যে যেসব নেতিবাচক ধারণা রয়েছে, সেগুলো সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। এ ব্যাপারে এজেন্সি মালিকদের পাশাপাশি সরকারের সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।
এ সময় সাবেক সভাপতি আব্দুস শাকুর, জামাল উদ্দিন, ইবরাহীম বাহার, আব্দুস সোবহান ভূঁইয়া হাসানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
২০২৫-২৭ সালের মেয়াদকালের ২৭ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী পরিষদ কমিটির অন্যরা হলেন- সিনিয়র সহ সভাপতি শামীম সাঈদী, সহ সভাপতি হাফেজ নুর মোহাম্মদ, শরীয়ত উল্লাহ সহীদ ও মোহাম্মদ আবদুল হক। যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ জাফর উদ্দিন, মোহাম্মদ আবদুল মালেক ও মুহাম্মদ আবদুল কাদির। অর্থসচিব মোহাম্মদ আবদুল হামিদ, জনসংযোগ সচিব জাহিদ আলম, সাংস্কৃতিক সচিব মো.
একই সময়ে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট ঢাকা আঞ্চলিক পরিষদ, ৯ সদস্যবিশিষ্ট চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এবং ৯ সদস্যবিশিষ্ট সিলেট আঞ্চলিক পরিষদ কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দুই সপ্তাহ পর ২২ আগস্ট পদত্যাগ করেন হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম। পরে ফারুক আহমদ সরদারকে সভাপতি এবং ফরিদ আহমেদ মজুমদারকে মহাসচিব করে হাবের কার্যনির্বাহী পরিষদ পুনর্গঠিত হয়। কিন্তু হাবের কার্যনির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করে ‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিকবৃন্দ’। পরে শুনানি নিয়ে ওই কমিটি বাতিল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ দাউদ উল ইসলামকে প্রশাসকের দায়িত্ব দিয়ে ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়।
পরে ৪ ডিসেম্বর তিনি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকার কাকরাইলে ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) মিলনায়তনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোট গ্রহণ শেষে রাতে সৈয়দ গোলাম সরওয়ার নেতৃত্বাধীন ‘হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদ’ পূর্ণ প্যানেল বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচনি বোর্ডের চেয়ারম্যান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ফিরোজ আল মামুন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কম ট র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।