সিদ্ধিরগঞ্জে খেলাফত আন্দোলনের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
Published: 22nd, March 2025 GMT
ইসরাইল তুমি স্বরণ রেখো, পৃথিবীর কোন জালেমের শেষ রক্ষা হয় নাই, তোমারও শেষ রক্ষা হবে না। আল্লাহ পৃথিবীর কোন জালেমকেই ছাড় দেন নাই। তোমাদের প্রভূ আমেরিকা তোমারদের শেষ রক্ষা করতে পারে না উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন।
শুক্রবার সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোডেস্থ তাজমহল চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় বক্তারা আরো বলেন, আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। আমরা আর কোন ফাদে পা দিচ্ছি না। হেফাজতে ইসলামের এক নেতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদেরকে আন্দোলনের মাঝ পথে রেখে আপনি লন্ডনে পালিয়ে যাবেন তা হবে না। কত টাকা নিয়েছিলেন? তা কিন্তু আমরা সকলেরই জানা আছে। অতএব সাবধান হয়ে যান।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ জেলা খেলাফত আন্দোলনের আমীর আলহাজ্ব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, মাওলানা এহতেরামুল হক উজানবী, মুফতি এহতেশামুল হক কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ঢাকা মহানগরীর আমির মুফতী মাহবুবুর রহমান, মুফতী রশীদ আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার আমির মাওলানা দ্বীন ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক সুলতার মাহমুদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা খেলাফত আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শেখ সাদী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতী আবু বক্কর, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ভোলা জেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহিন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন নরসিংদী জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ইসমাইল, খতমে নবুওয়াতের প্রচার সম্পাদক মোঃ জারির হাসান, ডেমরা থানা বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন প্রচার সম্পাদক মাওলানা বেলাল হোসাইন, ফতুল্লা থানা বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, বন্দর থানা বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মুফতী মুজাউল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মুফতী সুলতার আহমেদ ও হাসানুজ্জামান ইছা প্রমূখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ইফত র ন র য়ণগঞ জ জ ল আম র ম র আম র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।