বরফঠান্ডা পানিতে একসঙ্গে ২৪৬১ মানুষের গোসল
Published: 16th, April 2025 GMT
প্রচণ্ড শীতে জলাশয়ের প্রায় বরফঠান্ডা পানিতে গোসল করার কথা শুনলে অনেকেই পিছিয়ে যাবেন। তবে চেক প্রজাতন্ত্রের ২ হাজার ৪৬১ জন একসঙ্গে এই কঠিন কাজ করে দেখিয়েছেন। ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার পানিতে গোসল করেছেন তাঁরা। যেটাকে বলা হয় ‘পোলার বিয়ার ডিপ’।
‘সাহসী’ এই কাজের লক্ষ্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখানো। চেক প্রজাতন্ত্রের দ্বিতীয় বৃহৎ হ্রদ মোস্ট লেকে গত ১ মার্চ ওই গোসলের আয়োজন করা হয়।
ওই আয়োজনের উদ্যোক্তা ডেভিড ভেনকল। তিনি একজন ফ্রিডাইভার। ‘কোল্ড থেরাপি’ পরামর্শক হিসেবেও চেক প্রজাতন্ত্রে তাঁর নামডাক আছে।
সাঁতারের পোশাকে ঠান্ডা পানিতে নেমে ‘পোলার বিয়ার ডিপ’ করতে হয়। অনেক দেশেই এ ধরনের আয়োজন করা হয়। সাধারণত দাতব্যকাজের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে কিংবা নতুন বছরের প্রথম দিন উদ্যাপন করতে এমন আয়োজন করা হয়।
আগে ‘পোলার বিয়ার ডিপ’-এর রেকর্ড ছিল পোল্যান্ডের একটি দলের। ২০১৫ সালে পোল্যান্ডের ১ হাজার ৭৯৯ জনের একটি দল ঠান্ডা পানিতে গোসল করে ওই রেকর্ড গড়েছিল।
ভেনকলের অবশ্য এটাই প্রথম রেকর্ড গড়ার উদ্যোগ নয়। এর আগে তিনি কোনো ধরনের পাখনা ও ডাইভিং স্যুট ছাড়া বরফপানির নিচে সবচেয়ে বেশি সময় সাঁতার কাটার রেকর্ড গড়েছিলেন। ২০২১ সালে তিনি ওই রেকর্ড গড়েন এবং চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ওই রেকর্ডের মালিক ছিলেন।
‘কোল্ড থেরাপি’ শরীর ও মনের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ভালো, তা দেখাতে ২ হাজার ৪৬১ জনকে নিয়ে বরফঠান্ডা পানিতে গোসলের আয়োজন করা হয়েছিল।
গোসলের দিন সকালে অংশগ্রহণকারীরা নাম নিবন্ধন করেন এবং বিকেলে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার পানিতে নেমে গোসল করেন।
গোসলে অংশ নেওয়ার আগে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে কথা বলেছেন কোল্ড থেরাপি বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তার জন্য ঠান্ডা পানিতে গোসলে নামার আগে বেশ কিছু পরামর্শ দেন।
প্রথমে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা পানিতে নামেন। রেকর্ড গড়তে সব অংশগ্রহণকারীকে অন্তত এক মিনিট পানিতে সম্পূর্ণ শরীর ডুবিয়ে রাখতে হয়েছে। সফলভাবে এক মিনিট পার করার পর নতুন রেকর্ড গড়ার উল্লাসে চিৎকার করে ওঠেন অংশগ্রহণকারীরা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক
‘এটি খুবই আনন্দায়ক খবর যে এই স্কুলে আদিবাসী ও বাঙালি শিক্ষার্থীরা একসঙ্গেই বসে শান্তিপূর্ণভাবে পাঠ গ্রহণ করে। যেখানে ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরাও একই আসনে বসে পাঠ নিচ্ছে। সম্প্রীতি-ভালোবাসার এ দৃশ্য আমাদের বিমোহিত করেছে।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শনে এসে জার্মান নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক মাথিয়াস রিচার্ড এ মন্তব্য করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক অবসরপ্রাপ্ত রসায়নবিদ সিলভিয়া মাউরিজিও। ‘দেশ ঘুরি’ নামের একটি ট্যুরিস্ট সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা এ বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন।
বেলা সাড়ে ১১টায় তাঁরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলে ফুলের তোড়া ও মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ ঘুরিয়ে দেখান প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর। তাঁরা শ্রেণিকক্ষগুলোতে গিয়ে পাঠ উপস্থাপন দেখেন। কথা বলেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। শিক্ষার্থীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁদের সঙ্গে ভাববিনিময় করে।
এ সময় দুই পর্যটক জানতে পারেন, এ বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বাঙালি শিশুরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে। ইসলাম-হিন্দু-খ্রিষ্টধর্মের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ না করে একবেঞ্চে বসে পাঠ গ্রহণ করে। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁরা খুবই খুশি হন।
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুমা খাতুন দুজনকে একটি গান গেয়ে শোনায়। বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সামনে ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান প্রদর্শন করে। সিলভিয়াও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নাচে অংশ নেন। সৃষ্টি হয় একটি আনন্দদায়ক পরিবেশের। এ সময় বাঙালি ও কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতি-ভালোবাসা ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দেখে খুশি হন।
বিদেশি দুই পর্যটকের সামনে আলোর স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা