চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করে আর্থিক বিপর্যয়ে পাকিস্তান
Published: 17th, March 2025 GMT
দীর্ঘ ২৯ বছর পর প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করে পাকিস্তান। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন নিয়ে শুরুতে উচ্ছ্বাস থাকলেও শেষ পর্যন্ত এটি পরিণত হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) জন্য এক বিরাট আর্থিক ক্ষতির কারণে। বিপুল ব্যয়ের পরও প্রত্যাশিত লাভ না হওয়ায় দেশটির ঘরোয়া ক্রিকেটেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, কমেছে ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে লাহোর, করাচি ও রাওয়ালপিন্ডির স্টেডিয়াম সংস্কারে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে পিসিবি। নির্ধারিত বাজেটের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ব্যয় হয় এতে। ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য পিসিবি খরচ করে ১৮ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি। পাশাপাশি টুর্নামেন্টের অন্যান্য প্রস্তুতির জন্য ব্যয় হয় আরও ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সব মিলিয়ে আয়োজনে পাকিস্তানের মোট ব্যয় দাঁড়ায় প্রায় ৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
পাকিস্তান শুরুতে এককভাবে আসরটি আয়োজনের পরিকল্পনা করলেও ভারত পাকিস্তানে খেলতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত হাইব্রিড মডেলে টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের ম্যাচগুলোর জন্য নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়া হয় দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এতে পাকিস্তান স্বাগতিক দেশ হওয়া সত্ত্বেও ঘরের মাঠে মাত্র একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দুবাইতে অনুষ্ঠিত হয়। আর বাংলাদেশের বিপক্ষের ম্যাচ বৃষ্টির কারণে বাতিল হয়। ফলস্বরূপ, মাত্র চার দিনেই গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয় পাকিস্তান দল।
আরো পড়ুন:
‘দল যতক্ষণ জিততেছে নিজের ব্যাটিং নিয়ে আমি ওইভাবে চিন্তা করছি না’
লারাদের হারিয়ে শিরোপা জিতল টেন্ডুলকাররা
পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত ১০টি ম্যাচের মধ্যে তিনটি ম্যাচই বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়, যার মধ্যে দুটি ম্যাচে টসও করা সম্ভব হয়নি। এতে স্থানীয় দর্শকদের মধ্যে আগ্রহ কমে যায় এবং পরবর্তী ম্যাচগুলোতে গ্যালারি প্রায় ফাঁকা থাকে। টিকিট বিক্রি কমে যাওয়ার পাশাপাশি স্পনসররাও মুখ ফিরিয়ে নেয়, যা আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে তোলে।
স্বাগতিক দেশ হিসেবে ৯৩ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের বিপরীতে পিসিবি আয় করতে পেরেছে মাত্র ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৫ শতাংশ। এই লোকসানের সরাসরি প্রভাব পড়েছে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে।
আর্থিক সংকট সামলাতে জাতীয় টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি ৭৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় পিসিবি। আগে ক্রিকেটাররা ম্যাচ প্রতি ৪০ হাজার পাকিস্তানি রুপি পেতেন, যা কমিয়ে ১০ হাজার রুপি করা হয়েছে। ঘরোয়া লাল বলের ক্রিকেটে ম্যাচ প্রতি পারিশ্রমিকও ৪০ হাজার থেকে কমিয়ে ৩০ হাজার রুপি করা হয়েছে।
তবে বোর্ড চেয়ারম্যান মহসিন নাকভী এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটের মান ঠিক রাখতে এবং খেলোয়াড়দের স্বার্থ রক্ষা করতে তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নতুন করে পরিকল্পনা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি কমানোর খবর প্রকাশিত হয়েছে, তবে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা দেয়নি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। তবে বিশ্লেষকদের মতে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের বিপুল ব্যয় এবং লাভের তুলনায় বড় ধরনের ক্ষতির কারণে ভবিষ্যতে দেশটির ক্রিকেট প্রশাসনে আরও কঠোর অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্টিভ জবসের মডেল কন্যাকে কতটা জানেন?
মার্কিন ফ্যাশন মডেল ইভ জবস। অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের কন্যা তিনি। স্টিভ জবস ও লরেন পাওয়েল জবস দম্পতির কন্যা ইভ।
কয়েক দিন আগে বয়সে ছোট প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২৭ বছরের ইভ। তার বরের নাম হ্যারি চার্লস। যুক্তরাজ্যের নাগরিক হ্যারি অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ী অশ্বারোহী। বয়সে ইভের চেয়ে এক বছরের ছোট হ্যারি। গ্রেট ব্রিটেনে এ জুটির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইভের জাঁকজমকপূর্ণ বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধনাঢ্য পরিবারের লোকজন। এ তালিকায় রয়েছেন—তারকা শেফ ব্যারনেস রুথ রজার্স, বিল গেটসের মেয়ে জেসিকা, রোমান আব্রামোভিচের মেয়ে সোফিয়া প্রমুখ। অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা উত্তরাধিকারীর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের বিলাসবহুল মিনিবাসের স্রোত বইছিল বিয়ের ভেন্যুতে।
জাকজমকপূর্ণ বিয়েতে কত টাকা খরচ হয়েছে তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। সংবাদমাধ্যমটিকে প্রয়াত স্টিভ জবসের স্ত্রী লরেন পাওয়েল জবস বলেন, “ইভ-হ্যারির বিয়েতে ৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়েছে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯০ কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি)।
১৯৯১ সালে লরেন পাওয়েলকে বিয়ে করেন স্টিভ জবস। এ সংসারে তাদের তিন সন্তান। ইভ এ দম্পতির কনিষ্ঠ কন্যা। ১৯৯৮ সালের ৯ জুলাই ক্যালিফর্নিয়ায় জন্ম। তার বড় বোন এরিন, ভাইয়ের নাম রিড। লিসা নামে তার একটি সৎবোনও রয়েছে।
ইভা পড়াশোনা করেছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২১ সালে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং সমাজ (সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি) বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। একই বছর প্যারিসে ‘কোপের্নি’ সংস্থার হাত ধরে মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন। মডেলিং জগতে পা রেখেই চমকে দেন স্টিভ-তনয়া।
অনেকে নামিদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন ইভ। বিখ্যাত ব্যাগ প্রস্তুতকারী সংস্থা লুই ভিতোঁরের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। মডেলিংয়ের পাশাপাশি অশ্বারোহী হিসাবেও খ্যাতি রয়েছে ইভের। এক সময় বিশ্বের ২৫ বছরের কম বয়সি ১ হাজার সেরা অশ্বারোহীর মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিলেন তিনি।
মাত্র ছয় বছর বয়সে ঘোড়ার পিঠে চড়ে দৌড় শুরু করেছিলেন স্টিভ জবস তনয়া। ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মেয়ে যাতে পড়াশোনায় মন দেয়, সে দিকে বরাবরই সজাগ দৃষ্টি ছিল ইভের বাবা-মায়ের। তবে গ্রীষ্মাবকাশ ও বসন্তের ছুটির সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি পেতেন ইভ।
ইভ যেখানে অশ্বারোহণের প্রশিক্ষণ নেন, সেই জায়গার মূল্য দেড় কোটি ডলার। ইভ প্রশিক্ষণ শুরু করার পর তার মা ওই জায়গা কিনে নিয়েছিলেন। তবে মডেল হওয়ার কোনো পরিকল্পনা কখনো ছিল না ইভের। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আগে কখনো মডেলিং করিনি। তবে প্রস্তাব পেয়ে ঘাবড়ে যাইনি। আমার মনে হয়েছিল, কেন নয়? এই প্রস্তাব আমাকে আকৃষ্ট করেছিল।”
ঢাকা/শান্ত