লক্ষ্মীপুরে গুলি করে ৬ বছরের শিশু আবিদা সুলতানাকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩ নম্বর আসামি ফাতেমা বেগম আঙ্কুরীকে গ্রেপ্তার করে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

এদিকে গুলি লাগার ৭২ ঘণ্টা পর শিশুটি চোখ খুলেছে। তবে চোখ খুললেও কথা বলছে না বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন আবিদার মা আমেনা বেগম।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আবিদার বাবা ইব্রাহিম খলিল বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপরই থানা এলাকা থেকে অভিযুক্ত ফাতেমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ফাতেমা মামলার প্রধান অভিযুক্ত অহিদের স্ত্রী। অপর আসামি অহিদের ছেলে মো.

ফাহিম। ঘটনার পর থেকে অহিদ ও ফাহিম পলাতক রয়েছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সাড়ে ৬ টার দিকে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের কাচারি বাড়ি এলাকায় বাড়িতে শিশু আবিদা গুলিবিদ্ধ হয়। ঘটনার সময় আবিদা প্রধান অভিযুক্ত অহিদের মেয়ে জেরিনের সঙ্গে খেলছিল। আবিদার মা আমেনা তাকে ঘরে আসার জন্য ডাকছিল। তখন অভিযুক্ত ফাতেমা ও ফাহিমের প্ররোচনায় আবিদাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পিস্তল নিয়ে অহিদ গুলি করে। গুলিটি আবিদার পিঠের ডান পাশে বিদ্ধ হয়ে পেটের ডান পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক আবিদা অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। 

পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অহিদ একজন অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। মামলার বাদী ইব্রাহিম প্রবাসে থাকাকালীন অহিদ বিভিন্নভাবে তার কাছ থেকে টাকা নিত। একবছর আগে বাদী প্রবাস থেকে ফিরে আসেন। এতে অহিদকে টাকা-পয়সা পাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এজন্য তাদের মধ্যে মনমালিন্য সৃষ্টি হয়।

ঘটনার পর হাসপাতালে আনার পথে ধারণকৃত একটি ভিডিওতে শিশু আবিদাকে বলতে শোনা যায়, অহিদ তাকে গুলি করেছে। তবে কি কারণে, কীভাবে গুলি করছে সে কথা বলতে পারেনি। তার দু’চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যায়।

আমেনা বেগম বলেন, “ঘটনার দিন আছরের নামাজের পর অহিদের ছেলে ফাহিমের সঙ্গে একটি মোটরসাইকেলে করে ৩ জন লোক আসে। মাগরিবের সময় ৩টি মোটরসাইকেল নিয়ে আরও কয়েকজন লোক আসে। তখন ওযু করতে গেলে দেখি তারা অহিদের বাড়িতে ঢুকছে। লোকগুলোকে দেখে আমার কলিজায় কামড় দিয়েছে, ভয়ও পেয়েছি। তাদের দেখলেই ভয় লাগে। আবিদা তখন অহিদের মেয়ে জেরিনের সঙ্গে খেলছিল।”

তিনি আরো বলেন, “লোকজনের কারণে আমি তাকে আনতে যেতে পারিনি। পাশে একটি ঘরে ঢুকে জানালা দিয়ে ডাকছিলাম। তখন ঘরের দরজার পেছনে অহিদ যেন কি করছিল। হঠাৎ সেখান থেকে বের হয়ে ঘরের সামনের একটি আমগাছের নিচে যায়। সেখানে আবিদা ও জেরিন ঘুরে ঘুরে খেলছিল। এরমধ্যেই অহিদ আমার মেয়ের পিঠ গুলি করে। আমি দৌড়ে গিয়ে মেয়েকে কোলে নিয়ে তাকে বলেছি তুই আমার মেয়েকে শেষ করে দিয়েছিস। এসবের পর সে মানিব্যাগ বের করে টাকা দিচ্ছিল চিকিৎসার জন্য। আমি সব ফেলে দিয়ে মেয়েকে বাঁচানোর জন্য হাসপাতাল চলে যাই।”

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে আমেনা বেগম জানিয়েছে, আবিদার অস্ত্রোপচার হয়েছে। তার ফুসফুস, কিডনি ও লিভারে সমস্যা দেখা দিয়েছে। শুধু রক্ত কনিকা ভালো আছে। চোখ খুললেও কথা বলতে পারছে না আবিদা। 

চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন বলেছেন, শিশু আবিদাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ৩ জনের নামে মামলা হয়েছে। এরমধ্যে একজন গ্রেপ্তার রয়েছে। তাকে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/লিটন/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

একজন মার্করাম, একটি সেঞ্চুরি এবং ২৭ বছর পর একটি ট্রফি

কে বেশি ক্লান্ত—ক্রিকেট না দক্ষিণ আফ্রিকা। ক্রিকেটের ক্লান্তি দক্ষিণ আফ্রিকাকে কিছু দিতে না পারার আর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লান্তি ক্রিকেটের কাছ থেকে বৈশ্বিক কোনো শিরোপা নিতে না পারার! অবশেষে ক্লান্তির সেই কবিতার ক্লাস শেষ হলো। ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকাকে কিছু দিল অথবা দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট খেলাটিকে দায়মুক্ত করল তার কাছ থেকে একটি বিশ্বকাপ নিয়ে! ক্রিকেটকে দায়মুক্ত করা বা দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যর্থতার একঘেয়ে ক্লান্তি ঘোচানোর নায়ক কে? লর্ডসে ২০২৫ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচটি বিশ্লেষণ করলে প্রশ্নটিকে অতীব সহজ মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। উত্তরটাও সবার এখন জানা। একবাক্যে সবাই বলবেন, নায়কের নাম এইডেন মার্করাম।

টেস্ট, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি—ক্রিকেটের যে সংস্করণের কথাই বলুন, দক্ষিণ আফ্রিকা খেলাটির অন্যতম পরাশক্তি। কিন্তু ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে হওয়া আইসিসি নকআউট ট্রফি (মিনি বিশ্বকাপ) ছাড়া আজকের আগপর্যন্ত কোনো বৈশ্বিক ট্রফি প্রোটিয়াদের ছিল না।

অবশেষে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার মাথায় বিশ্বসেরার মুকুট উঠল, ক্রিকেট-তীর্থ নামে পরিচিত লর্ডসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক মেইস বা গদা তুলে ধরেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই দলটির অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ২৭ বছর পর বড় কোনো টুর্নামেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকা বলতে গেলে একা হাতে শিরোপা জিতিয়েছেন মার্করাম। আরও স্পষ্ট করে বললে আসলে প্রোটিয়াদের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা এনে দিয়েছে মার্করামের ইতিবাচকতা, আত্মবিশ্বাস ও দায়িত্ব নিয়ে খেলার দৃঢ়তা।  

ঠিক ১১ বছর আগে মার্করাম নিজেকে ঠিক এ রকম তিনটি শব্দেই বর্ণনা করেছিলেন। সালটা ২০১৪, সেবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ছিলেন মার্করাম। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আইসিসির এক অনুষ্ঠানে মার্করামকে প্রশ্ন করা হয়েছিল—নিজেকে তিনটি মাত্র শব্দে কীভাবে বোঝাবেন। উত্তর যেন মুখস্থ, এমনভাবেই ১৯ বছর বয়সী তরুণ মার্করামের উত্তর ছিল—ইতিবাচক, আত্মবিশ্বাসী ও দায়িত্ববান।

সেঞ্চুরির পর মার্করাম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাতারাতি তারকা হলে দীর্ঘ সময় দর্শকের মনে থাকা কঠিন: রিচি
  • গুম করা হতো তিনটি ধাপে 
  • এক মৃত্যুপথযাত্রী পিতার থেকে ২০টি শিক্ষা
  • রেনু বেগমের ‘বুকভাসা চোখের পানি’ কেন
  • ইরান অনড়, ইসরায়েল কঠোর
  • ইরানে নিরাপদে আছেন ৬৬ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী
  • নীরব ভালোবাসার আরেক নাম
  • নারীবাদের ছদ্মবেশে ভারত যখন যুদ্ধ চালায়
  • কুমিল্লায় করোনায় আক্রান্ত ৪
  • একজন মার্করাম, একটি সেঞ্চুরি এবং ২৭ বছর পর একটি ট্রফি