সংস্কারের আগে নির্বাচন দিলে শহীদ পরিবার বিচার পাবে না, আশঙ্কা জুলাই মঞ্চের
Published: 19th, April 2025 GMT
জুলাই–আগস্ট গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে জুলাই মঞ্চ। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের আগে নির্বাচন দেওয়া হলে তা চব্বিশের শহীদদের প্রতি অবিচার হবে বলে মনে করছে সংগঠনটি।
আজ শনিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে জুলাই মঞ্চের পঞ্চম শহীদি মার্চ থেকে এ দাবি জানানো হয়। গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জুলাই মঞ্চের অন্যতম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে দুর্বৃত্তায়ন গড়ে উঠেছে, চব্বিশের বিপ্লব তার বিরুদ্ধে বড় একটা বার্তা। অথচ রাষ্ট্রের সেসব সমস্যা রেখে অতীতের মতোই একটা নির্বাচনের জন্য সবাই উঠেপড়ে লেগেছে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, গণহত্যার বিচার, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল এবং প্রশাসনের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করার আগে কোনো নির্বাচন দেওয়া হলে তা হবে চব্বিশের শহীদদের প্রতি অবিচার।’
জুলাই মঞ্চের প্রতিনিধি সাকিব হোসেন বলেন, বর্তমান প্রশাসনে গণহত্যায় জড়িত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা চাকরিতে এখনো বহাল। অধিকাংশকেই এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। গণহত্যার মামলাগুলোর কার্যক্রম এগোচ্ছে না। শহীদ পরিবারগুলো বিচার নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকার চলে গেলে তারা আর বিচার পাবে না।
সাকিব আরও বলেন, জুলাই মঞ্চ অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে তাঁর নেতৃত্বেই জাতীয় সরকারে রূপ দেওয়ার কাজ করে যাবে। কেননা, জাতীয় সরকার ছাড়া বাংলাদেশের সরকারে গণ–অভ্যুত্থানের চেতনা পরিপূর্ণভাবে প্রতিফলিত হবে না। গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের জন্য জুলাই অভ্যুত্থানের সব অংশীদারকে নিয়ে সমন্বিত জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।
জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় যাত্রাবাড়ীতে নিহত শহীদ শাকিলের মা হেলেনা বেগম বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস সরকার চলে গেলে আমরা আর বিচার পাব না। এই সরকার থাকতে থাকতেই আমরা আমাদের সন্তান হত্যার বিচার চাই।’
জুলাই মঞ্চ প্রতিনিধি তাসমিয়া রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শহীদ মেহেদী হাসানের মা পারভীন বেগম, আহতদের পরিবারের সদস্য হাসিব বিল্লাহ, মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণহত য র ব চ র জ ত য় সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।