সারা বিশ্বের মানুষের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ একই দিনে রোজা শুরু ও ঈদ উদ্‌যাপন করতে পারেন কি না, এ বিষয়টি নিয়ে দেশের আলেম–ওলামাদের চিন্তা করার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর লেডিস ক্লাবে ওলামা–মাশায়েখ ও এতিমদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই অনুরোধ জানান তারেক রহমান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘একজন মুসলমান হিসেবে আমার কাছে একটি প্রশ্ন বারবার ঘুরপাক খেয়েছে। আমরা দেখেছি খ্রিষ্টান সম্প্রদায় সারা বিশ্বে তাদের বড়দিন একই দিনে উদ্‌যাপন করে। এখানে উপস্থিত ওলামায়ে–মাশায়েখসহ সারা দেশের অনেক জ্ঞানী ওলামায়ে–মাশায়েখ আছেন, আমরা চিন্তা করে দেখতে পারি কি না, আমরা আলোচনা করে দেখতে পারি কি না যে বাংলাদেশের মানুষ সারা বিশ্বের মানুষের সঙ্গে একই দিনে একসঙ্গে রোজা এবং ঈদ পালন করতে পারি কি না। বিজ্ঞানের যুগে এটি করা সম্ভব কি না, কোনো উপায় আছে কি না, এ বিষয়টি আপনাদের চিন্তা করার অনুরোধ করছি।’

ওলামা–মাশায়েখ ও এতিমদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন তারেক রহমান। এ সময় তিনি তাঁর মা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তাঁদের পরিবারের সদস্য ও দেশবাসীর জন্য দোয়া চান।
ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, একশ্রেণির লোক দেশের বাইরে থেকে এবং দেশের ভেতরে থেকে বিএনপির সঙ্গে আলেম–ওলামাদের দূরত্ব সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, এই বিভেদ বিএনপির সঙ্গে ওলামা–মাশায়েখদের সঙ্গে নয়। এই বিভেদের মাধ্যমে ফাটল সৃষ্টি হলে বিদেশি শক্তি প্রবেশ করবে, দেশকে ধ্বংস করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহ উদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিনের (টুকু) সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দোয়া পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদাী ওলামা দলের সদস্যসচিব মাওলানা আবুল হোসেন। ইফতারে রাজধানীর কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের এতিম শিশুরা অংশ নেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ত র ক রহম ন ন ব এনপ র ব এনপ র স র সদস য একই দ ন ইফত র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ