খুলনায় পরিবেশবান্ধব ইটভাটা চালু রাখা, ইটভাটাকে শিল্প হিসেবে ঘোষণাসহ ৫ দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করেছেন ভাটা মালিক ও শ্রমিকরা। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা এবং পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। 

খুলনা জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি, ইট-কয়লা পরিবহন ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন, জেলা ইট ভাটা শ্রমিক ইউনিয়ন এবং ইট বালু ব্যবসায়ী ও পরিবহন অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে ঘেরাও, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করা হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আগে ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোতে ৪০ শতাংশ বায়ুদূষণ হতো। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে সেই দূষণ ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। বর্তমানে জিগজ্যাগ ভাটায় আরও অধিকতর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এই অবস্থায় পরিবেশবান্ধক ইটভাটাগুলো বন্ধ করা সমীচীন হবে না।

বক্তারা বলেন, ইটভাটা শিল্পে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। ভাটা বন্ধ হয়ে গেলে এই লোকগুলো বেকার হয়ে পড়বে। অন্যদিকে প্রায় প্রতিটি ইট ভাটার বিপরীতে এক কোটি টাকার উপরে ব্যাংক ঋণ রয়েছে। সারাদেশে মোট ঋণ প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। ভাটাগুলো বন্ধ হলে ব্যাংক ঋণ অনাদায়ী থেকে যাবে। সমস্যা সমাধানে খুলনা জেলা ইট ভাটা মলিক সমিতির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের কাছে ৫ দফা দাবি করেন তারা। 

দাবিগুলো হচ্ছে- ২০২৫ সালে উন্নত প্রযুক্তির (জিগজ্যাগ) ভাটাগুলো ইট পোড়ানোর মাঝখানে বন্ধ করা যাবে না, ভাটা বন্ধের পর ক্ষতিপূরণসহ শ্রমিকদের রুটি রুজির ব্যবস্থা করা, ইট ভাটাকে শিল্প হিসাবে ঘোষণা করা এবং ইট পোড়ানের মৌসুম শেষ হলে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা। 

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা ইটভাটা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা নাসির ফকির, মিজানুর রহমান খোকন,  বাবু মল্লিক, হায়দার আলী, শেখ রফিকুল, দুলাল মল্লিক, রিয়াদ খান, আনিছুর রহমান, শেখ গণি, সেলিম, আবদুল কুদ্দুস ও কালাম প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ম রকল প ইট ভ ট পর ব শ ইটভ ট

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ