ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে ৭ দিনের মধ্যে শক্তভাবে অবস্থান নিন: মোর্শেদ হাসান খান
Published: 11th, March 2025 GMT
চলমান ধর্ষণ ও নারীদের ওপর নিপীড়নের ঘটনাগুলোতে সাত দিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপিকে শক্তভাবে অবস্থান নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান।
তিনি বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপিকে সাত দিন সময় দিচ্ছি। এ সাত দিনের মধ্যে শক্তভাবে অবস্থান নিন। না হলে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসবো। আমাদের এ প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।
মঙ্গলবার ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সাদা দলের মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান বলেন, একটা জরিপে দেখা গেছে, এদেশের ৭০ শতাংশ নারী নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করে। মাত্র ৩০ শতাংশ নারী নিরাপদে রয়েছে। অথচ বাংলাদেশে আমরা নারীদের সুরক্ষা দিতে পারছি না। তাই ধর্ষকদের বিরুদ্ধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আজকে ৫ আগস্টের পর সরকারের প্রতি এতো দ্রুত সময়ে আমাদের দাবি নিয়ে দাঁড়াতে হবে আমরা চিন্তা করি নাই। তারপরও আমাদের দাঁড়াতে বাধ্য করা হয়েছে। হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় ভুক্তভোগী শিশুটির মেডিকেল রিপোর্টটা যদি ব্যাখ্যা করি কত নির্মমভাবে তারা রিপোর্টটি তৈরি করেছে। আজ আমি এ প্রসঙ্গে আসবো না। আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় আমাদের মা-বোন ও শিশুরা নানা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এটা আমার মনে হচ্ছে একটা প্ল্যান। আমাদেরকে কন্সপাইরেসিতে ফেলার জন্য একাজ করছে।
সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, একটা দেশ যখন গণ-অভ্যুত্থানের পর যাত্রা শুরু করে তখন সব থেকে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে থাকে। তবে অভ্যুত্থানের ছয় মাস পরেও এমন পরিস্থিতি অপ্রত্যাশিত। আমরা দেখছি প্রতিদিন আমাদের নারীরা আজ লাঞ্ছিত হচ্ছে। তাই, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলতে চাই, আইনের সংস্কার করে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।
সাদা দলের সদস্য অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা বলেন, এ দেশে আমরা দেখছি আজ নারীরা নিরাপদ নই। নারীরা বিভিন্ন জায়গায় হেনস্তা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের স্বীকার হচ্ছে। যেটা এদেশের নারীদের ক্ষমতায়নের বাধা। তাই সব দলের নারীদের ক্ষমতায়নের বিষয়ে তাদের ম্যানিফেস্টুতে সংযুক্ত করতে হবে।
কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে চুরি, ছিনতাই, নারীদের ওপর ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমরা এখানে এসে উপস্থিত হয়েছি। অতীতে পালিয়ে যাওয়া রাজনৈতিক শক্তি বিভিন্নভাবে তাদের নেতাকর্মীদের উস্কানি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি গত দুমাসে অন্তত ২০০ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। বিগত ছয় মাসে প্রায় ৫০০ নারী, শিশু, কন্যা ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ষণের শিকার হয়েছে শিশুরা। তাই, জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স বর ষ ট র আম দ র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা মঙ্গলবার আবার শুরু
আগামী মঙ্গলবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা আবার শুরু করতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে এই আলোচনা শুরু হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবারের আলোচ্যসূচি হিসেবে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো আগের অসমাপ্ত আলোচনা সমাপ্ত করা (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব), দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ) এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, মঙ্গলবার আলোচনা শেষ হওয়ার পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রথমে সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফ করবেন। পরে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা ব্রিফ করবেন। আলোচনা অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন-নিউজ (বিটিভি-নিউজ) সরাসরি সম্প্রচার করবে।
সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয় এবং ২০ মার্চ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করে কমিশন। গত ১৯ মে পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, সিপিবি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে আলোচনা করেছে কমিশন।
প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হলেও মৌলিক সংস্কারের কিছু প্রস্তাব নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। সেসব প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ২ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরের দিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তিনটি বিষয়ে (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব) আলোচনার পর ওই দিন অধিবেশন মুলতবি করা হয়। সেই মুলতবি বৈঠকই মঙ্গলবার আবার শুরু হচ্ছে।
আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবারও আলোচনা হবে বলে আজ রোববার বিকেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বুধ ও বৃহস্পতিবারের আলোচ্য সূচি (আলোচনার বিষয়বস্তু) পরে জানাবে কমিশন।