দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিশ্বাসকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে কিছু মহল উস্কানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেছেন, ইদানিং কোনো কোনো মহল বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিশ্বাসকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য উস্কানি দিচ্ছে। ফেসবুক, পত্র-পত্রিকা, রেডিও-টেলিভিশনে মিথ্যা গল্প ছড়াচ্ছে। এসব মিথ্যা প্রোপাগান্ডা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। যারা ধর্মকে রাজনৈতিক কারণে ভিন্ন পথে প্রবাহিত করে তাদের ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে লানত বর্ষিত হবে।

আজ শুক্রবার বিকেলে নরসিংদীর পলাশ উপজেলা আধুনিক মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়ামে উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ড.

মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। আসুন আমরা সবাই মিলে মিশে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠন করি। যে বাংলাদেশের জন্য বিগত বছর জুলাই আগস্ট মাসে মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে হাজার হাজার ছাত্রজনতা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। তাদের এই অবদানকে আমাদের স্মরণ রাখতে হবে। ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী স্বৈরাচারী শাসন থেকে আমাদের ভবিষ্যতে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় উত্তরণ করতে হবে।

আওয়ামী লীগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি আরও বলেন, ক্ষমতা মানুষকে কোথাও নিয়ে যায় না, ক্ষমতা মানুষকে পতনের দিকে নিয়ে যায়। যেভাবে হাসিনা সরকারকে নিয়ে গেছে। তাই ক্ষমতার লোভ পরিহার করে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে।

পলাশ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল সাত্তারের সভাপতিত্বে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. বাহাউদ্দীন ভুঁইয়া মিল্টন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকী, পৌরসভা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলম মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ নাজমুল হোসেন ভুইঁয়া সোহেল, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান পাপন, ঘোড়াশাল পৌরসভা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আরিফসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড মঈন খ ন ব এনপ জ ম য় ত ইসল ম নরস দ ব এনপ র প রব হ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক

রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।

শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।

তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।

গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ