সিলেটে আরিফুলের ইফতারে ছিলেন না মুক্তাদীরসহ স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতারা
Published: 10th, March 2025 GMT
সিলেট নগরের বালুচর এলাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে ইফতারের আয়োজন করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, উন্নয়ন সংগঠক, আলেম-ওলামা, ক্রীড়া-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠকসহ নানা শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। তবে স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের এই আয়োজনে দেখা যায়নি।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে আরিফুল হক চৌধুরী দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ (টুকু)।
স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, সিলেটে বিএনপির রাজনীতি এখন দুটি বলয়ে বিভক্ত। একটির নেতৃত্বে আছেন আরিফুল হক চৌধুরী। অন্যটির নেতৃত্বে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ (নগর ও সদর উপজেলা) আসনে দলীয় প্রার্থী খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর। স্থানীয় রাজনীতিতে মুক্তাদীর ও আরিফুল একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত।
গতকাল আরিফুলের দোয়া ও ইফতার মাহফিলে হাজারো মানুষ উপস্থিত থাকলেও খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর ছিলেন না। তিনি গতকাল মহানগরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি আয়োজিত গণ ইফতার কর্মসূচিতে যোগ দেন। এ ছাড়া আরিফুলের ইফতার আয়োজনে অংশ নিতে দেখা যায়নি সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী এবং সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীকে।
এ বিষয়ে আরিফুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তাঁদের দাওয়াত করেছি। হয়তো তাঁরা আরও জরুরি কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন। তাই আসেননি।’
আরিফুলের ইফতার মাহফিলে যোগ না দেওয়ার বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ এই চার নেতার সঙ্গে। এর মধ্যে এমরান আহমদ চৌধুরী কল ধরেননি। আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও ইমদাদ হোসেন চৌধুরী জানান, আগে থেকেই তাঁদের নিজস্ব কিছু ইফতার কর্মসূচি নির্ধারিত ছিল। তাই তাঁরা সাবেক মেয়রের কর্মসূচিতে যেতে পারেননি। এখানে বলয়কেন্দ্রিক কোনো রাজনীতি ছিল না বলে তাঁদের দাবি।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে আরিফুল হক চৌধুরী দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর ফ ল র ব এনপ র আবদ ল
এছাড়াও পড়ুন:
২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছে। সেই খসড়ায় বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যেটা পেয়েছি, এটা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি। সেটা ভূমিকা, বিস্তারিত বিষয়গুলো নেই। এই খসড়ার সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। কিন্তু খসড়ার কিছু বাক্য, শব্দ ও গঠনপ্রণালি নিয়ে কারও কোনো মতামত আছে কি না, তা জানতে রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়াটি দিয়েছে কমিশন। আমাদের যে সংশোধনী থাকবে, আমরা তা কাল জমা দেব।’
খসড়ায় যে অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে বিএনপি একমত বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, ‘খসড়ায় দুই বছরের ভেতরে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা একমত।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের মধ্যে রাখতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংবিধানে যত বেশি যুক্ত করা হবে, সংশোধন তত বেশি জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই, আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হবে।’
নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই, নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।’
সংস্কার কমিশনের ৭০০–এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে বিএনপি একমত হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।’