ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে রং বদলাতে পারে যে শিয়াল
Published: 3rd, March 2025 GMT
পৃথিবীতে এমন এক প্রজাতির শিয়াল আছে যেগুলো ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে রং বদলাতে পারে। এই শিয়াল হলো ‘অ্যার্কটিক’ শিয়াল। শীতকালে এদের পশম পুরোপুরি সাদা হয়ে যায়। অ্যার্কটিক শিয়ালের রং তখন বরফের সঙ্গে মিশে যায়। তবে গ্রীষ্মে এই শিয়ালের রং হয়ে যায় হালকা বাদামি আর ধূসর। চারপাশের প্রকৃতির রঙের সঙ্গে তখন মিশে যায় এগুলোর রং।
অ্যার্কটিক শিয়ালের প্রজাতির শিয়াল আকারে ছোট হয়ে থাকে। এরা মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণি। অ্যার্কটিক শিয়াল উত্তর গোলার্ধের আর্কটিক অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়।
যেমন হয় অ্যার্কটিক শিয়াল: এগুলোর গড় ওজন হয়ে থাকে ৩ থেকে ৯ কেজি। অ্যার্কটিক শিয়ালের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০ থেকে ৬৮ সেমি হয়ে থাকে। শরীরের তাপমাত্রা ৯০–১০০ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে।
অ্যার্কটিক শিয়ালের খাবার তালিকায় যা আছে: সমুদ্রের উদ্ভিদ, মাছ, জলপাখি এবং সামুদ্রিক পাখির মতো অনেক ছোট প্রাণীর শিকার করে। এই প্রজাতির গ্ৰীষ্মকালের মতো শীতকালে যথেষ্ট খাবার সংগ্রহ করতে পারে না। কারণ শীতে খাদ্যের পর্যাপ্ত উৎস কমে যায়।
অ্যার্কটিক শিয়াল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য গর্জন, চিৎকার এবং শরীরের ভঙ্গি করে থাকে। এ ছাড়া গন্ধের মাধ্যমেও একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরা একা থাকতে পছন্দ করে। শুধু প্রজনন মৌসুমে এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকে। শীত ঋতুর শেষে এবং বসন্তের শুরুতে এরা প্রজনন করে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে
চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর সরাসরি ফল ভোগ করছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এবার ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। মশা নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবই এ রোগের দ্রুত বিস্তারের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চট্টগ্রামে এভাবে জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম নগর এডিস মশাবাহিত রোগের জন্য এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের জরিপ চালিয়েছিল। এই দুই জরিপের তুলনামূলক চিত্র আমাদের সামনে এক ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে—এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় পৌঁছেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। গত বছর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিই হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরেই ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং ডেঙ্গুতে আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।
সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আইইডিসিআরের সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম দাবি করছেন যে মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি চলছে এবং নতুন জরিপ অনুযায়ী হটস্পট ধরে কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো এ উদ্যোগগুলো কি যথেষ্ট? লার্ভার ঘনত্ব যেখানে তিন-চার গুণ বেশি, সেখানে গতানুগতিক কর্মসূচির ওপর নির্ভর করলে চলবে না।
মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। বাসাবাড়িতে নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ফলে নাগরিকদের সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; নগরবাসীকে দ্রুত তৎপর হতে হবে।