আর্কটিক অঞ্চলের বরফ গলে নতুন মহামারির আশঙ্কা
Published: 9th, April 2025 GMT
২০২০ সালে কোভিড–১৯ মহামারি পুরো বিশ্বকে থামিয়ে দিয়েছিল। সেই দুঃসহ স্মৃতি মন থেকে মুছে যেতে না যেতেই আর্কটিক অঞ্চলের বরফ গলে বিভিন্ন জম্বি বা ভয়ানক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর ফলে নতুন মহামারির আশঙ্কা তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
নতুন এক গবেষণার তথ্যমতে, আর্কটিক অঞ্চলে ডিজিজ এক্স লুকিয়ে থাকতে পারে। কাল্পনিক এই ভাইরাসকে মেথুসেলাহ মাইক্রোব বলা হচ্ছে। এসব জীবাণু হাজার হাজার বছর ধরে মাটি ও হিমায়িত প্রাণীর দেহে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। এরপর বরফ গলার কারণে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন প্রাচীন রোগ মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে।
আরও পড়ুনআর্কটিক অঞ্চলে বরফ কমে যাওয়ায় ঝুঁকিতে মেরু ভালুক০৮ নভেম্বর ২০২৪শারজাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী খালেদ আব্বাস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন কেবল বরফ গলে যাওয়াকে বোঝায় না। এর ফলে বাস্তুতন্ত্রের প্রাণী ও মানুষের মধ্যকার বিভিন্ন বাধা সরে যাচ্ছে। পারমাফ্রস্ট বলতে সেসব মাটি, শিলা বা পলিকে বোঝায়, যা হিমায়িত থাকে। আর্কটিক ও সাব–আর্কটিক অঞ্চলে হাজার হাজার বছর ধরে অনেক এলাকা এমন অবস্থায় আছে। বরফ গলার ফলে হাজার হাজার বছর ধরে হিমায়িত থাকা প্রাচীন ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস উন্মুক্ত পরিবেশে চলে আসতে পারে। আর্কটিকে বরফ গলে যাওয়ার কারণে মারাত্মক কোনো জম্বি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে পরবর্তী মহামারি শুরু হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
২০১৪ সালে সাইবেরিয়ান পারমাফ্রস্টে পুরোনো ভাইরাসের খোঁজ পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৬ সালে সাইবেরিয়ান পারমাফ্রস্টে ৭৫ বছর ধরে হিমায়িত থাকা একটি পশুর মৃতদেহ থেকে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। গত বছর পশ্চিম চীনের একটি হিমবাহের গভীরে ১ হাজার ৭০০টি প্রাচীন ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এসব ভাইরাস হিমবাহ ও পারমাফ্রস্ট গলে প্রকৃতিতে মুক্ত হলে নতুন উদ্বেগ তৈরি হতে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।