গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি সেনা নিহত
Published: 20th, April 2025 GMT
উত্তর গাজা উপত্যকায় হামাসের হামলায় একজন ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং আরো পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
নিহত সেনার নাম ওয়ারেন্ট অফিসার গা’হালেব স্লিমান আলনাসাসরা। ৩৫ বছর বয়সী আলনাসাসরা গাজা ডিভিশনের নর্দার্ন ব্রিগেডের একজন ট্র্যাকার ছিলেন।
গত ১৮ মার্চ, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) হামাসের বিরুদ্ধে পুনরায় সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে তিনি গাজায় নিহত প্রথম ইসরায়েলি সেনা।
আরো পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরো ৫৪ ফিলিস্তিনি
গাজায় এক মাসে ৪ লাখের বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে ইসরায়েল
শনিবার (১৯ এপ্রিল) উত্তর গাজার বেইত হানুনের কাছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ২৫২তম ডিভিশনের অভিযানের সময় হামাসের হামলার ঘটনাটি ঘটে। ইসরায়েলের বাফার জোন, যা এখন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ৩০ শতাংশেরও বেশি জুড়ে রয়েছে, যা আরো বাড়ানোর জন্য ডিভিশনটি কাজ করছে।
আইডিএফের প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে, দুপুর ১২ টা ৫৮ মিনিটে, গাজার অভ্যন্তরে একটি সেনা শিবিরের কাছে আইডিএফের একটি লজিস্টিক রোড ধরে গাড়ি চালানো একদল সেনার ওপর হামাসের যোদ্ধরা গুলি চালায়। একটি সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসা হামাস কর্মীরা নিরস্ত্র সেনা গাড়িতে একটি আরপিজি ছোড়ে।
আরপিজি হামলায় ৪১৪তম কমব্যাট ইন্টেলিজেন্স কালেকশন ইউনিটের তিনজন নারী সেনা আহত হন। তাদের মধ্যে দুজন- একজন অফিসার এবং একজন কমব্যাট মেডিকেল গুরুতর আহত হন।
কিছুক্ষণ পরে, গাজা ডিভিশনের নর্দার্ন ব্রিগেড কমান্ডার কর্নেল ওমরি মাশিয়ার নেতৃত্বে উদ্ধারকারী বাহিনী ব্রিগেডের ট্র্যাকারদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
তদন্ত অনুসারে, দুপুর ১ টা ২৫ মিনিটে হামাস যোদ্ধরা ইসরায়েলি উদ্ধারকারী বাহিনীর কাছে রাস্তার পাশে একটি বিস্ফোরক ডিভাইস বিস্ফোরণ ঘটায়, যার ফলে আলনাসাসরা নিহত হন এবং আরো দুইজন ট্র্যাকার আহত হন, যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।
আইডিএফ জানিয়েছে, হামলার পেছনের হামাস যোদ্ধাদের নির্মূল করার লক্ষ্যে আইডিএফ ওই এলাকায় একের পর এক হামলা চালিয়েছে।
আইডিএফ আরো জানিয়েছে, তারা গত ১৮ মার্চ হামাসের বিরুদ্ধে গাজায় পুনরায় সামরিক অভিযান শুরু করা পর থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে হামলার পর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। তবে যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি ভেস্তে যাওয়ায় গত ১৮ মার্চ থেকে পুররায় গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।
গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫১ হাজারেও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত গাজায় প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এর বিপরীতে, গাজায় স্থল আক্রমণ এবং সীমান্তে সামরিক অভিযান শুরু করার পর হামাসের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪১১ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
সড়কের কাজ ফেলে রেখে উধাও ঠিকাদার, দুর্ভোগে অর্ধলাখ বাসিন্দা
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙা ইউনিয়নের একটি সড়কের কাজ ফেলে এক বছরের বেশি সময় ধরে লাপাত্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন কাজাইকাটা, চর কাজাইকাটা, শান্তির চর, খরানিয়ার চর, ফুলকার চর, সোনাপুর, গেন্দার আলগসহ ২৫ গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার বাসিন্দা।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ইউনিয়নটির বন্দের মোড় থেকে পশ্চিম দিকে আনন্দবাজার হয়ে তেলির মোড় পর্যন্ত ওই সড়কে পাকাকরণের কাজ শুরু হয়েছিল।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রৌমারী উপজেলা শহরের সঙ্গে ইউনিয়নটির বাসিন্দাদের যোগাযোগের জন্য রাস্তার ইট তুলে পাকাকরণ কাজের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩–এর আওতায় ২ হাজার মিটার রাস্তাটির কাজের জন্য ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৮২ লাখ ১৭ হাজার টাকা। কাজের দরপত্র পেয়ে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে কাজ শুরু করে ‘মেসার্স ফোর কিং ব্রাদার্স’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কয়েক মাস ধরে রাস্তা খুঁড়ে ইটের খোয়া ফেলার পর প্রতিষ্ঠানটির লোকজন কাজ ফেলে চলে যান। গত বছরের এপ্রিল মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও বাকি কাজ এখনো শেষ হয়নি।
গতকাল সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, খোয়া ভেঙে ধুলায় পরিণত হয়েছে। ধুলাময় পথ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের ব্রেক চাপলে অনেক সময় চাকা পিছলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মালেক বলেন, ‘সংস্কারের আগে সড়কটি দিয়ে তবু চলাচল করতে পারতাম। এখন তো চলাই কঠিন। দীর্ঘদিন রাস্তা মেরামতের কাজটি বন্ধ থাকায় গ্রামের লোকজনের চলাচলের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি মেরামতের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কে খোয়া ফেলার পর ম্যালা দিন থাকি কাজ বন্ধ করি রাখছে। শুনছি, ছাত্র আন্দোলনের মামলায় ঠিকাদার পালাইছে। এখন মাথা ঢেকে, মুখে মাস্ক পরেও চলাচল করা যায় না। খালি ধুলা আর ধুলা।’
এ বিষয়ে জানতে মেসার্স ফোর কিং ব্রাদার্স-এর স্বত্বাধিকারী সুজাউল ইসলামের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। তবে প্রতিবারই সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
রৌমারী উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারীর ছেলেকে ডেকেও কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা কাজ করছে না। শুধু কার্পেটিং বাকি থাকায় কাজটি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকেও দেওয়া যাচ্ছে না।