কালাবদর নদীতে কোস্টগার্ডের অভিযান: জেলে নিহত, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
Published: 4th, March 2025 GMT
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কালাবদর নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ নিধনের সময়ে কোস্টগার্ডের অভিযানে এক জেলে নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার রাতে নিহত ওই জেলের মৃত্যু নিয়ে দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে।
নিহত জেলের নাম মিরাজ ফকির (৩০)। তিনি মেহেন্দিগঞ্জের মিয়ারচর গ্রামের ফখরুল ইসলাম ফকিরের ছেলে।
নিহতের পরিবারের দাবি, ইলিশ নিধনের সময় অভিযানে যাওয়া কোস্টগার্ডের স্পিডবোট জেলে নৌকার ওপর উঠিয়ে দিলে মিরাজ নিহত হন।
হিজলা নৌ পুলিশ বলছে, কোস্টগার্ড অভিযানে গেলে জেলেরা হামলা করায় দুইপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছিল। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে কোস্টগার্ড দাবি করেছে, তারা সেখানে অভিযানেই যায়নি।
নিহতের ভাই রবিউল ফকির জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কালাবদর নদীর শ্রীপুর এলাকায় তার ভাই মিরাজ ফকির অন্য জেলেদের সঙ্গে মাছ ধরছিলেন। এসময় কোস্টগার্ডের একটি স্পিডবোট জেলেদের নৌকার ওপর দিয়ে উঠিয়ে দেওয়ায় মিরাজ গুরুতর আহত হয়। অন্য জেলেরা গুরুতর অবস্থায় মিরাজকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হিজলা নৌ-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোস্টগার্ডের সদস্যরা কালাবদর নদীর শ্রীপুর এলাকায় অভিযানে গেলে জেলেরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় জেলেদের সঙ্গে কোস্টগার্ডের সংঘর্ষ হয়। এতে জেলে মিরাজ আহত হন। পরে তাকে অন্য জেলেরা উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বর্তমানে মিরাজের লাশ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
তবে কোস্টগার্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার তাদের কোনও অভিযান ছিল না। এ ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, জাটকা বড় হওয়ার সুযোগ দিতে ইলিশের পাঁচটি অভয়াশ্রমে ইলিশ আহরণে ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে গত ১ মার্চ থেকে। কালাবদর নদীও ওই নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সব নদীতে ছেলেদের ইলিশ নিধনের অভিযোগ রয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে প্রবাসী স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর তালা
সিদ্ধিরগঞ্জে জোর পূর্বক সম্পত্তি লিখে নিতে সন্ত্রাসী দিয়ে নিজাম উদ্দিন নামে এক প্রবাসীর ৬ তলা বাড়িতে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার স্ত্রী উম্মে হাবিবা বিন্দুর বিরুদ্ধে। গত বুধবার (১১ জুন) সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল তাঁতখানা এলাকার প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় বন্দর থানার গকুলদাসেরবাগ এলাকার আ: বাতেনের মেয়ে ও প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের ভাগ্নী মাহমুদা (৪০) বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্ধা তার মামী উম্মে হাবিবা বিন্দু (২৬), মামীর বাবা বাবুল (৫০) ও মামীর মা সখি (৪৫) সহ আরো অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামী করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগে মাহমুদা উল্লেখ করেন, গত ৯বছর পূর্বে আমার মামার সাথে উম্মে হাবিবা বিন্দুর বিবাহ হয়। আমার মামার পরিবারে ২টি পুত্র সন্তান আছে। আমার মামা একজন প্রবাসী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী হওয়ার সুবাদে বিবাদীরা আমার মামার টাকা বিভিন্ন ভাবে অপচয় করিত। গত ৫বছর পূর্বে বিবাদী বাবুল আমার মামার কাছ থেকে জমি ক্রয় ও ব্যবসায়ীক কারণে হাওলাত বাবদ ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়।
গত ৩ বছর পূর্বে আমার মামা দেশে এসে তার স্ত্রী বিন্দুর কাছে উক্ত টাকা দাবি করলে তিনি ক্ষীপ্ত হয়ে আমার মামাকে অকথ্য ভাষায় গাল মন্দ করিতে থাকে। এসময় আমার মামা উক্ত বিষয়টি তার শ্বশুর বাবুলকে জানাইলে তারা উক্ত টাকা দিব-দিচ্ছি বলে টালবাহানা করতে থাকে।
এরই উপর ভিত্তি করে গত ২ মাস পূর্বে পুনরায় আমার মামা তার শ্বশুরের কাছে টাকা দাবি করলে তিনি উক্ত টাকা দিবে না মর্মে জানায়। এমনকি আমার মামাকে জানায় আমার মামা যদি সিদ্ধিরগঞ্জের তাঁতখানা এলাকার গোদনাইল মৌজাস্থিত ৬তলা বিশিষ্ট বাড়িটি তার স্ত্রীর নামে লিখিয়া না দেয় তাহলে তাকে বড় ধরণের ক্ষতি সাধন করবে।
অভিযোগে মাহমুদা আরো উল্লেখ করেন, গত বুধবার আমার মামার শ্বশুর ও শ্বাশুড়ী সহ আরো ১০/১২ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গোদনাইল তাঁতখানা এলাকার আমার মামার বাড়ীতে প্রবেশ করে আমার মামার অজ্ঞাতসারে ভাংচুর চালায়।
এসময় উক্ত বাড়ীতে আমার খালা সালেহা (৫০) অবস্থানকালে তারা তাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। একপর্যায়ে তারা উক্ত বাড়ী তালা বদ্ধ করে চলে যায়। এসময় তারা আমার খালাকে জানায় আমার মামা যদি উক্ত বাড়ী তার স্ত্রীর নামে লিখিয়া না দেয় তাহলে তারা আমার মামাকে জানে মারিয়া ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগের তদন্তকারী সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হাসান আলী জানান, দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ করেছে। তবে বাড়িতে তালা দেয়ার বিষয়ে নিজামের স্ত্রী বিন্দু ও তার শ্বশুর বাবুলকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তারা অস্বীকার করেছে। যেহেতু বিষয়টি পারিবারিক তাই উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।