পানির নিচে থাকা ‘পিরামিড’ ঘিরে রহস্য
Published: 10th, April 2025 GMT
জাপানের রিউকিউ দ্বীপপুঞ্জের কাছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৮২ ফুট নিচে রয়েছে ইয়োনাগুনি মনুমেন্ট। ১৯৮৬ সালে আবিষ্কার হওয়া প্রায় ৯০ ফুট উঁচু বিশাল কাঠামোটিতে ধারালো কোণযুক্ত বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। পিরামিডের আদলে বড় বড় পাথর দিয়ে তৈরি হওয়ায় ইয়োনাগুনি মনুমেন্ট ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই আগ্রহ রয়েছে গবেষকদের। সম্পূর্ণরূপে পাথর দিয়ে তৈরি স্থাপনাটি মানুষের তৈরি বলে মনে করেন অনেকেই।
গবেষকদের তথ্যমতে, পাথর পরীক্ষা করে ইয়োনাগুনি মনুমেন্ট ১০ হাজার বছরের বেশি পুরোনো বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ধারণা সত্যি হলে মিসরের পিরামিডের চেয়েও কয়েক হাজার বছর আগে তৈরি হয়েছে ইয়োনাগুনি মনুমেন্ট। এটি যদি আসলেই কোনো মানবসভ্যতার অংশ হয়, তাহলে মিসরীয় পিরামিড, স্টোনহেঞ্জসহ প্রাচীন কাঠামোর ইতিহাস নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে আমাদের।
একদল গবেষকের ধারণা, পিরামিডের মতো আকারে বড় কাঠামো নির্মাণের ক্ষমতা প্রাচীন মানুষের ছিল। কৃষিকাজ বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এমন কাঠামো তৈরির ক্ষমতা মানুষের বিকশিত হয়েছিল। কোনো উন্নত সভ্যতা হয়তো এমন বিশাল ধাপযুক্ত পিরামিড নির্মাণ করেছিল।
আরেক দল গবেষক মনে করছেন, ইয়োনাগুনি মনুমেন্ট আসলে একটি প্রাকৃতিক শিলার গঠন। ইয়োনাগুনি মনুমেন্ট প্রাকৃতিকভাবেই পিরামিডের মতো। সম্প্রতি ইউটিউবার জো রোগানের এক্সপেরিয়েন্স পডকাস্টে এই পিরামিড নিয়ে আলোচনা করা হয়। পডকাস্টে প্রত্নতত্ত্ববিদ ফ্লিন্ট ডিবল বলেন, আমি অনেক অদ্ভুত প্রাকৃতিক জিনিস দেখেছি। এখানে আসলে এমন কিছুই দেখা যাচ্ছে না, যা দেখে মনে হবে এটি কোনো মানুষের তৈরি। তবে হারানো সভ্যতাবিষয়ক বইয়ের লেখক গ্রাহাম হ্যানকক বলেন, ‘আমার কাছে অন্য কিছু মনে হয়। পানির নিচ থেকে তোলা ছবিতে দেখা যায়, সেই কাঠামোতে স্পষ্টভাবে মানুষের তৈরি সিঁড়ির ধাপ, বারান্দা ও খোদাই করা পাথরের মুখ রয়েছে।’
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মন ম ন ট
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।
জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’
অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।
জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া