এখন তো ই-কমার্স বা ইলেকট্রনিক কমার্স ভীষণ জনপ্রিয়। কোটি কোটি অর্ডারের ই-কমার্স দুনিয়ার আর্থিক মূল্য ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। এখন ইন্টারনেটনির্ভর ই-কমার্স সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়। যদিও বিশ্বের প্রথম ই-কমার্স লেনদেন বা সেবা ইন্টারনেট আবিষ্কারের আগে দেখা যায়। প্রথম স্বীকৃত ই-কমার্স লেনদেন ১৯৭১ বা ১৯৭২ সালে ঘটেছিল বলে জানা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) শিক্ষার্থীরা এআরপিএনেট ব্যবহার করে লেনদেনর ব্যবস্থা করেছিল তখন।
অরপানেট বা এআরপিএনেটের পূর্ণনাম অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি নেটওয়ার্ক। ইন্টারনেটের পূর্বসূরি হিসেবে আলোচিত ছিল এই নেটওয়ার্ক। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ এই নেটওয়ার্ক তৈরি করে গবেষকদের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করেছিল। ১৯৭০ দশকের শুরুতে স্ট্যানফোর্ডের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ল্যাবরেটরির শিক্ষার্থীরা এমআইটির গবেষকদের কাছে গাঁজা বিক্রির জন্য এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন। যদিও সেই লেনদেন বস্তুত অবৈধ ছিল। এরপরও সেই লেনদেনকে ই-কমার্সের প্রথম উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এআরপিএনেট লেনদেন অনানুষ্ঠানিক হলেও প্রথম বৈধ ই-কমার্সের কেনাবেচার ঘটনা ১৯৯৪ সালে ঘটে। ফিল ব্র্যান্ডেনবার্গার নামের একজন ব্যক্তি নেটমার্কেট নামের অনলাইন বাজার থেকে একটি অ্যালবাম কিনেছিলেন। গায়ক স্টিংয়ের অ্যালবাম ‘টেন সামোনার’স টেলস’ কিনেছিলেন ফিল। তিনি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সেই সিডি ক্রয় করেছিলেন। এনক্রিপ্টেড অনলাইন সেবার অংশ হিসেবে তখন থেকে ডিজিটাল লেনদেন শুরু। এর পরে ১৯৯৫ সালে অ্যামাজন ও ১৯৯৫ সালে ইবের মতো কোম্পানি বৃহৎ আকারের অনলাইন বাজার চালু করে। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৮ সালে পেপ্যাল সুরক্ষিত পেমেন্ট পদ্ধতি অনলাইন লেনদেনকে আরও জনপ্রিয় করে।
সূত্র: স্মিথসোনিয়ানম্যাগ ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ই কম র স ল নদ ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
‘সে শুধু নিজের রেকর্ডের জন্য খেলে, দলের জন্য নয়’
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে আল-নাসর। তবে মাঠের ফলাফলের চেয়েও এখন আলোচনায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর প্রতিক্রিয়া। ম্যাচ শেষে তার ‘বিষণ্ণ ও নাটকীয়’ আচরণ উপহাস হিসেবে দেখছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
বুধবার রাতে জেদ্দার আলিনমা স্টেডিয়ামে জাপানি ক্লাব কাওয়াসাকি ফ্রন্টেলের বিপক্ষে ৩-২ গোলে হারে সৌদি ক্লাব আল-নাসর। এই পরাজয়ে রোনালদোর দলের সামনে চলতি মৌসুমে আর কোনো ট্রফি জয়ের সুযোগ থাকল না। সেমিফাইনালের ম্যাচটিতে রোনালদো একটি সুবর্ণ সুযোগও নষ্ট করে। প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষককে কাটিয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হন পর্তুগিজ মহাতারকা। সমর্থকদের মতে, রোনালদোর গোল মিস করাটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
ম্যাচ শেষে হতাশ রোনালদোকে দেখা যায় মাঠের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে নিজে নিজে কথা বলতে ও আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুটা নাটকীয় ভঙ্গিতে হাত নেড়েছেন। তার এই অদ্ভুত আচরণ নিয়েই এখন সরগরম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
একজন টুইটারে লিখেছেন, ‘রোনালদোর জন্য ‘ফুটবলকে ছেড়ে দাও, তার আগেই যে ফুটবল তোমাকে ছাড়বে’—এই কথাটা একেবারে যথার্থ।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘এই লোকটা এখন আর মজার না… শুধু অহঙ্কারে ভরা।’
তৃতীয় একজন মন্তব্য করেছেন, ‘মেসির বিশ্বকাপ জয় মানসিকভাবে শেষ করে দিয়েছে রোনালদোকে।’ অন্য একজন কটাক্ষ করে বলেন, ‘ক্যামেরার জন্য এমন মরিয়া চেষ্টাও এক রকম প্রশংসার দাবি রাখে—যদি না সেটা এত করুণ হতো।’
অনেকে আবার রোনালদোর স্বার্থপরতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সে শুধু নিজের রেকর্ডের জন্য খেলে, দলের জন্য নয়।’
তবে এত সমালোচনার পরও অবসরের কোনো ইঙ্গিত দেননি রোনালদো। বরং সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে দলের প্রতি নিজের গর্বের কথা জানান তিনি। রোনালদো লেখেন, ‘সবসময় স্বপ্ন পূরণ হয় না। তবে আমি গর্বিত আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে। যারা আমাদের পাশে থেকেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সমর্থন আমাদের অনেক কিছু বলে।’
এদিকে ম্যাচ শেষে আল-নাসরের কোচ স্তেফানো পিওলি দলের পারফরম্যান্সে ক্ষোভ ঝাড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কৌশলে সমস্যা ছিল, দ্বিতীয়ার্ধে ঝুঁকি নিয়েছিলাম। তবে যে পারফরম্যান্স হয়েছে, তা হতাশাজনক। প্রতিপক্ষ আমাদের চমকে দেয়নি, বরং নিজেদের দুর্বলতাই বড় ধাক্কা দিয়েছে।’
এই হারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়েছে আল-নাসর, আর প্রশ্নটা থেকে গেছে—রোনালদো আসলে কোথায় গিয়ে থামবেন?