ছোট আকারের ভিডিও সহজে তৈরি ও বিনিময়ের সুযোগ থাকায় নিয়মিত টিকটক ব্যবহার করেন অনেকেই। কিন্তু অভিভাবকদের নজর এড়িয়ে অনেক কিশোর-কিশোরীই প্রতিদিন রাতে দীর্ঘ সময় একটানা টিকটক ব্যবহার করে। এর ফলে সময় অপচয় হওয়ার পাশাপাশি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। এ সমস্যা সমাধানে কিশোর-কিশোরীদের জন্য ‘উইন্ড ডাউন’ নামের নতুন নিরাপত্তা–সুবিধা চালু করতে যাচ্ছে টিকটক।

টিকটকের তথ্যমতে, উইন্ড ডাউন–সুবিধা চালু হলে রাত ১০টার পর ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীরা টিকটকে সক্রিয় থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাপের ‘ফর ইউ’ ফিড বন্ধ হয়ে যাবে এবং পর্দাজুড়ে অ্যাপটি বন্ধের বার্তা দেখিয়ে মৃদু সুর বাজানো হবে। বার্তা পাওয়ার পর টিকটক ব্যবহার করা গেলেও পুনরায় বাধ্যতামূলকভাবে টিকটক বন্ধের বার্তা দেখানো হবে। এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে এ সুবিধা চালু করা হয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সুবিধাটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

টিকটক জানিয়েছে, ব্যবহারকারীদের সুবিধাজনক ও ভারসাম্যপূর্ণ ডিজিটাল অভ্যাস গড়ে তুলতে নতুন এ নিরাপত্তব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে উইন্ড ডাউন–সুবিধায় মেডিটেশন অনুশীলন যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত মেডিটেশন মানসিক প্রশান্তি আনার পাশাপাশি ঘুমের মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

উইন্ড ডাউন–সুবিধা ছাড়াও কম বয়সীদের অ্যাপ ব্যবহারের সময় নির্ধারণে ‘টাইম অ্যাওয়ে’ নামের নতুন প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ব্যবস্থা চালু করেছে টিকটক। নতুন এ সুবিধার মাধ্যমে অভিভাবকেরা স্কুল, পারিবারিক সময়, রাত বা ছুটির দিনে সন্তানদের টিকটক ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণ করতে পারবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট কটক ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ