নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ৬ গ্রুপে বিভক্ত : দুলাল
Published: 11th, April 2025 GMT
বন্দর উপজেলা ও থানা বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উদ্যাগে ঈদ পূনমিলনী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য কামনাসহ ফিলিস্তিনের ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় বন্দরে ২৩ নং ওয়ার্ডের নবীগঞ্জ কবিলেরমোড় এলাকায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে মহানগর বিএনপি নেতা মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, আমার পরিবার শহীদ জিয়ার দল করে। আমরা কোন ব্যাক্তির দল করি না। সঠিক নেতৃত্ব না থাকার কারনে নারায়নগঞ্জ মহানগর বিএনপি বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পরেছে।
বিএনপি নেতা দুলাল, এড: শাখাওয়াত ও এডঃ টিপুকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, আপনারা বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেননি। আপনাদের ব্যার্থতার কারনে নারায়নগঞ্জ মহানগর বিএনপি ৬ গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পরেছে।
তিনি আরো বলেন, যারা নারায়নগঞ্জে চাঁদাবাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করুন। আর তা না হলে জনগন ও নেতাকর্মীদের নিয়ে আপনাদের প্রতিহত করা হবে। সে সাথে তিনি নিরিহ ফিলিস্তিনি উপর ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার র্তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।
পরিশেষে তিনি বিএনপি স্বার্থে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি কান্ডারি আলহাজ্ব আতাউর রহমান মুকুলের বহিস্কার আদেশ প্রত্যাহারে জোর দাবি জানান আগামী রাস্ট্র নায়ক তারেক রহমানসহ বিএনপি সিনিয়র নেতৃবৃন্দের কাছে।
মহানগর বিএনপি সদস্য ও বন্দর উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে ঈদ পূর্ণমিলনী সভায় বক্তব্য রাখেন, মহানগর বিএনপি নেতা এড: আনিছ, মেজবা উদ্দিন স্বপন, সদর থানা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক হাজী রাশেদ আহাম্মেদ টিটু,কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি শহীদ মেম্বার, বন্দর উপজেলা বিএনপি নেতা আবুল কাশেম, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপি সাধারন সম্পাদক আমজাদ হোসেন মেম্বার, মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি কাবিল হোসেন, বন্দর উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম, মুছাপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
বন্দর থানা ২১ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা রুমেল এর সঞ্চালনায় ঈদ পূর্ণমিলনী ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, ২৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা সভাপতি রাসেল, প্রচার সম্পাদক আলী আকবর, বশির আহাম্মেদ, ২০ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা জাব্বার পাঠান ওৃৃ মো: শাহীন, বন্দর থানা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক মোদাসসির রহমান আপন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য স্বজন, মানিক, ২৩ নং ওয়ার্ড কৃষক দলের সদস্য নির্জন, ২৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মোঃ আক্তার হোসেন, সাবেক যুবদলের সাধারন সম্পাদক সানোয়ার হোসেন, তৌহিদ, মহিবর, কালাম, জাকির, দেলোয়ার, আসাদ, ডালিম, হাসান মেম্বার, আনিছ,২৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা হিরন বাদশা, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপি সহ সভাপতি ইসলাম, বিএনপি নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক, জনি, বাহাউদ্দীন, শাহজাহান, সফিকুল, জাহাঙ্গীর, আমান, আলী হোসেন, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক, সাফি, মোরশেদ আলম, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মাসুদ, কাইয়ুম, সুলতান ও বন্দর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা পাভেল,বন্দর উপজেলা ও থানা বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ন ব এনপ র ব এনপ য বদল রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ
ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না।
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।