মুনাফার চেয়ে মানুষ ও পৃথিবীকে অগ্রাধিকারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
Published: 27th, March 2025 GMT
মুনাফার চেয়ে মানুষ ও পৃথিবীকে অগ্রাধিকার দিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক মডেলের দিকে অগ্রসর হওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের অবশ্যই টেকসই অর্থনৈতিক মডেলের দিকে অগ্রসর হতে হবে, যা মুনাফার চেয়ে মানুষ ও পৃথিবীকে অগ্রাধিকার দেয়।’ বৃহস্পতিবার হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। খবর- বাসস
সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনের ভাষণে ড.
জলবায়ু সংকট মানবতার জন্য অস্তিত্বগত হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ু দুর্যোগজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতি ইতিমধ্যেই বিশাল, যা প্রায় ৬ হাজার ৫শ কোটি মার্কিন ডলারের সমতুল্য। বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সম্পদ ব্যবহার করে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ সীমিত করে দিচ্ছে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের নতুন, অতিরিক্ত, সহজলভ্য, বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগিতা, ঋণ-সৃষ্টিকারী নয় এমন, অনুদান-ভিত্তিক জলবায়ু অর্থায়ন প্রয়োজন, যা অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ন্যায়সঙ্গত বণ্টন নিশ্চিত করে।’ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও প্রযুক্তির সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা ছিল, যা বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিদ্যমান গভীর বৈষম্যসমূহ আমাদের সামনে তুলে ধরেছে। বৈশ্বিক মহামারি চুক্তির চলমান আলোচনায় এশিয়ার ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেওয়া উচিত।
প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তথ্যচালিত প্রযুক্তি, রোবটিক্স, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত অগ্রগতি ক্রমশ বিশ্বকে ভিন্ন একটি রূপ দিচ্ছে। উন্নত বিশ্বের তুলনায় এশিয়ার কম সক্ষমতা, সামর্থ্য এবং সম্পদ স্থানান্তর ডিজিটাল বৈষম্যকে আরো বিস্তৃত করতে পারে। তথ্যের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে গভীর উদ্বেগের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যদি দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে প্রযুক্তি বিকশিত হয়, তাহলে তা অস্তিত্বগত ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে হবে এবং প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও ইনকিউবেশনে আঞ্চলিক সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। এ বছর বিএফএ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হলো ‘এশিয়া ইন দ্য চেঞ্জিং ওয়ার্ল্ড: টুওয়ার্ডস আ শেয়ারড ফিউচার’।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ইউন স আম দ র ইউন স জলব য়
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।
জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’
অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।
জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া