কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের মসজিদের ইমামকে অব্যাহতি দেওয়ায় জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লাহর অনুসারীরা। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর নগরীর ধর্মপুরে কলেজের ডিগ্রি শাখার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, জুমার নামাজের আগে মসজিদের মুসল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন কলেজ এলাকার গণ্যমান্য লোকজন। তারা বলেন, ইমামকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় স্থানীয়দের সঙ্গে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরোধ কাম্য নয়। তারা এলাকায় পরিচিত নন এমন নতুন ইমাম নিয়োগের দাবি জানান। এ সময় কিছু যুবক উত্তেজিত হয়ে বের হয়ে যান। পরে ১০-১২ জন যুবক কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থাকা জাতীয় পতাকার তিনটি স্ট্যান্ডের মধ্যে মাঝের স্ট্যান্ডের সামনে গিয়ে বিভিন্ন অশালীন স্লোগান দিয়ে পতাকার জন্য রাখা রশিতে জুতা ঝুলিয়ে দেন।
কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, যারা এ কাজ করেছে তারা অব্যাহতি পাওয়া ইমামের লোকজন। কলেজের ইমাম নিয়ে বিরোধে কেন জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা ঝুলিয়ে দেওয়া হলো? যারা এ কাজ করেছে, তারা সবাই স্থানীয়। কলেজ প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।
অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কলেজ প্রশাসন আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি কলেজ থেকে চলে এসেছি। এখন কলেজ ক্যাম্পাসে কী ঘটনা ঘটেছে, কারা ঘটিয়েছে, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’
কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বাসার ভূঞা সমকালকে জানান, জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা উত্তোলন রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ। এ কাজ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোতোয়ালি থানার ওসি মহিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, এ বিষয়ে এখনও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ১৩ জানুয়ারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে তাবলিগের বিবদমান দুই পক্ষ মাওলানা সাদ ও জুবায়েরের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জেরে গত ২০ জানুয়ারি তাবলিগের সাপ্তাহিক তালিম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ২১ জানুয়ারি অধ্যক্ষকে তাঁর কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন ইমাম মারুফ বিল্লাহর অনুসারীরা। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ইমাম মারুফ বিল্লাহকে নানা অভিযোগ তুলে অব্যাহতি দেয় কলেজ প্রশাসন। পরে একাধিকবার কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন ওই ইমামের অনুসারীরা। ইমামকে চাকরিচ্যুত করার পর থেকেই প্রতি শুক্রবার নামাজের আগ মুহূর্তে ইমামকে বহালের দাবি করে আসছে স্থানীয় একটি পক্ষ। সর্বশেষ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কলেজে নামাজ শুরুর আগেই স্থানীয়রা কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের ওপর হামলা করে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের উদ্ধার করে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র অন স র ব যবস থ কল জ ক কল জ র ন কল জ

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ