বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের কলমতেজী ফরেস্ট টহল ফাঁড়ি এলাকায় আগুন লেগেছে। শনিবার (২২ মার্চ) সকালে টেপারবিল এলাকা থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখেন স্থানীয়রা। বনের ভেতরে থাকা নদী থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব বেশি থাকায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়নি। 

এদিকে, আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য ফায়ার লাইন কাটার কাজ শুরু করেছে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা নিজেদের সীমিত সামর্থ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করেছেন। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা আবতাদ ই আলম বলেন, “শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের দুইটি ইউনিট দুপুরের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। ঘটনাস্থল থেকে পানির উৎস অনেক দূরে থাকায় এখনো আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। রামপাল ও কচুয়া থেকেও বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের আরো দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসেছে।”

আরো পড়ুন:

সুন্দরবনের গহীনে কলমতেজী অঞ্চলে আগুন

সুন্দরবনে ৯ কেজি হরিণের মাংসসহ শিকারি আটক

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করীম বলেন, “যে স্থানে আগুনের উৎস পাওয়া গেছে সেখানে বন কর্মীরা পৌঁছে ফায়ার লাইন কাটা শুরু করেছেন। নিকটস্থ ভোলা নদী তিন কিলোমিটার দূরে থাকায় আগুন নেভানোর কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। কতটা জায়গা নিয়ে আগুন জ্বলছে, সে বিষয়ে পরবর্তীতে জানানো সম্ভব হবে। আশা করছি, রবিবার (২৩ মার্চ) সকালে কার্যকরভাবে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা যাবে।"

গত ২২ বছরে সুন্দরবনে ২৬ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুকনো পাতার স্তূপে আগুন লেগে তা ছড়িয়ে পড়ে। বন সংরক্ষণের জন্য আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান ও প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।

ঢাকা/শহিদুল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দরবন আগ ন স ন দরবন

এছাড়াও পড়ুন:

চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগের আহ্বান উপদেষ্টার 

বাঘ পাচারকারী ও চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে দাঁড়াতে হবে। বাঘ সংরক্ষণের সুফল জনগণের সামনে দৃশ্যমান করতে হবে। 

বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার রাজধানীর বন ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সচিবালয় থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেন, ‘‘বাঘ শুধু একটি বন্যপ্রাণী নয়, এটি বাংলাদেশের গর্ব ও জাতিসত্তার প্রতীক। যেমন আমরা সুন্দরবন নিয়ে গর্ব করি, তেমনি গর্ব করি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়েও। সাহস, ভালোবাসা ও বীরত্বের প্রতীক হিসেবে আমরা বাঘকে দেখি। ক্রিকেটারদের ‘টাইগার’ নামে ডাকাও সেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ।’’

সাম্প্রতিক বাঘ শুমারির ফল তুলে ধরে উপদেষ্টা জানান, কিছু ইতিবাচক উদ্যোগের কারণে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে, যা আশাব্যঞ্জক। তবে হরিণ শিকারে নিয়ন্ত্রণ, বারবার অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ এবং চোরা শিকার রোধে আরও কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘‘বাঘের মৃত্যু ও পাচারের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। মানুষ-বাঘ দ্বন্দ্বও বেড়েছে। এজন্য সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় সামাজিক সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।’’

পাশাপাশি সুন্দরবনে অপরাধ বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘কারা চোরাকারবারি, আর কারা বিকল্প জীবিকার সুযোগ পেলে সেই পথ পরিহার করবে তাদের তালিকা তৈরি করে জানাতে হবে, যেন আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারি।’’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘‘আমাদের ঐতিহ্য রক্ষায়, পরিবেশ সংরক্ষণে এবং বাঘকে টিকিয়ে রাখতে সম্মিলিতভাবে সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।’’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা। 

অনুষ্ঠানে ‘সুন্দরবনে সংঘাতপ্রবণ বাঘ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা’ এবং ‘টাইগারস্ অব দ্য সুন্দরবনস’ শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পাশাপাশি, সুন্দরবনভিত্তিক পটের গান পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা।

ঢাকা/এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাঘ রক্ষায় সুন্দরবনের চারপাশে হবে সুরক্ষাবলয়: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগের আহ্বান উপদেষ্টার