শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডোপ টেস্ট দিয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
Published: 15th, April 2025 GMT
প্রথমে রক্ত পরীক্ষা, এরপর ডোপ টেস্ট। এতে উত্তীর্ণ হয়েই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ভর্তি হচ্ছেন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। ভর্তি কার্যক্রমে অংশ নিতে এসে কারও মুখে উচ্ছ্বাস, কারও চোখেমুখে কিছুটা আতঙ্ক। নতুন পরিবেশে এত নিয়মকানুন-সবকিছু যেন অভিজ্ঞতার ভান্ডারে নতুন এক অধ্যায়।
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হয়েছে স্নাতক প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ভর্তি কার্যক্রম। চলবে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত। আজ ডাকা হয়েছে ‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১ থেকে ৫০০তম শিক্ষার্থীকে।
ভর্তি কমিটির সদস্যসচিব মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ জানা থাকে না। সে জন্য প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন সঞ্চালন রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের পরীক্ষা করছে। এরপর ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে এবং তাৎক্ষণিক ফলাফল জানানো হচ্ছে। ডোপ টেস্ট নেগেটিভ হলে শিক্ষার্থী পরবর্তী ধাপে যাচ্ছেন। পজিটিভ হলে তাঁকে কাউন্সেলিংয়ের আওতায় আনা হবে। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে মাদকবিরোধী বার্তা।’
২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবারের মতো শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডোপ টেস্ট চালু হয়। এবার চলছে ষষ্ঠবারের মতো। এর আগে, ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এর পর থেকেই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে চলছে কার্যক্রম।
ডোপ টেস্ট কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক নারায়ণ সাহা বলেন, ডোপ টেস্টে পাঁচটি ক্যাটাগরি রয়েছে, স্লিপিং পিল (বেনজুডায়াজিপাইন), ইয়াবা (অ্যাম্পিটামিন), হেরোইন (অপিয়াস), গাঁজা (মারিজুয়ানা) ও অ্যালকোহল। স্লিপিং পিল চিকিৎসকের পরামর্শে গ্রহণ করা হলে তা বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। তবে মাত্রাতিরিক্ত হলে কাউন্সেলিংয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হবে। প্রয়োজনে পাঠানো হবে পুনর্বাসন কেন্দ্রে।
ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ পদ্ধতিতে। ভর্তি কার্যক্রমে রয়েছে সাতটি ধাপ—রক্ত পরীক্ষা, ডোপ টেস্ট, স্বাক্ষর যাচাই, তথ্য যাচাই ও রেজিস্ট্রেশন, ভর্তি ফি প্রদান, চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশন যাচাই এবং হল সংযুক্তিসহ আবাসন আবেদন।
এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। খুলনা থেকে ছেলেকে ভর্তি করাতে আসা আবদুল আউয়াল বলেন, ‘নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। আমরা দূরে থাকলেও সন্তানের মনে থাকবে যে মাদক খারাপ জিনিস। এমন নিয়ম চাকরির ক্ষেত্রেও থাকা উচিত।’
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে ভর্তি হওয়া মুয়াজ বিন ওমর বলেন, ‘স্বপ্নের বিভাগে ভর্তি হতে পেরে দারুণ লাগছে। ভর্তির প্রক্রিয়াটাও ছিল ঝামেলামুক্ত।’
ভর্তিসংক্রান্ত ওয়েবসাইট অনুযায়ী, আগামীকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলবে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম। এদিন ৫০১ থেকে ৯৫৫তম শিক্ষার্থীদের ডাকা হয়েছে। একই দিনে স্থাপত্য বিভাগে ১ থেকে ৩০তম শিক্ষার্থীদের ডাকা হয়েছে।
ভর্তির তারিখ ও ফি পরিবর্তন
১৭ এপ্রিলের ‘বি’ ইউনিটের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি কার্যক্রম অনিবার্য কারণে পরিবর্তন করে ২২ এপ্রিল পুননির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রথম বর্ষের ভর্তি ফি ১৭ হাজার টাকার পরিবর্তে ১৪ হাজার ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চার বছর গুচ্ছভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পর চলতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি এককভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এবার কোটাসহ ২৮টি বিভাগে মোট আসন ১ হাজার ৬৭১টি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।