বাবার লাশ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে গেল রিমা
Published: 11th, April 2025 GMT
বাবার মৃত্যুর শোক বুকে চেপে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে রিমা আক্তার। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বাবার লাশ বাড়িতে রেখেই সে পরীক্ষাকেন্দ্রে যায়।
রিমা রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার তালিমগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তার বাবার নাম মতলব মিয়া। তিন ভাই-বোনের মধ্যে রিমা সবচেয়ে ছোট। তাঁদের বাড়ি মিঠাপুকুর উপজেলার চেংমারী ইউনিয়নের পশ্চিম তিলকপাড়া গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মতলব মিয়া গত বুধবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান।
গতকাল সকালে বাবার লাশ বাড়িতে রেখেই রিমা পরীক্ষা দিতে যায় শুকুরেরহাট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে। সে ২২ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দেয়। পরে বেলা ১১টার দিকে তাঁর বাবার দাফন সম্পন্ন হয় পারিবারিক কবরস্থানে।
তালিমগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘মৃত্যুর খবর শুনে আমি রিমার বাড়িতে যাই। তাকে মানসিকভাবে সান্ত্বনা দিই। পরে সে সাহস নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি বিকাশ চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘রিমার বাবার মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। সে যেন সব কটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে এবং ভালো ফল করে, সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজখবর রাখা হবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাবা মারা গেছেন ৭ দিন আগে, আজ বাসচাপায় প্রাণ গেল ছেলেরও
মাত্র সাত দিন আগে বাবা মারা গেছেন। আজ দুর্ঘটনায় মারা গেলেন ছেলে। চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাসের চাপায় মোটরসাইকেলচালক মো. মুরাদ (৩৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বরদিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মুরাদ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা সদ্যপ্রয়াত মো. শাহজাহানের ছেলে। তিনি ঢাকার উচ্চ আদালতে কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ঢাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
পরিবার, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদের ছুটিতে মুরাদের স্ত্রী ও সন্তানেরা গ্রামের বাড়িতে আসেন। মুরাদ তখন ঢাকায় ছিলেন। ছুটি শেষে আজ সকালে মোটরসাইকেল চালিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের আনতে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তিনি। দুপুর ১২টার দিকে বরদিয়া এলাকায় পৌঁছালে চাঁদপুর থেকে ঢাকাগামী ‘জৈনপুর এক্সপ্রেস’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে তাঁর মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় মুরাদ বাসের নিচে চাপা পড়েন। মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে যায়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মুরাদের চাচাতো ভাই মোবারক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রায় এক সপ্তাহ আগে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর (মুরাদ) বাবা মারা যান। সপ্তাহ না যেতেই আজ দুর্ঘটনায় মারা গেল মুরাদ। এত অল্প সময়ের মধ্যে পরিবারের দুজন সদস্যের মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। এ ঘটনায় পুরো পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্ত্রী-সন্তানদের আর ঢাকায় নেওয়া হলো না তাঁর। এর আগেই সব শেষ।’
মুরাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেহ আহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ওই বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা হয়নি। নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে।