চলমান ধর্ষণ ও নারীদের ওপর নিপীড়নের ঘটনাগুলোতে সাত দিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপিকে শক্তভাবে অবস্থান নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান। 

তিনি বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপিকে সাত দিন সময় দিচ্ছি। এ সাত দিনের মধ্যে শক্তভাবে অবস্থান নিন। না হলে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসবো। আমাদের এ প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।

মঙ্গলবার ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সাদা দলের মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান বলেন, একটা জরিপে দেখা গেছে, এদেশের ৭০ শতাংশ নারী নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করে। মাত্র ৩০ শতাংশ নারী নিরাপদে রয়েছে। অথচ বাংলাদেশে আমরা নারীদের সুরক্ষা দিতে পারছি না। তাই ধর্ষকদের বিরুদ্ধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। 

তিনি বলেন, আজকে ৫ আগস্টের পর সরকারের প্রতি এতো দ্রুত সময়ে আমাদের দাবি নিয়ে দাঁড়াতে হবে আমরা চিন্তা করি নাই। তারপরও আমাদের দাঁড়াতে বাধ্য করা হয়েছে। হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় ভুক্তভোগী শিশুটির  মেডিকেল রিপোর্টটা যদি ব্যাখ্যা করি কত নির্মমভাবে তারা রিপোর্টটি তৈরি করেছে। আজ আমি এ প্রসঙ্গে আসবো না। আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় আমাদের মা-বোন ও শিশুরা নানা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এটা আমার মনে হচ্ছে একটা প্ল্যান। আমাদেরকে কন্সপাইরেসিতে ফেলার জন্য একাজ করছে। 

সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, একটা দেশ যখন গণ-অভ্যুত্থানের পর যাত্রা শুরু করে তখন সব থেকে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে থাকে। তবে অভ্যুত্থানের ছয় মাস পরেও এমন পরিস্থিতি অপ্রত্যাশিত। আমরা দেখছি প্রতিদিন আমাদের নারীরা আজ লাঞ্ছিত হচ্ছে। তাই, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলতে চাই, আইনের সংস্কার করে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।

সাদা দলের সদস্য অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা বলেন, এ দেশে আমরা দেখছি আজ নারীরা নিরাপদ নই। নারীরা বিভিন্ন জায়গায় হেনস্তা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের স্বীকার হচ্ছে। যেটা এদেশের নারীদের ক্ষমতায়নের বাধা। তাই সব দলের নারীদের ক্ষমতায়নের বিষয়ে তাদের ম্যানিফেস্টুতে সংযুক্ত করতে হবে। 

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে চুরি, ছিনতাই, নারীদের ওপর ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমরা এখানে এসে উপস্থিত হয়েছি। অতীতে পালিয়ে যাওয়া রাজনৈতিক শক্তি বিভিন্নভাবে তাদের নেতাকর্মীদের উস্কানি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা দেখছি গত দুমাসে অন্তত ২০০ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বিগত ছয় মাসে প্রায় ৫০০ নারী, শিশু, কন্যা ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ষণের শিকার হয়েছে শিশুরা। তাই, জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স বর ষ ট র আম দ র র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ