কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় স্বামীর সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে এক গৃহবধূকে (১৯) তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবারের এ ঘটনায় শনিবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর মা। পরদিন অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো– লাকসাম উপজেলার মনোহরপুর এলাকার মোহাম্মদ আলী, পৌরসভার শ্রীপুর মধ্যপাড়ার মো.

মাসুদ, বাতাখালী এলাকার মনির হোসেন হৃদয়, উত্তর বিনই এলাকার আল আমিন এবং মধ্য লাকসাম এলাকার বিলকিছ আক্তার ওরফে কল্পনা। তাদের মধ্যে আলী ও মাসুদ ওই নারীকে ধর্ষণ করেছে। বাকিরা সহযোগী ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল বিকেলে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না আক্তারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আসামিরা। একই আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ভুক্তভোগী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এক গৃহবধূ তাঁর স্বামীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার লাকসামে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। পরদিন ভোরে বাড়ি ফেরার জন্য তারা লাকসাম বাইপাস মোড় থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন। কৌশলে তাদের লাকসামের গণ্ডামারা এলাকায় নিয়ে যায় অটোরিকশাচালক মাসুদ। সেখানে তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে অভিযুক্তরা। এর পর লালমাই উপজেলার মগবাড়ি এলাকায় নিয়ে স্বামীকে অটোরিকশা থেকে ফেলে রেখে ওই নারীকে নিয়ে যায়। তাঁকে লাকসাম পৌরসভার পাইকপাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ধর্ষণ করে মাসুদ ও আলী। এর পর লাকসাম পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার ভিলায় আসামি কল্পনার ভাড়া বাসায় নিয়ে আবারও ধর্ষণ করা হয়। ওই দিনই স্থানীয়দের সহায়তায় গৃহবধূকে তাঁর পরিবার উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগীর মা লাকসাম থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

লাকসাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, আলী ও মাসুদ ওই নারীকে দুই স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। অন্যরা ধর্ষণে সহায়তা করেছে বলে জবানবন্দিতে স্বীকার করেছে।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে সোমবার সকালে স্থানীয়রা থানার সামনে বিক্ষোভ করে। বিক্ষুব্ধরা আসামিদের তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরে লাকসাম বাইপাস সড়কে নূপুর যুব নারী কল্যাণ সমিতি, স্টুডেন্ট কমিউনিটি লাকসামসহ কয়েকটি সংগঠন মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।

মাদ্রাসাছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগ ঢাকায় ১১ বছরের মাদ্রাসাছাত্রকে ধর্ষণের  অভিযোগে মাহাদি হাসান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ সেন্ট্রাল গলির তাহযিবুল উম্মাহ হাফেজিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাহাদি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। তিনি তাহযিবুল উম্মাহ হাফেজিয়া মাদ্রাসার পরিচালক।

নরসিংদীতে ধর্ষণের শিকার নারী
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, গত রোববার রাতে বৃষ্টির মধ্যে দরজায় কড়া নাড়ে রাকিব মিয়া নামে এক যুবক। এ সময় ওই নারী ঘরে একা ছিলেন। দরজা খুলতেই দুই সহযোগীসহ ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করে রাকিব। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তার সহযোগীরা। এর পর ওই নারীর কানের দুল ও গলায় থাকা স্বর্ণের হার ছিনিয়ে হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা।
সোমবার বিকেলে এসপি কার্যালয়ে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। রায়পুরা থানার ওসি আদিল মাহমুদ বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে ধর্ষণ
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় সপ্তম শ্রেণির মাদ্রাসাছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার গ্রেপ্তার দু’জন হলো দুলাল গাজী ও তার ছেলে শাকিল গাজী। সোমবার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ইন্দুরকানী থানার ওসি মারুফ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে ফরিদপুরে দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে রেজাউল মুন্সী নামে এক ব্যবসায়ীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। বাগেরহাটের মোংলা ইপিজেডের একটি কারখানার নারীকর্মীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে কল্লোল বৈরাগী নামে এক যুবককে রোববার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বগুড়ার কাহালু উপজেলায় দুই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার নুরুল ইসলাম নুরুর দুই দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এদিকে নুরুর ফাঁসির দাবিতে গতকাল বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কাহালু কলেজের শিক্ষার্থীরা।

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণে জড়িতদের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে গতকাল আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এর আগে রোববার ঝিকরগাছার গদখালী ইউনিয়নের পটুয়াপাড়া গ্রামে ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী। পরে ছাত্রদলের দুই নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যুরো, অফিস ও প্রতিনিধি)

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর উপজ ল য় র কর ছ ওই ন র এল ক র গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ২৯

ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয় বলে জানায় জেরুজালেম পোস্ট। বিবিসি আরও দুইজন নিহতের খবর দেয়। এরপর আরেকজনের ফলে নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছাল।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ