পবন কল্যাণের স্ত্রী কেন ন্যাড়া হলেন?
Published: 15th, April 2025 GMT
ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা ও অন্ধ্রপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী পবন কল্যাণের স্ত্রী আন্না লেজনেভার পরনে শাড়ি। হেঁটে গিয়ে সিঁড়ির কাছে খানিকটা পদ্মাসনের ভঙ্গিতে বসেন। এরপর এক নারী তার মাথার লম্বা চুলগুলো খুর দিয়ে কাটতে শুরু করেন। এরপর ন্যাড়া মাথায় বের হতে দেখা যায় তাকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে এমন দৃশ্য দেখা যায়। তা ছাড়াও বেশ কিছু ছড়িয়ে পড়েছে। যাতে দেখা যায়, ন্যাড়া মাথার আন্না তীর্থযাত্রীদের খাওয়াচ্ছেন। পবন কল্যাণের স্ত্রীকে এমন লুকে দেখে নেটিজেনদের অনেকে হতবাক। হঠাৎ করে কেন ন্যাড়া হলেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।
সিয়াসাত ডটকম জানিয়েছে, ছেলের অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর জানার পরই সিঙ্গাপুরে ছুটে যান পবন কল্যাণ। এরই মধ্যে স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে ভারতে ফিরেছেন। ছেলের দুর্ঘটনার পর পবনের স্ত্রী আন্না তার মাথার চুল উৎসর্গ করার মানত করেছিলেন। আর ভারতে ফিরে তিরুমালার মন্দিরে গিয়ে নিজের চুল উৎসর্গ করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি মন্দির থেকে ধারণ করা।
এছাড়াও পুত্র মার্কের নামে মন্দিরের আনন্দদামে ১৭ লাখ রুপি দান করেন আন্না। তীর্থযাত্রীদের বিনামূল্যে খাওয়ানোর জন্য এই অর্থ ব্যয় হয়েছে বলেও এ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গত ৮ এপ্রিল সকালে সিঙ্গাপুরে অগ্নিদগ্ধ হয় পবন কল্যাণের পুত্র মার্ক শঙ্কর। মূলত, মার্কের স্কুলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় ৮ বছরের মার্ক। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মার্ক শঙ্করের হাত ও পা পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ড থেকে ধোঁয়া সৃষ্টি হওয়ায় শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় তার। তাকে উদ্ধার করে সিঙ্গাপুরের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়; সেখানে চিকিৎসা হয়েছে। সুস্থ হলে ছেলেকে নিয়ে ভারতে ফেরেন পবন কল্যাণ।
১৯৯৭ সালে নন্দিনীকে প্রথম বিয়ে করেন পবন কল্যাণ। ২০০৭ সালে ভেঙে যায় এ সংসার। ২০০৯ সালে অভিনেত্রী রেণু দেশাইকে বিয়ে করেন পবন। ২০১২ সালে এ সংসারের ইতি টানেন তারা। পবন-রেণু দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে।
২০১১ সালে ‘টিন মার’ সিনেমার শুটিং সেটে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান রাশিয়ান মডেল-অভিনেত্রী আন্না লেজনেভার ও পবন কল্যাণ। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ঘরোয়া আয়োজনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন এই যুগল। এ সংসার আলো করে জন্ম নেয় পোলেনা অঞ্জনা পবনোভা নামে এক কন্যা এবং মার্ক শঙ্কর পবনোভিচ নামে একটি পুত্রসন্তান।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।