গণঅভ্যুত্থানে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক দলসমূহ ও অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে পরস্পর বিভেদ কমিয়ে সমঝোতায় না পৌঁছালে সংস্কার, ফ‍্যাসিবাদের বিচার ও নির্বাচন সবকিছুতেই অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।

শ‌নিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর বিজয়নগ‌র কার্যাল‌য়ে দলের নিয়মিত জাতীয় নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় সূচনা বক্তব্যে তি‌নি এ উদ্বেগের কথা জানান।

মঞ্জু বলেন, বিএনপি বলছে নির্বাচনের কাট অফ টাইম চলতি বছরের ডিসেম্বর, সরকার বলছে পরবর্তী বছরের জুন আর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মত হচ্ছে দৃশ্যমান সংস্কার ও বিচারের পরই নির্বাচন। এই তিন মতের মাঝে আলাপ-আলোচনা ও সমঝোতাপূর্বক একটি গ্রহণযোগ্য ঐকমত্যে না পৌঁছালে যে অনিশ্চয়তা ও সংশয় তৈরি হবে তা দেশের জন্য কোনভাবেই কল্যাণ বয়ে আনবে না।

জনগণের একটা অংশ প্রফেসর ইউনূসকে ‘পাঁচ বছরের জন্য চাই’ বা ‘মার্চ ফর ইউনূস’ জাতীয় কর্মসূচির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সরকার যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরো উন্নতি ঘটাতে পারে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় রাখে আর অর্থনীতিতে দৃশ্যমান অগ্রগতি ঘটাতে পারে তাহলে রাজনীতির বাইরে সরকারের পক্ষে একটা জনমত তৈরি হয়ে যেতে পারে। রাজনৈতিক পক্ষ আর অরাজনৈতিক পক্ষ মুখোমুখি দাড়িয়ে গেলে সেটা কারো জন্য শুভ ফল বয়ে আনবে না।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি সুশাসন ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারে এবং সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে অযথা ধীর্ঘসূত্রিতার আশ্রয় নেয় তাহলে বর্তমান রিজিমকে ১/১১ সরকারের পরিণতি ভোগ করলেও আশ্চর্য হবার কিছু থাকবে না।

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা, জাতীয় নির্বাচন ও দলের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রস্তুতি নিয়ে বক্তব‍্য রাখেন এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা.

মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক, জাহাঙ্গীর কাসেম, বিএম নাজমুল হক, লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম ও লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন।

সভায় সারা দেশের সাংগঠনিক কার্যক্রম তুলে ধরেন পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (দপ্তর) আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা। অর্থনৈতিক আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (অর্থ) আমিনুল ইসলাম এফসিএ। জাতীয় নির্বাহী পরিষদের নিয়মিত সভায় পার্টির জাতীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চিকিৎসককে মারধর করলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা

দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মশিউর রহমানকে মারধর ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. মামুনের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত অবস্থায় মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমানের উপর হামলা চালান মামুনসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল। 

মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান বলেন, ‘‘হাসপাতালে ফারুক ও তার স্ত্রী ১২ থেকে ১৩ দিন ধরে ভর্তি আছেন। তাদের সব ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এখন তারা সুস্থ। তাদের আজকে রিলিজ দিতে চেয়েছি কিন্তু তারা রিলিজ নিতে চান না। এ বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার বাগবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে মামুনসহ ১০ থেকে ১২ জন এসে আমার উপর আক্রমণ করেন। মামুন আমার মুখে কিল-ঘুষি মারেন এবং সবাই আমার গলা চেপে ধরে বাহিরে নিয়ে যান। আমার মোবাইল ফোনও তারা কেড়ে নেন।’’ 

আরো পড়ুন:

অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা

সাভারে গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন, দগ্ধ দম্পতি হাসপাতালে

হাকিমপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মামুন বলেন, ‘‘ডা. মশিউর রহমান আমাকে ধাক্কা দেন। তখন এ ঘটনা ঘটে। তবে আমি তাকে মারিনি। আমার সঙ্গের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।’’ মশিউর রহমানের মোবাইল ফোন তখনি ফেরত দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।  

হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘‘হাসপাতালের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। অভিযুক্ত মামুনকে চিকিৎসকদের সামনে মারধর করেছি। বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে।’’  

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছি। তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।’’  

হাকিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘হাসপাতালের ঘটনা অবগত হয়েছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’

দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. আসিফ ফেরদৌস বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে উপজেলা বিএনপির নেতারা হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় যাবো।’’
 

ঢাকা/মোসলেম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ