আটাবের কমিটি বাতিল করে প্রশাসক বসানোর দাবি সংস্কার পরিষদের
Published: 19th, March 2025 GMT
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) বর্তমান কমিটি বাতিল করে সেখানে প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানিয়েছে আটাব সংস্কার পরিষদ।
পরিষদের পক্ষ থেকে এর আহ্বায়ক গোফরান চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে আলাদা চিঠি দিয়ে এই দাবি জানান। তাতে বলা হয়, আটাবের এই কমিটি ভৌতিক ভোটার তালিকা করে, কেন্দ্র দখল করে, জাল ভোট দিয়ে এবং প্রতিপক্ষকে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে বারবার নির্বাচনের ফল নিজেদের পক্ষে নিয়েছে। তাই এ কমিটিকে আজীবনের জন্য যেকোনো বাণিজ্য সংগঠনে নিষিদ্ধ করার দাবিও তোলা হয়েছে।
আটাব সংস্কার পরিষদের আহ্বায়ক গোফরান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আটাবের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আবদুস সালাম আরেফ কী কী ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আবেদনে আমরা সেসব বিষয় তুলে ধরেছি। সভাপতি হিসেবে তাঁর যেসব কাজ করার কথা নয়, তিনি সেসব কাজ করেছেন। তাই আমরা বর্তমান কমিটি বাতিল করে সেখানে প্রশাসক নিয়োগের কথা বলেছি।’
মন্ত্রণালয়ে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, আটাবের বর্তমান কমিটির সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা বাহাউদ্দিন নাসিমের আত্মীয় পরিচয়ে সন্ত্রাসী ও প্রশাসনের সহায়তায় ২০১১ সাল থেকে নিয়ম রক্ষার নির্বাচন দিয়ে দুইবার মহাসচিব হন। বর্তমানে আটাবের সভাপতির পদ দখল করে আছেন। আটাবের মহাসচিব আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে এই পদে আসেন। বর্তমান কমিটি ‘আটাব অনলাইন’ নামের একটি অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করেছিল, যা বাণিজ্য সংঘ বিধি ও আটাব সদস্যদের স্বার্থের পরিপন্থী। আটাব অনলাইনকে ব্যবহার করে সভাপতি ও মহাসচিবের প্রতিষ্ঠানের নামে চেক ইস্যু করে আটাবের টাকা আত্মসাৎ–বেহাত করা হয়েছে। পরে আটাব অনলাইনকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। তাঁরা শেয়ারহোল্ডারদের কোনো টাকা ফেরত দেননি।
এ বিষয়ে আটাবের সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ প্রথম আলোকে বলেন, আটাবের নির্বাচন স্বচ্ছ ও স্বতঃস্ফূর্ত হয়েছে। নির্বাচন করে যাঁরা হেরেছেন, তাঁরা ভোটে কারচুপির কথা ছড়াচ্ছেন। তাঁর দাবি, বিমানের টিকিটের দাম বাড়াতে না পেরে একটি পক্ষ আটাবের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আট ব র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি