চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণিতে বিভিন্ন ইউনিট, উপ-ইউনিটে সাধারণ ও কোটা আসনে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বিষয় পছন্দক্রম (সাবজেক্ট চয়েজ) পূরণ শুরু হয়েছে। এ–সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ সোমবার (২১ এপ্রিল) থেকে আগামী সোমবার (২৮ এপ্রিল) পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী অনলাইনে সাবজেক্ট চয়েজ ফরম পূরণ করতে পারবেন।

সাধারণ আসনের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটে ১ থেকে ৮ হাজার মেধাক্রম পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটে ১ থেকে ৭ হাজার, ‘বি-২’ উপ-ইউনিটে মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থী ‘সি’ ইউনিটে ব্যবসায় শিক্ষার্থীদের ১ থেকে ২ হাজার ১, মানবিক শিক্ষার্থীদের ১ থেকে ৭১ এবং বিজ্ঞান ইউনিটে ১ থেকে ১ হাজার পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। এ ছাড়া ‘ডি’ ইউনিটে ১ থেকে ৮ হাজার পর্যন্ত।

আরও পড়ুনজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে সরকার, আবেদন শুরু১৫ এপ্রিল ২০২৫

‘বি-১’ ও ‘ডি-১’ উপ-ইউনিটের আবেদন আগামী বৃহস্পতিবার শুরু থেকে চলবে সোমবার পর্যন্ত। এখানে লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। কোটা আসনের ক্ষেত্রে ‘এ’ ইউনিটের বিভিন্ন কোটায় উত্তীর্ণ (সব), ‘বি’, ‘ডি’ ইউনিটে এবং ‘বি-২’ উপ-ইউনিটে শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটায় (পিসিকিউ) সব আবেদনকারী। এ ছাড়া ‘বি-১’ ও ‘ডি-১’ উপ-ইউনিট লিখিত (এমসিকিউ) ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ (সব) শিক্ষার্থীরা আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।

ব্যবসায় অনুষদভুক্ত শিক্ষার্থীদের কোটার আসনের জন্য প্রযোজ্য

নৃ-গোষ্ঠী কোটায় ১ থেকে ১৩, অ-উপজাতীয় কোটা ১ থেকে ৮, ওয়ার্ড কোটা ১ থেকে ৫ পর্যন্ত, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ১ থেকে ১৩ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। এ ছাড়া শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটায় উত্তীর্ণ সব আবেদনকারী।

আরও পড়ুননিউজিল্যান্ডের ‘টঙ্গারেওয়া স্কলারশিপ’, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের সুযোগ১৯ এপ্রিল ২০২৫

বিজ্ঞান গ্রুপের শিক্ষার্থীদের জন্য নৃ-গোষ্ঠী কোটায় ১ থেকে ১৫, অ-উপজাতি ১ থেকে ১২, ওয়ার্ড ১ থেকে ১৪ এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১ থেকে ১৮ পর্যন্ত মেধাক্রম শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। এ ছাড়া বিকেএসপিতে ১ জন এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে সব আবেদনকারী আবেদন করতে পারবেন। ‘সি’ ইউনিটে কোটার জন্য মানবিকের কোনো শিক্ষার্থী নেই।

বিস্তারিত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুনজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেশনাল মাস্টার্স, আবেদনের সময় বৃদ্ধি১৮ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রব ন স মব র

এছাড়াও পড়ুন:

মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন

মানুষের হৃদয়ে ঈমানের আগুন জ্বালানোর প্রয়াসে শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভী (১৮৮৫-১৯৪৪) গড়ে তুলেছিলেন জামায়াতে তাবলিগ, যা বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের এক অপূর্ব নজির। তাঁর বাণী ও উপদেশের সংকলন ‘মালফুজাত’ নামে আরবি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে, যা তাঁর দাওয়াতি দর্শন ও তরবিয়তি পদ্ধতির এক জীবন্ত দলিল। দামেস্কের দারুল কলম থেকে প্রকাশিত এই গ্রন্থ, শায়খ আদিল হাররাজি আল-ইয়ামানি আন-নাদভির তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত, তাবলিগ জামায়াতে মূল দর্শনের প্রাথমিক উৎস হিসেবে বিবেচিত। এটি শুধু মুহাম্মদ ইলিয়াসের বাণীর সংকলন নয় বরং একটি ঐতিহাসিক ও দাওয়াতি দলিল, যা আধুনিক ইসলামি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্মূল্যায়নের দাবি রাখে।

‘মালফুজাত’-এর শিক্ষা

শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াসের মজলিস মালফুজাত সংরক্ষণ করেছেন তাঁর শিষ্য মুহাম্মদ মানজুর। তাবলিগ জামায়াতে ছয়টি মূলনীতি—কালিমা, নামাজ, ইলম ও জিকর, ইকরামুল মুসলিমিন, ইখলাস ও নিয়ত এবং আল্লাহর পথে বের হওয়ার ভিত্তিতে গ্রন্থটি রচিত। তিনি তাওহিদকে (আল্লাহর একত্ব) নাজাতের মূল ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাওহিদের দুর্বলতা মুসলিমদের অধঃপতনের কারণ’। তিনি ফরজ ইবাদতের প্রাধান্য, জিকিরের প্রাচুর্য এবং তাকওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ফরজগুলোর মর্যাদা নফলের চেয়ে অনেক উঁচুতে। নফলের উদ্দেশ্য ফরজগুলোর ঘাটতি পূরণ করা’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।

তাঁর দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল সরল কিন্তু গভীর। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যম হিসেবে দেখতেন, যা তাবলিগের একটি বৈশিষ্ট্য। তিনি রিয়া (লোকদেখানো) ও বিতর্ক এড়ানোর পরামর্শ দেন, বলেন, ‘ইখলাস (খাঁটি আল্লাহর জন্য) ছাড়া কোনো কাজ কবুল হয় না।’ তাঁর দৃষ্টিতে, দাওয়াতের লক্ষ্য হলো আল্লাহর আদেশকে মানুষের স্বভাবে পরিণত করা, যাতে নিষিদ্ধ কাজ তার কাছে অপছন্দনীয় হয়। তিনি জিকিরকে এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রধান উপায় হিসেবে বিবেচনা করতেন।

শায়খ ইলিয়াসের দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল তাওয়াজ্জুহ বা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের পরিবর্তে তাজকিয়া (আত্মশুদ্ধি) ও ইখলাসের ওপর কেন্দ্রীভূত। তিনি জটিল তাত্ত্বিক আলোচনার পরিবর্তে সরল নসিহতের ওপর জোর দিতেন। তাঁর মতে, দাওয়াত হবে এমন, যেন ‘আল্লাহর আদেশ মানুষের স্বভাব হয়ে যায়’। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে তুলনা করতেন সাহাবিদের ত্যাগের সঙ্গে, যা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে আধ্যাত্মিক উন্নতি আনে। তিনি বলেন, ‘দাওয়াতে আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরজ, কিন্তু কতজন এই ফরজ পালন করে?’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।

আরও পড়ুনসুরা হুমাজাতে চারটি পাপের শাস্তির বর্ণনা০৬ মে ২০২৫

ঐতিহাসিক পটভূমি

মুহাম্মদ ইলিয়াস ভারতের কান্ধলায় একটি আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দেওবন্দি সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে তাঁর শৈশব কাটে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন, সাধারণ মুসলিমদের ধর্মীয় অজ্ঞতা এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ তাঁর দাওয়াতি চিন্তার পটভূমি। তিনি বিশ্বাস করতেন, শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মুসলিমদের সংস্কার করতে পারবে না। তাই তিনি একটি জনগণভিত্তিক, বিকেন্দ্রীকৃত আন্দোলন শুরু করেন, যেখানে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা দাওয়াতে অংশ নেয়। তিনি নবীর (সা.) মক্কার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হন, যেখানে তিনি ঘুরে ঘুরে মানুষকে দাওয়াত দিতেন। তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) মক্কায় তাওয়াফ করে মানুষকে হকের দাওয়াত দিতেন’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।

গ্রন্থের গঠন ও সম্পাদনা

মালফুজাত তাঁর মজলিসের সংকলন হলেও এটি একটি সুশৃঙ্খল দাওয়াতি দলিল। সম্পাদনা করেছেন আবুল হাসান আলী নাদভি (রহ.)-এর শিষ্য শেখ আদিল হাররাজি। মুফতি মুহাম্মদ তকী উসমানী, ড. খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি ও নূরুল হাসান রাশিদ কান্ধলভী প্রমুখের মতো পাকিস্তান ও ভারতের শীর্ষস্থানীয় ইসলামবেত্তাদের ভূমিকা গ্রন্থটিকে মহামূল্য করে তুলেছে। তাদের ভূমিকাগুলো গ্রন্থের দাওয়াতি ও ঐতিহাসিক পটভূমি বুঝতে সাহায্য করবে। আলী নাদভির সঙ্গে মুহাম্মাদ ইলিয়াসের আধ্যাত্মিক সম্পর্ক এবং তাবলিগের বিশ্বব্যাপী প্রভাবও এতে তুলে ধরা হয়েছে।

আজ যখন মুসলিম বিশ্ব নানা সংকটের মুখোমুখি, এই গ্রন্থ আমাদের তাওহিদ, ইখলাস ও তাজকিয়ার প্রতি ফিরে যেতে আহ্বান জানায়। এটি প্রতিটি দাঈ ও মুসলিমের জন্য একটি পাঠ্য, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ‘দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীনকে জীবন্ত করে তুলতে হবে।’

সূত্র: আল-জাজিরা ডটনেট

আরও পড়ুন সুরা ইউসুফের সারকথা১৫ জুলাই ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুলনায় ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতা শুরু
  • সচিবালয়ে আবারও বিক্ষোভ কর্মচারীদের
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স, সিজিপিএ ২.৫ হলেই আবেদন
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৬ জুন ২০২৫)
  • ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সেরা
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৫ জুন ২০২৫)
  • অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আরও যাঁরা পেয়েছেন ‘দ্য কিংস ফাউন্ডেশন পুরস্কার ২০২৫’
  • সৌদি আরবের ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ, আবেদনের শেষ তারিখ আজ 
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৪ জুন ২০২৫)
  • মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন