কুড়িগ্রামে সমকাল প্রতিনিধিকে মারধর, হাসপাতালে ভর্তি
Published: 30th, March 2025 GMT
কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের বর্তমান কমিটি ভেঙে প্রেসক্লাব দখল ও নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি সুজন মোহন্তকে গালিগালাজ ও ডেকে নিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কালবেলার জেলা প্রতিনিধি সাঈয়েদ আহমেদ বাবুর বিরুদ্ধে।
শনিবার (২৯ মার্চ) রাত ১১টার দিকে কুড়িগ্রাম পৌরসভা সংলগ্ন একটি মোটরসাইকেল শোরুমের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, গত ১ সপ্তাহ ধরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের বাইরে থাকা সাংবাদিকরা প্রেসক্লাব দখল করতে একটি ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটিতে সুজন মোহন্ত নাম অন্তর্ভুক্তের ব্যাপারে অপারগতা জানালে শনিবার (২৯ মার্চ) রাতে সাইয়েদ আহমেদ বাবু ফোনে গালিগালাজ করেন। প্রতিবাদ জানাতে গেলে সুজন মোহন্তকে বেধরক মারপিট করেন তিনি।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক সুজন মোহন্ত বলেন, আমি প্রেসক্লাব দখলের পক্ষে না। আমাকে প্রস্তাব দিলে আমি তা প্রত্যাখান করি ও প্রতিবাদ জানাই। যার কারণে তিনি প্রথমে ফোনে গালিগালাজ ও পরে মারধর করেন।
হাসপাতালে অবস্থানরত সুজন মোহন্তের বন্ধু অমিত চন্দ্র পাল জানান, অভিযুক্ত সাঈয়েদ আহমেদ বাবু মারধরের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি যে ফোনে গালিগালাজ করেছেন তার প্রমাণ আছে। এছাড়াও মারধরের পর তিনি বিষয়টির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। বিষয়টিকে এখন তিনি তার গ্রুপের মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিনিধি রাশেদুল ইসলাম বলেন, মারধরের ঘটনাটি কাকতালীয়ভাবে ঘটেছে। আমার করার কিছু ছিল না।
কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রেসক্লাব ভাঙার ষড়যন্ত্রে সুজন লিপ্ত না হওয়ায় পেশিশক্তি দেখিয়েছেন অপসাংবাদিকরা।
টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সদস্য মো.
কুড়িগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ ন ক সমক ল ম রধর ম রধর সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।