কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মেহেরুন নেছা সম্প্রতি ফিলিস্তিন ও হামাস যোদ্ধাদের বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

তার এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে এবং অধ্যাপক মেহেরুন নেছাকে ডিপার্টমেন্ট থেকে বয়কট করার ঘোষণা দেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়।

এ ঘটনার পর অধ্যাপক মেহেরুন নেছা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মন্তব্যের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘গতকাল ফিলিস্তিন নিয়ে আমার টাইমলাইনে একটি স্ট্যাটাস শেয়ার করেছিলাম। সে স্ট্যাটাসটি হয়ত আমি যা বলতে চেয়েছি, তা আমার অক্ষমতার কারণে অন্যভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। সেজন্য আমি বিনীতভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’’ 

আরো পড়ুন:

ঝালকাঠিতে খালে নেমে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এসএসসি পরীক্ষা পেছানোর ‘সুযোগ নেই‘

তিনি আরো বলেন, ‘‘ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের এই রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতি আমি নিতে পারিনি। আমি একজন মুসলিম নারী এবং এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা অটুট। ব্যক্তিগতভাবে, আমি নারীর পোশাক পরিধানের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বোরকা বা হিজাবের প্রতি কোনো বিদ্বেষ পোষণ করি না। অতীতে, কোনো ঘটনার প্রেক্ষিতে পর্দা সংক্রান্ত কিছু স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, যা ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত করতে পারে, সেজন্য আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত।’’ 

অধ্যাপক মেহেরুন নেছা তার ক্ষমা প্রার্থনায় বলেন, ‘‘আমার শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানতুল্য। সবসময় আমি তাদের মঙ্গল কামনা করেছি এবং আমৃত্যু তা করে যাবো। আমার অতীতের অসচেতন কোনো কাজে যদি কেউ দুঃখ পেয়েছেন, আমি তার জন্যও ক্ষমাপ্রার্থী। আমি চাই না, আমাদের আর কোনো ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থাকুক।’’ 

অধ্যাপকের বিতর্কিত মন্তব্যের সূত্রপাত হয়েছিল ফিলিস্তিন ও হামাস যোদ্ধাদের বিষয়ে তার ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে। একটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘‘গাজা নিয়ে ইসরায়েলকে দায়ী করার বিষয়টা কিন্তু ঘটনার পরের ঘটনা। মূল ঘটনা হলো, গাজার এই পরিণতির জন্য হামাসের কট্টর-প্রতিক্রিয়াশীল-একরোখা রাজনীতিই দায়ী।’’ 

এ স্ট্যাটাসটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করে, এবং কলেজের শিক্ষার্থীরা তা তীব্রভাবে নিন্দা জানায়। কলেজের শিক্ষার্থীরা মনে করেন, অধ্যাপক মেহেরুন নেছার এই বক্তব্য ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক। এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘ফিলিস্তিনের প্রতি এমন মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত করেছেন। আমরা তার এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’ 

ভিক্টোরিয়া কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আজিজুল হক আজিজ বলেন, ‘‘আমাদের শিক্ষক যিনি আমাদের ধর্ম, সংস্কৃতি, ও মানবিক মূল্যবোধ শেখান, তিনি কীভাবে এমন মন্তব্য করতে পারেন? তার এমন আচরণ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’’ 

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, এই ধরনের বক্তব্যের জন্য অধ্যাপক মেহেরুন নেছাকে বয়কট করা ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় নেই। তার তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। 

এ বিষয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বাশার ভূইয়া জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি শুনেছেন। তিনি এ বিষয়ে কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটির তদন্ত শেষে রিপোর্ট পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ঢাকা/রুবেল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য কল জ র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ সেই পাকিস্তান, কী করবে ভারত

ওয়ার্ল্ড লেজেন্ডস চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি বয়কট করছিল ভারত। ভারতের অন্তত ৫ ক্রিকেটার পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলায় আপত্তি জানানোর পর ম্যাচটি বাতিল করা হয়। কিন্তু সেমিফাইনালে সেই পাকিস্তানকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে ভারত। এবার কী করবে তারা?

ভারত এই ম্যাচ বয়কট করবে কি না, তা এখনো জানা যায়নি। ডব্লুসিএল কর্তৃপক্ষও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি। তবে এরই মধ্যে এই টুর্নামেন্টের অন্যতম স্পনসর ইজমাইট্রিপ ভারত–পাকিস্তান সেমিফাইনাল ম্যাচ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় এই প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা নিশান্ত পিট্টি লিখেছেন, ‘ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডসে অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য আমরা ভারত দলকে অভিনন্দন জানাই। তোমরা জাতিকে গর্বিত করেছ। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন সেমিফাইনাল আর পাঁচটা ম্যাচের মতো নয়। সন্ত্রাস আর ক্রিকেট একসঙ্গে চলতে পারে না।’

ধাওয়ান পাকিস্তান ম্যাচ না খেলার পক্ষে ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ সেই পাকিস্তান, কী করবে ভারত