ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে হেনস্তা, গ্রেপ্তার কর্মচারীর মুক্তির দাবিতে শাহবাগ থানায় একদল ব্যক্তি
Published: 6th, March 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তির মুক্তির দাবিতে শাহবাগ থানায় অবস্থান নিয়ে আছেন একদল ব্যক্তি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত থেকে তাঁরা থানার সামনে আছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্তও এসব ব্যক্তি সেখানে ছিলেন বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার মোস্তফা আসিফকে (অর্ণব) গতকাল সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানার পুলিশ।
হেনস্তার শিকার নারী এ বিষয়ে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন এবং পরে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী আসিফের মুক্তির দাবিতে গতকাল মাঝরাতের পর শাহবাগ থানায় জড়ো হন একদল ব্যক্তি।
আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে হেনস্তা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার১০ ঘণ্টা আগেশাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর আজ সকাল ৯টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, মোস্তফা আসিফকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর মুক্তির দাবিতে একদল ব্যক্তি গতকাল রাত থেকে থানায় আছেন। তাঁরা এখনো আছেন।
ওসি খালিদ মনসুর জানান, গ্রেপ্তার হওয়া আসিফকে আদালতে পাঠাবেন তাঁরা। এ বিষয়ে কাজ চলছে।
ওই ছাত্রী গতকাল শাহবাগ থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে হেনস্তার শিকার হন বলে এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেন। তিনি লেখেন, ‘এই লোকটা আজকে আমাকে শাহবাগ থেকে আসার পথে হ্যারাস করেছে। সে আমাকে হুট করে রাস্তায় দাঁড় করায় দিয়ে বলতেসে, আমার ড্রেস ঠিক নাই, আমি পর্দা করি নাই ইত্যাদি ইত্যাদি এবং তার আচরণ খুবই অ্যাগ্রেসিভ ছিল। পরবর্তীতে তাঁকে আমি জিজ্ঞাসা করি, আপনি কোন হলে থাকেন, কোন ডিপার্টমেন্টে পড়েন। সে বলে সে এই ক্যাম্পাসের কেউ না।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই ব্যক্তি ছাত্রীটিকে তাঁর পোশাক নিয়ে রাস্তায় হেনস্তা করেন। ছাত্রীটি এ নিয়ে প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন এবং পরে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন। পরে বিকেলে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তকে শনাক্ত করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। এ সময় ওই ব্যক্তি ছাত্রীটিকে হেনস্তার করার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁকে শাহবাগ থানায় পাঠানো হয় এবং গ্রন্থাগারকে এ বিষয়ে জানানো হয়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার, তদন্তের দাবিতে প্রক্টর অফিসে একদল শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনের ‘শ্যাডোতে’ নিষিদ্ধঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি ব্যানারের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন। তবে শেষ পর্যন্ত মিছিল কর্মসূচি স্থগিত করে ৯-১০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল সহকারী প্রক্টরদের সঙ্গে আলোচনা করে।
আলোচনা শেষে রাত ৯টার দিকে প্রক্টর অফিসের সামনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ব্যানার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আনাগোনা আমাদের বারবার ব্যথিত করছে। প্রশাসনের কাছে যখনই জানতে চাই, তারা বলে, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে আমরা আজও জানতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী শেখ হাসিনার পক্ষে মিছিল করেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। (২০২৪ সালের) ১৫ জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের বিচার এখনো পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি।’
আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা রাতের বেলা কলাভবনে বসে বাদাম খান। তাঁদের কাজ কি বাদাম খাওয়া? নাকি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা? সেই প্রশ্ন আজকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে রেখেছি।’
এই ছাত্রনেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং পরবর্তী সময়ে সেই প্রতিবেদন তাঁদের কাছে পেশ করা হবে।