ওয়াক্ফ আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকার এখনই কোনো পদক্ষেপ নেবে না। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত নতুন আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিল ও রাজ্য ওয়াক্ফ বোর্ডে কোনো নতুন নিয়োগ হবে না। পাশাপাশি, ওয়াক্ফ সম্পত্তি বলে যা ঘোষিত এবং যে সম্পত্তি ওয়াক্ফর বলে মানুষ বিশ্বাস ও ব্যবহার করে আসছেন, দুটির কোনোটিতেই কোনো রকম পরিবর্তন করা হবে না।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ওয়াক্ফ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আগামী ৫ মে। মামলাকারীদের বেঞ্চ জানিয়েছেন, যত আবেদন জমা পড়েছে সেগুলোর মধ্য থেকে পাঁচটি বেছে নিয়ে প্রধান আবেদন হিসেবে গণ্য করা হবে। বাকিগুলো বিবেচিত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ১০০ থেকে ২০০ আবেদনের বিচার করা সম্ভব নয়।

ওয়াক্ফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে ৭২টি আবেদন নথিভুক্ত হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন আবেদন জমা পড়ছে।

গত বুধবার একগুচ্ছ মামলার শুনানির প্রথম দিনেই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথন নতুন আইন নিয়ে বেশ কিছু পর্যবেক্ষন করেছিলেন। নিজেদের মনোভাবও প্রকাশ করেছিলেন। যেমন প্রশ্ন তোলা হয়েছিল ওয়াক্ফ কাউন্সিল ও বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে। সরকারের কাছে বিচারপতিরা জানতে চেয়েছিলেন, হিন্দু দেবস্থান বা ধর্মীয় সংস্থা পরিচালনায় অহিন্দুরা থাকতে পারেন কি না; কিংবা পরিচালনায় অহিন্দুদের অন্তর্ভুক্তিতে সরকার সম্মত কি না।

বিচারপতিরা এই প্রশ্নও করেছিলেন, ব্রিটিশ আমলে ওয়াক্ফ আইন প্রবর্তনের অনেক আগে থেকে নথিহীন যেসব সম্পত্তি ওয়াক্‌ফর বলে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, সেসব নথিভুক্ত কীভাবে করা সম্ভব? পাশাপাশি নথিভুক্ত না করা গেলে সেই সম্পত্তি কী করে ওয়াক্‌ফর নয় বলে ঘোষণা করা যায়? তাতে সমস্যার পাহাড় তৈরি হবে।

বেঞ্চের মনোভাব বুঝেই বৃহস্পতিবার সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা শুনানির শুরুতেই জানিয়ে দেন, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত সরকার নতুন ওয়াক্ফ আইনে কাউন্সিল ও বোর্ডে কোনো নতুন নিয়োগ করবে না। কোনো ওয়াক্ফ সম্পত্তির বদলও ঘটানো হবে না।

সলিসিটর জেনারেল জানান, কেন্দ্রের কাছে প্রচুর তথ্য জমা পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বহু সম্পত্তি ওয়াক্ফ হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে, বহু সম্পত্তি নিয়ে অনেক মানুষের মনে প্রশ্নও আছে। এসব বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য তিনি এক সপ্তাহ সময় চান। কেন্দ্রকে সেই সময় গ্রাহ্য করেন সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনকারীরাও তাঁদের মতামত জানাতে পাঁচ দিন সময় পাবেন। সেই হিসাবে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয় ৫ মে। ওই শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তী নির্দেশ জারি করবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব চ রপত পরবর ত নত ন ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে