বিদেশি ঋণ-অনুদানের প্রতিশ্রুতি বেশ খানিকটা কমে গেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রথম আট মাসে বিদেশি ঋণ অনুদানের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ২৩৫ কোটি ডলারের মতো। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ৭২০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল উন্নয়ন সহযোগীরা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বিদেশি ঋণ-অনুদানের প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬৭ শতাংশের বেশি। 

গতকাল সোমবার বিদেশি ঋণ ও অনুদান বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। এটি ৬৭৪ কোটি ডলার থেকে কমে হয়েছে প্রায় ২০৪ কোটি ডলার। কমেছে অনুদানের প্রতিশ্রুতিও। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ৩১ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের অনুদানের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৪৬ কোটি ডলারের বেশি। 
গতকাল পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, যেহেতু অনেক প্রকল্প আর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না, সে কারণে বাস্তবায়নে গতি কম। এ কারণে উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থ ছাড় কম করছে। পরিকল্পনা কমিশনে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) ইফতার অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা আরও বলেন, অনেকে বলছে যে সরকারের সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগীদের সম্পর্ক ভালো, তাহলে ঋণের প্রতিশ্রুতি কমছে কেন। মূলত ব্যয় কম হওয়ার কারণেই প্রতিশ্রুতি বাড়ছে না। 

ইআরডির তথ্যমতে, গত জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে মোট বিদেশি ঋণ-অনুদান ছাড় হয়েছে ৪১৩ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৪৯৯ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। এ হিসাবে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থ ছাড় কমেছে ১৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের আট মাসে ৩৮৫ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের বিদেশি ঋণ ছাড় হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৭৭ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। অবশ্য অনুদান ছাড়ের পরিমাণ বেড়েছে। অনুদান এসেছে ২৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে আসে ২২ কোটি ডলার।  
চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বিদেশি ঋণের সুদাসল বাবদ ২৬৩ কোটি ৬৪ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২০৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ বিদেশি সুদাসল পরিশোধে সরকারের ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। গত জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে মূল ঋণ পরিশোধ বাবদ ব্যয় হয়েছে ১৬৯ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে পরিশোধ করা হয় ১২২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এই অর্থবছরের আট মাসে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৯৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে এটি ছিল ৮০ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব দ শ ঋণ প রথম আট ম স পর শ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • সেপ্টেম্বরের ১৬ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২০ হাজার কোটি টাকা
  • তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী চীন পাঠাচ্ছে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন