ঈদের ছুটিতে ঢাকায় থাকবে ১৫ হাজার পুলিশের কড়া নিরাপত্তা
Published: 26th, March 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ৯ দিনের সরকারি ছুটিতে রাজধানীতে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন–র্যাব। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে এ সময় মহানগরে অন্তত ১৫ হাজার পুলিশ তৎপর থাকবে। রাস্তায় তল্লাশিচৌকি বসানোর পাশাপাশি বিপণিবিতান ও আবাসিক এলাকায় টহল জোরদার করা হবে।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকার ইতিমধ্যে ২৮ মার্চ থেকে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। এ সময় স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছেড়ে যাবেন বিপুলসংখ্যক মানুষ।
ডিএমপি সূত্র জানায়, ঈদ ঘিরে অনেক মানুষ ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন। এতে বাসাবাড়ি, ফ্ল্যাট ও অফিস ফাঁকা হয়ে যাবে। ফাঁকা ঢাকায় অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে নগরবাসী। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি—এই ভয়ের অন্যতম কারণ। এসব বিষয় মাথায় রেখে ঈদের আগে ও পরে নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজিয়েছে ডিএমপি।
নগরবাসীকে উদ্দেশ করে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো.
ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ঈদে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে রাতের বেলায় বাড়ানো হবে পুলিশি টহল। নিরাপত্তা জোরদার করা হবে বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ও রেলস্টেশনে। পুরান ঢাকা ছাড়াও মহানগরের বিভিন্ন এলাকার সোনার মার্কেটে থাকবে পুলিশের কড়া নজরদারি। বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইতিমধ্যে ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার, আড়তের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে স্পর্শকাতর স্থান, সড়ক, স্থাপনা, বিপণিবিতান, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। ছিনতাইকারী, ডাকাত, অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যদের ধরতে পুলিশ ও র্যাবের বিশেষ টিম সক্রিয় রয়েছে।
ডিএমপি কর্মকর্তারা বলেন, আগের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঈদের ছুটির দিনগুলোতে সোনার দোকানে চুরি-ডাকাতি হয়। নিরাপত্তাকর্মীক বেঁধে রেখে আবার নিরাপত্তাকর্মীদের যোগসাজশে সোনার দোকানে ডাকাতি হয়।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম গত শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, নতুন নিয়োগ পাওয়া ‘অক্সিলিয়ারি ফোর্স’ (সহায়ক বাহিনী) এবার বিপণিবিতানের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। ঈদের সময় ঢাকার রাস্তায় মানুষের চলাচল কমে যাবে। তখন আবাসিক এলাকায় পুলিশের টহল বাড়ানো হবে। রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঈদের সময় রাজধানীতে দিনে–রাতে ৬০০টি পুলিশ দল টহল দেবে। এ ছাড়া প্রতিদিন মহানগরের ৭৫টি তল্লাশিচৌকি পরিচালনা করা হবে।
থানা-পুলিশের বাইরে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের (পিওএম) পুলিশ দল, পুলিশের বিশেষায়িত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি), গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মিলিয়ে মোট ১৫ হাজার পুলিশ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করবে বলে জানান নজরুল ইসলাম।
ঈদের ৯ দিনের ছুটিতে রাজধানীতে নিরাপত্তা জোরদার কাজ করবে র্যাবও। এই বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রাজধানীতে বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেলস্টেশনে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি করবে। যেসব জায়গায় ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা নেই, সেসব স্থানে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি রোধে র্যাব সদস্যরা টহল দেবেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ নত ই ও ড ক ত কর মকর ত ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়
সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।
সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।
সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।
সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।
সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।
সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।
সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।