১৩ কোটি টাকার ঘড়ি–জামাকাপড় পরে সাক্ষাৎকার দিলেন নেইমার
Published: 2nd, March 2025 GMT
লম্বা সময় পর আবারও খেলায় ফিরেছেন নেইমার। আল হিলাল ছেড়ে সান্তোসে এসে নিয়মিতই মাঠে নামছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। গোল করে এবং গোলে সহায়তা করে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এর মধ্যে সাক্ষাৎকার দিয়েও এসেছেন আলোচনায়। সম্প্রতি ‘পদপাহ’ নামের এক পডকাস্টে কথা বলেছেন নেইমার। যেখানে লিওনেল মেসিকে পেনাল্টি শেখানো এবং বায়ার্ন মিউনিখে প্রায় যোগ দিয়ে ফেলাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন সাবেক বার্সেলোনা তারকা।
শুধু সাক্ষাৎকারের বক্তব্য নিয়েই নয়, নেইমার আলোচিত হচ্ছেন তাঁর জামাকাপড় ও সাজসজ্জা নিয়েও। ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘ও গ্লোবো’ জানিয়েছে, পদপাহর পডকাস্টে যেসব জামাকাপড়, জুতা ও ঘড়ি পরে নেইমার কথা বলতে এসেছিলেন, সেসবের মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩ কোটি টাকা।
আরও পড়ুনমেসিকে পেনাল্টি নেওয়া শিখিয়েছিলেন নেইমার২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এই সাক্ষাৎকারে নেইমার পরে এসেছিলেন লুই ভিঁতোর স্নিকার্স। যার দাম প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নেইমারের পরনে থাকা বালেনচিয়াগা ব্র্যান্ডের টি-শার্টের দাম প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া তাঁর পরনে থাকা প্যান্টের দাম প্রায় ১৪ লাখ টাকা এবং ক্যাপের দাম ৭৮ হাজার টাকা।
তবে নেইমারের সাজসজ্জায় সবচেয়ে দামি জিনিসটি ছিল ঘড়ি। রিচার্ড মিলের যে ঘড়ি পরে নেইমার সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তার মূল্য বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে পডকাস্টে হাজির হওয়া রোনালদোর পরিধেয়র মূল্য ছিল ১৩ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো।
এই সাক্ষাৎকারে নেইমার জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে পেপ গার্দিওলার কারণে তিনি বায়ার্ন মিউনিখে প্রায় যোগ দিয়েই ফেলেছিলেন। সে সময়ের ঘটনা নিয়ে ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করা এই ফুটবলার বলেছেন, ‘গার্দিওলার কারণে আমি বায়ার্নে প্রায় চলেই গিয়েছিলাম। সে সময় আমি সুইজারল্যান্ডে গিয়েছিলাম পুসকাস পুরস্কার নিতে এবং আমি তখন নিজের ঘরেই ছিলাম। রাত ২টায় আমার বাবা আমাকে ডাকেন। আমার বাবা, গার্দিওলা এবং দোভাষী সেখানে একসঙ্গে উপস্থিত হন।’ গার্দিওলা আমাকে বলেন, ‘তিনি আমাকে সেই ক্লাবে নিতে চান, যেখানে তিনি যাচ্ছেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমার জন্য তিনিই সেরা।’
আরও পড়ুন২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেইমার কি ব্রাজিলেই থাকবেন২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫গার্দিওলা তাঁকে কেনার জন্য কতটা মরিয়া ছিলেন, সেটা ব্যাখ্যা করে নেইমার বলেছেন, ‘তিনি তাঁর ল্যাপটপ নিয়ে আসেন এবং আমাকে সবকিছু বলেন। তিনি বলেন, যদি আমি প্রতি মৌসুমে ৬০ গোল না করি তবে দল বদলে ফেলবেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করি তিনি কোন ক্লাবে যাচ্ছেন। তিনি জানান যে সেই নাম আমাকে বলতে পারবেন না। আমি তাঁকে অনুরোধ করি। তিনি আমাকে বায়ার্নের কথা বলেন। তিনি জানান, শহরটি বেশ ঠান্ডা, মাদ্রিদ বা বার্সেলোনার মতো না। কিন্তু তিনি প্রতিজ্ঞা করেন যে আমার সবকিছুর যত্ন নেবেন এবং সেরা হিসেবে গড়ে তুলবেন। আমি অবশ্য আগেই বার্সেলোনায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু এরপরও বায়ার্নের কথা ভেবেছিলাম।’
গার্দিওলার অনুরোধে যে নেইমার রাজি হননি, সে তো বলা বাহুল্য। পরে বার্সেলোনায় চার বছর থেকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার হিসেবে নেইমার পাড়ি জমান পিএসজিতে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বল ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
তীব্র খরার কবলে পড়েছে ইরানের রাজধানী তেহরান। সেখানে বাসিন্দাদের সুপেয় পানির প্রধান উৎসটি দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ গতকাল রোববার এ খবর জানিয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালক বেহজাদ পারসার বরাত দিয়ে আইআরএনএর খবরে বলা হয়, তেহরানে খাবার পানি সরবরাহের পাঁচটি উৎসের একটি আমির কবির বাঁধ। সেটিতে এখন মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ ঘনমিটার পানি আছে। এটি জলাধারটির মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৮ শতাংশ।
বেহজাদ পারসা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই পরিমাণ পানি দিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহ তেহরানের খাবার পানির চাহিদা মেটানো যাবে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরার মোকাবিলা করছে ইরান। গত মাসে স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, তেহরান প্রদেশে এবার বৃষ্টির যে মাত্রা, তেমনটা গত এক শতাব্দীতে খুব একটা দেখা যায়নি।
এক কোটির বেশি মানুষের নগর তেহরান তুষারাচ্ছন্ন আলবোর্জ পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত। এই পর্বতমালার সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫ হাজার ৬০০ মিটার (১৮ হাজার ৩৭০ ফুট) পর্যন্ত। এই পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন নদীগুলো বহু জলাধারে পানির জোগান দেয়।
বেহজাদ পারসা বলেন, এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ করা বাকি জলাধারগুলোর বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এই কর্মকর্তা।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।
এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।বেহজাদ পারসা, তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালকপানি সাশ্রয়ের পদক্ষেপ হিসেবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তেহরানের বেশ কয়েকটি এলাকায় বারবার সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর চলতি গ্রীষ্মে ঘন ঘন পানি সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘটনাও ঘটেছে।
জুলাই ও আগস্টে পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য দুই দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ইরানে সে সময় তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিদিন একাধিকবার লোডশেডিং হয়েছে।
ওই দুই মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছুঁয়ে গিয়েছিল।
জুলাই ও আগস্ট মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ফারেনহাইট) ছুঁয়ে ছিল।ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আজ যেভাবে আলোচনা হয়েছে, পানিসংকট পরিস্থিতি তার চেয়েও গুরুতর।’
ইরানজুড়ে পানিসংকট একটি বড় সমস্যা, বিশেষ করে দেশের দক্ষিণের শুষ্ক প্রদেশগুলোতে। ভূগর্ভস্থ সম্পদ ব্যবহারে অব্যবস্থাপনা ও সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারকে পানি ঘাটতির জন্য দায়ী করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে ভূমিকা রাখছে।
আরও পড়ুনপ্রচণ্ড গরমে পানির ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ইরানিদের কম পানি ব্যবহারের আহ্বান২০ জুলাই ২০২৫