বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সংবিধানসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কার নিয়ে আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে সবচেয়ে ‘জনপ্রিয়’ শব্দ হলো সংস্কার। সবাই চায়, পুরোনো স্বৈরশাসন আর কোনোভাবেই ফিরে না আসুক; দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হোক; বন্ধ হোক রাজনৈতিক হানাহানি এবং সব ক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ।

জনগণের এই অভিপ্রায়কে উপলব্ধি করেই হয়তো অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল, যাদের কাজ সংস্কারের জন্য সুপারিশমালা প্রণয়ন করা।

এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের সংবিধান, আইনসভা, নির্বাচনী ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, প্রশাসনসহ সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ঢেলে সাজানো হবে। সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ অন্যান্য কমিশন যে সুপারিশমালা প্রণয়ন করেছে, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

আলোচনা দীর্ঘ না করে যে বিষয়টির দিকে দৃষ্টিপাত করতে চাই সেটি হলো, বিচার বিভাগ সম্পর্কে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ সম্পর্কে। সুপারিশগুলোর মধ্যে একটি ভালো দিক হলো, কমিশন সুপারিশ করেছে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের সব বিভাগে হাইকোর্ট বিভাগের সমান এখতিয়ারসম্পন্ন স্থায়ী আসন স্থাপন করা হবে।

কমিশনের এই সুপারিশ অনেকটা সামরিক স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের আমলে নেওয়া বিচার বিভাগকে বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থার মতো, যা বিচার বিভাগের অসহযোগিতার কারণে বাতিল হয়ে যায়। তবে মূল সমালোচনার বিষয়টি হলো সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের জন্য প্রস্তাবিত জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্টস কমিশনের গঠন এবং বিচারক নিয়োগ নিয়ে।

জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্টস কমিশনের গঠন

সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্টস কমিশন প্রতিষ্ঠা করা গেলে বিচারক নিয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ হবে এবং সততা, নিষ্ঠা, মেধা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জ্ঞান, পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ দেওয়া যাবে।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, প্রস্তাবিত সাত সদস্যের ‘স্বাধীন’ জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্টস কমিশনের প্রধান হবেন প্রধান বিচারপতি। সদস্য হিসেবে থাকবেন আপিল বিভাগের পরবর্তী দুই জ্যেষ্ঠ বিচারক, হাইকোর্ট বিভাগের পরবর্তী দুই জ্যেষ্ঠ বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সংসদের প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষ কর্তৃক মনোনীত একজন নাগরিক।

 উচ্চকক্ষ কর্তৃক মনোনীত একজন নাগরিককে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হলে তা বিচার বিভাগীয় নিয়োগসংক্রান্ত কমিশনের ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক চরিত্রকে তুলে ধরবে’ বলে বিবেচনা করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। লক্ষণীয় হলো, জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্টস কমিশন একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিশেষায়িত সংস্থা। এই কমিশনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বা ‘বিশেষজ্ঞ’ ব্যক্তিদের পাশাপাশি একজন ‘সাধারণ’ নাগরিকের নিয়োগ কতটুকু যুক্তিযুক্ত?

সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগ

সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সাধারণভাবে যে শর্তটি দেওয়া হয়েছে তা হলো তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হবেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতাগুলো হলো:

ক.

সুপ্রিম কোর্টে কমপক্ষে ১০ বছর অ্যাডভোকেট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; অথবা

খ. বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যে কমপক্ষে ১০ বছর বিচার বিভাগীয় পদে দায়িত্ব পালন করতে হবে; অথবা

গ. বাংলাদেশের যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

প্রথম দুটি শর্ত নিয়ে কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। কারণ, ওই দুই শর্তে যাঁদের নিয়োগের কথা বলা হয়েছে, তাঁরা সরাসরি বিচারিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। তবে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপকদের বিচারক হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে। আইনের অধ্যাপকদের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করা কি আদৌ সম্ভব?

আরও পড়ুনবিচার বিভাগ প্রকৃত পৃথক্‌করণের এখনই সময়০৮ নভেম্বর ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপকদের বিচারক হিসেবে নিয়োগের সম্ভাব্য সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক। গত দুই-আড়াই দশকে বাংলাদেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যেভাবে রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেটি অতিমাত্রায় বিতর্কিত। সেখানে যে যোগ্য মানুষ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হননি, সেটি নয়। কিন্তু একটি বিরাট অংশের শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত হন রাজনৈতিক বিবেচনায়। যত ভালো ফল হোক না কেন রাজনৈতিক বিবেচনায় উত্তীর্ণ অথবা ক্ষমতাসীন দলের কাছের কোনো প্রভাবশালী অধ্যাপকের সমর্থন ছাড়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া প্রায় অসম্ভব; যদিও দু-একটি ব্যতিক্রম যে নেই, তা নয়।

হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া বাংলাদেশের অর্ধশত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মধ্যেই। অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ই আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে নির্ভর করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষকদের ওপর। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে নিয়মিত বেতন নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে দৌড়াদৌড়ি করা এসব অধ্যাপকের নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিচারক হিসেবে নিয়োগ করা হলে একজন ‘দলবাজ’ কিংবা ‘দুর্বল নৈতিকতার অধিকারী’ অধ্যাপক খুব সহজেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হয়ে যেতে পারবেন। তাঁর কাছে হয়তো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা বিবেচ্য বিষয় হবে না। বিচার বিভাগে গিয়ে তিনি পক্ষপাত বা দুর্নীতি করবেন, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এ বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিচারক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ কতটুকু যৌক্তিক?

বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে শিক্ষকতা করা এবং আদালতে বিচার করা—দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। মনে রাখতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা শ্রেণিকক্ষে পড়ান বা গবেষণা করেন। অন্যদিকে বিচারকাজ হলো একটি প্রায়োগিক বিষয়। আদালতে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ছাড়া এটা অন্য কোনোভাবে অর্জন করা সম্ভব নয়। বিচারকাজের জন্য দরকার বিচারিক মন, শক্ত নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ এবং সর্বোপরি বিচারপ্রার্থীদের প্রতি সহানুভূতি।

একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিচারকের আসনে বসে যখন বিচারকাজ শুরু করবেন, তখন তাঁকে শুরু থেকে বিষয়টি শিখতে হবে। অর্থাৎ একজন শিক্ষানবিশ বিচারকের মতো শুরু করতে হবে। কাজ করতে গিয়ে যখন তিনি খেই হারিয়ে ফেলবেন, তখন তাঁকে নির্ভর করতে হবে আইনজীবী, বেঞ্চ অফিসার, সহকারী বেঞ্চ অফিসারসহ অন্যদের ওপর। এ সুযোগে তাঁরা বিচারককে প্রভাবিত করতে পারেন, এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

তাঁর (আইনের অধ্যাপক থেকে বিচারক বনে যাওয়া) অনভিজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে বিচারকাজকে প্রহসনে পরিণত করবেন তাঁরা। ফলে বিচারপ্রার্থীরা সঠিক বিচার পাবেন না। রাষ্ট্র যে অর্থ ও সুযোগ-সুবিধা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে হওয়া বিচারকদের পেছনে ব্যয় করবে, তা অপচয় বা অপব্যবহার হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। সবচেয়ে বড় ক্ষতি হবে বিচারপ্রার্থীদের এবং দেশের বিচারব্যবস্থার।

এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেভাবে শিক্ষকদের বিভিন্ন গ্রুপ, উপগ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি করে সুপ্রিম কোর্টেও পেশাদার বিচারক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রুপ সৃষ্টি হতে পারে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ থেকে এমনটা প্রতীয়মান হয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ বাংলাদেশের প্রশাসন ক্যাডারের আদলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরাসরি নিয়োগের সুবিধা নিতে যাচ্ছেন, যা অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হয়ে দেশের লাখ লাখ বিনিয়োগকারীকে পথে বসিয়ে এখন কারাগারে। জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারকাত যে সর্বনাশ করেছেন, সেটি সবারই জানা। এ রকম উদাহরণ থাকার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ কি ইতিবাচক?

কেন এমন সুপারিশ?

৯ সদস্যের সংবিধান সংস্কার কমিশনে সদস্য হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের দুই অধ্যাপক এবং একই বিভাগের দুই শিক্ষার্থী (পর্যায়ক্রমে)। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিচারক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশের ক্ষেত্রে কমিটির এই সদস্যদের ভূমিকা থাকতে পারে, কেউ যদি এমন অভিযোগ করেন, তাহলে কি খুব ভুল হবে? এই সমালোচনা খণ্ডন করবেন কীভাবে? ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি’র কথা বলা যেতে পারে, তবে সেটা যথেষ্ট যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য বলে প্রতীয়মান হয় না।

গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে একধরনের সমর্থন রয়েছে। সেই সমর্থন কিন্তু এমন নয়, সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাবে ‘অযৌক্তিক’ কোনো কিছু বলা হলে দেশের মানুষ সেটা বিনা প্রশ্নে গ্রহণ করবেন।

সাধারণভাবে মানুষের চাওয়া হলো এমন কিছু সংস্কার করা হবে, যার মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ভবিষ্যতে যাতে আর স্বৈরাচারী না হতে পারে; দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ হবে, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এবং সর্বোপরি একটি উদার স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে টিকে থাকবে।

কিন্তু বিচার বিভাগ সংস্কারের নামে সংবিধান সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করেছে, সেগুলো দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

সংস্কার কমিশন যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষকদের বিচারক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করেছে, সেটি পক্ষপাতমূলক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।

অনির্বাচিত নাগরিক নিয়োগ

সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে অনির্বাচিত নাগরিকদের নিয়োগের সুপারিশের প্রবণতা দেখা গেছে, যেসব স্থানে সাধারণত নির্বাচিত প্রতিনিধিরা থাকেন। যেমন সংসদের উচ্চকক্ষে পাঁচজন নাগরিককে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে তাঁরা নির্বাচন না করে এবং রাজনৈতিক দলের সমর্থন ও জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মতোই সুযোগ-সুবিধা, মর্যাদা ভোগ করবেন।

এভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নাগরিকদের যুক্ত করা কতটুকু গ্রহণযোগ্য? একটা বিষয় লক্ষণীয়, বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নাগরিক সমাজ গড়ে উঠেছে কি না, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তথাকথিত নাগরিক সমাজের সদস্যদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। উচ্চকক্ষের সদস্য হয়ে তাঁরা কি সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবেন? এসব নাগরিকের দায়বদ্ধতা কোথায়? নির্বাচিতরা জনগণ ও নিজ রাজনৈতিক দলের কাছে জবাবদিহি করবেন, কিন্তু অনির্বাচিতরা জবাবদিহির বাইরে থাকবেন—এটা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।

কামরান রেজা চৌধুরী সাংবাদিক

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইন ব ভ গ র সদস য হ স ব প রস ত ব ত ন র জন ত ক র জন য শ কর ছ কর ত ক করব ন ব ষয়ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যালটে মামদানি, অদৃশ্য ‘প্রার্থী’ ট্রাম্প

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন আগামীকাল মঙ্গলবার। ‘বিশ্বের রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত এই শহরে প্রথমবার এমন একজন মেয়র পদে নির্বাচিত হতে পারেন, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির চলতি ধারার একদম বিপরীতমুখী। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর রিপাবলিকান পার্টি এক ‘শ্বেতকায়, খ্রিষ্টান ও রক্ষণশীল’ আমেরিকার কথা বলছেন।

জোহরান মামদানি শ্বেতকায় নন, তিনি বাদামি রঙের দক্ষিণ এশীয়। তিনি খ্রিষ্টান নন, একজন মুসলিম। তিনি অবশ্যই রক্ষণশীল নন, তিনি খোলামেলাভাবে একজন প্রগতিশীল, যিনি নিজেকে সমাজতন্ত্রী বলতে দ্বিধা করেন না।

‘মামদানি একজন ভয়ানক মানুষ’, সাবধান করে বলেছেন অ্যান্ড্রু কুমো, মঙ্গলবারের নির্বাচনে যিনি মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বী। সারা জীবন ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য থাকলেও বাছাইপর্বে পরাজিত হয়ে তিনি এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন।

ব্যালটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নাম না থাকলেও এই নির্বাচনে তিনি একজন অদৃশ্য প্রার্থী। কুমোর পক্ষ নিয়ে তিনিও এই নির্বাচনের একজন অংশগ্রহণকারী। বড় ব্যবধানে মামদানির বিজয় হলে অনেকেই তা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অনাস্থা হিসেবেই দেখবেন।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্কের আদি বাসিন্দা। তিনি কোনোভাবেই চান না মামদানি এই শহরের মেয়র নির্বাচিত হোন। তাঁর বিবেচনায় মামদানি শুধু একজন পাক্কা কমিউনিস্টই নন, রীতিমতো উন্মাদ। এমন একজনকে নির্বাচিত করা হলে তিনি নিউইয়র্ক সিটির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল আটকে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, মামদানি একজন অবৈধ অভিবাসী। তা প্রমাণিত হলে তাঁকে বহিষ্কার করা হবে। মেয়র নির্বাচিত হয়ে মামদানি যদি অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের চলতি অভিযানে বাধা দেন, তাহলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে, এমন হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।

শহরের প্রতিটি প্রধান কেন্দ্র হেঁটে জনসংযোগ সেরেছেন মামদানি। ৫০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক, যাঁদের অধিকাংশই নবীন, শহরের প্রতিটি বাসায় কড়া নেড়েছেন। টিকটক ও ইউটিউবে তাঁর উপস্থিতি অভূতপূর্ব। মামদানির এই ‘মাঠপর্যায়ের খেলা’ ঠেকাতে কুমো বেছে নিয়েছেন একদিকে ঘৃণা, অন্যদিকে ভীতি।

ট্রাম্পের ব্যাপারে জনরায়

শুধু নিউইয়র্কে নয়, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আরও অন্তত তিনটি রাজ্যে নির্বাচন হবে আগামীকাল, যার ফলাফল ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের ব্যাপারে একটি রেফারেন্ডাম বা জনরায় হবে ভাবা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে নিউ জার্সি ও ভার্জিনিয়ায় গভর্নর পদে নির্বাচন। এই দুই রাজ্যে প্রতিনিধি পরিষদ ও উচ্চ পরিষদেও ভোট গ্রহণ করা হবে। উভয় রাজ্যই ডেমোক্রেটিক রাজনীতির সমর্থক, বা ‘ব্লু স্টেট’। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই দুই রাজ্যেই ট্রাম্পের হার হয়, কিন্তু ২০১৬ সালের তুলনায় তিনি অনেক ভালো ফল করেন। দেখার বিষয়, দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে এই দুই রাজ্যে ট্রাম্পের জনসমর্থন এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে।

এ ছাড়া ক্যালিফোর্নিয়ায় গভর্নর গেভিন ন্যুসাম নির্বাচনী ম্যাপ পরিবর্তনের অনুমতি চেয়ে একটি গণভোটের আয়োজন করেছেন। আগামী বছরের নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে রিপাবলিকান পার্টি বড় রকমের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে। তা ঠেকাতেই ট্রাম্পের নির্দেশে টেক্সাসের নির্বাচনী ম্যাপ ঢেলে সাজানো হয়েছে, যার ফলে রিপাবলিকান দল কংগ্রেসে আরও পাঁচটি আসন নিজেদের দখলে আনতে সক্ষম হবে ভাবা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ‘ব্লু স্টেট’ ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর ন্যুসামের নির্দেশে নির্বাচনী ম্যাপ বদলানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার ফলে সেখানে ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্য কংগ্রেসে পাঁচটি আসনে বিজয়ের সম্ভাবনা তৈরি হবে।

এই তিনটি নির্বাচনের প্রতিটিতেই ভোটারদের মনে থাকবেন ট্রাম্প, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে আইনি বাধা উপেক্ষা করে বিভিন্ন ডেমোক্রেটিক শহরে অবৈধ অভিবাসনবিরোধী অভিযানের নামে সেনাসদস্যদের পাঠাচ্ছেন তিনি। যেসব ডেমোক্রেটিক নেতাকে শত্রু মনে করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছেন। কোনো যুক্তি বা কারণ ছাড়াই ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁর পক্ষে ভোট দেয়নি এমন ডেমোক্রেটিক রাজ্যের কেন্দ্রীয় অনুদান বাতিল করছেন। কংগ্রেসের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ছাড়াই একাধিক সরকারি দপ্তর আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রচলিত আইনের তোয়াক্কা না করে মাদক পাচার বন্ধের নামে ভেনেজুয়েলার সমুদ্রসীমায় সামরিক হামলা চালাচ্ছেন। আমদানি শুল্কের নামে যে বাণিজ্যযুদ্ধ তিনি শুরু করেছেন, তার ফলে নিত্যব্যবহার্য দ্রব্যের দাম বাড়া শুরু হয়েছে।

গ্যালপ জানাচ্ছে, ২০২১ সালে দেশের ৬০ শতাংশ মানুষ ধনতন্ত্রের সমর্থক ছিল, তা এখন কমে ৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই যে পরিবর্তিত আমেরিকা, ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা সে কথা জানেন না বা জানতে চান না। গাজা প্রশ্নে তাঁদের রক্ষণশীল অবস্থান দলটির প্রতি নবীন প্রজন্মের ভোটারদের অবজ্ঞার জন্ম দিয়েছে।

এসব কার্যকলাপের ফলে সারা দেশে ট্রাম্পের জনসমর্থন কমেছে। অধিকাংশ জনমত জরিপে তাঁর প্রতি সমর্থন ৪২ থেকে ৪৫ শতাংশের বেশি নয়। সাম্প্রতিক সময়ে মাত্র ১০ মাসের মাথায় অন্য আর কোনো প্রেসিডেন্টের জনসমর্থনে এমন ধস নামেনি।

এবারের নির্বাচনে ট্রাম্প কোনো রাজ্যেই ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি প্রচারে আসেননি। এমনকি রিপাবলিকান প্রার্থীদের পক্ষে সরব সমর্থনও জানাননি। এর একটা সম্ভাব্য কারণ, জয়ী হবেন এমন প্রার্থীর সমর্থন দিতেই ট্রাম্প ভালোবাসেন। আগামীকালের নির্বাচনে তেমন সম্ভাবনা কম।

এই নির্বাচন যে ট্রাম্পের ব্যাপারে জনরায়, তার আরেক প্রমাণ নির্বাচনী প্রচারণায় সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অংশগ্রহণ। ডেমোক্রেটিক পার্টিতে জাতীয় নেতা বলতে তিনিই সবেধন নীলমণি। শনিবার নিউ জার্সির ডেমোক্রেটিক গভর্নর পদপ্রার্থী মাইকি শেরিলকে পাশে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন তিনি। একই দিন ভার্জিনিয়ায় ডেমোক্রেটিক গভর্নর পদপ্রার্থী এবিগেইল স্প্যানবার্গারের পক্ষেও প্রচারণায় অংশ নেন তিনি। উভয় রাজ্যেই ওবামা কঠোর ভাষায় ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেন, ট্রাম্পের কর্তৃত্ববাদী নীতির কারণেই আমেরিকা আজ এক দুঃসময়ের মুখোমুখি।

জনমতে এগিয়ে মামদানি

ওবামা মামদানিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দেননি। তবে তিনি যে মামদানির পাশে আছেন, সে কথাও গোপন রাখেননি। মামদানির ক্যাম্পেইন থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ওবামা নিজেই ফোন করে জানিয়েছেন, তাঁর (মামদানির) বিজয়ের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তিনি বলেছেন, মামদানির নির্বাচনী প্রচার ‘ইম্প্রেসিভ’ বা নজরে পড়ার মতো।

কুমো ক্যাম্প থেকে অহোরাত্রি তাঁকে ‘কমিউনিস্ট’ ও ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ হিসেবে প্রচার সত্ত্বেও মামদানি যেসব জনমত জরিপে এগিয়ে, তার একটি বড় কারণ মাঠপর্যায়ে তাঁর এই ‘ইম্প্রেসিভ’ প্রচারণা। শহরের প্রতিটি প্রধান কেন্দ্র হেঁটে জনসংযোগ সেরেছেন মামদানি। ৫০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক, যাঁদের অধিকাংশই নবীন, শহরের প্রতিটি বাসায় কড়া নেড়েছেন। টিকটক ও ইউটিউবে তাঁর উপস্থিতি অভূতপূর্ব। মামদানির এই ‘মাঠপর্যায়ের খেলা’ ঠেকাতে কুমো বেছে নিয়েছেন একদিকে ঘৃণা, অন্যদিকে ভীতি। এতে তিনি ফল পাচ্ছেন, গত দুই সপ্তাহে মামদানির সঙ্গে তাঁর ব্যবধান ১০ শতাংশের মতো কমে এসেছে। নিউইয়র্কের চলতি মেয়র নির্বাচন থেকে এরিক অ্যাডামস সরে দাঁড়ানোয় কুমোর লাভ হয়েছে সন্দেহ নেই, তবে এখনো মামদানির সঙ্গে যে ১৬-১৭ পয়েন্টের ব্যবধান রয়েছে, তা অতিক্রম করা কার্যত অসম্ভব, এই মত অধিকাংশ পর্যবেক্ষকের।

ভূমিধস পরিবর্তন

একটা বিষয় স্পষ্ট। মেয়র নির্বাচনে মামদানি জয়ী হলে তা মার্কিন রাজনীতিতে প্রজন্মগত ও নীতিগত পরিবর্তনের সূচনা করবে। ভূমিধস পরিবর্তন আসবে ডেমোক্রেটিক পার্টির রাজনীতিতে। মধ্যপন্থী ও ডানঘেঁষা রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণে এই দল অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে কম জনপ্রিয়। এই দলে যাঁরা নেতৃত্বে, তাঁদের অধিকাংশই বয়োবৃদ্ধ, করপোরেট আমেরিকার কাছে এদের হাত-পা বাঁধা। ইসরায়েল প্রশ্নে তাদের সমর্থন এখনো আগের মতো নতজানু।

পিউ রিসার্চের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েল প্রশ্নে এখন নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে এমন আমেরিকানের সংখ্যা ৫৩ শতাংশ, যা তিন বছর আগের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। একইভাবে ধনতন্ত্রের প্রতিও আমেরিকানদের সমর্থন নিম্নগামী। গ্যালপ জানাচ্ছে, ২০২১ সালে দেশের ৬০ শতাংশ মানুষ ধনতন্ত্রের সমর্থক ছিল, তা এখন কমে ৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই যে পরিবর্তিত আমেরিকা, ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা সে কথা জানেন না বা জানতে চান না। গাজা প্রশ্নে তাঁদের রক্ষণশীল অবস্থান দলটির প্রতি নবীন প্রজন্মের ভোটারদের অবজ্ঞার জন্ম দিয়েছে।

অন্যদিকে ট্রাম্পের নেতৃত্বে রিপাবলিকান পার্টি খোলামেলাভাবে অভিবাসনবিরোধী, দক্ষিণপন্থী, খ্রিষ্টবাদী ও রক্ষণশীল। চলতি সপ্তাহের নতুন উদ্বাস্তু নীতিতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন শ্বেতকায় ও ইউরোপীয় আশ্রয়প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেবে। এই অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতকায় নাগরিকবৃন্দ, ট্রাম্প প্রশাসনের চোখে যারা সে দেশের সরকারের বৈষম্যের শিকার।

এই প্রতিক্রিয়াশীল রিপাবলিকান পার্টির বিপরীতে একটি আধুনিক ও প্রগতিশীল ডেমোক্রেটিক আন্দোলন গড়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ও কংগ্রেস সদস্য ওকাসিও-কর্তেজ ইতিমধ্যে এই আন্দোলনের প্রধান মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন। সবাই মানেন, মামদানির মতো তরুণ ও বুদ্ধিমান নেতৃত্ব এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে।

এই সম্ভাবনার কথা খুব স্পষ্ট করে বলেছেন বার্নি স্যান্ডার্স। তাঁর কথায়, এই দেশ করপোরেট আমেরিকার নির্দেশে চলবে, না তার রাজনীতির কেন্দ্রে থাকবে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ—এ মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। ‘যদি আমরা দ্বিতীয় পথটি বেছে নিতে চাই, করপোরেট আমেরিকার বদলে সাধারণ মানুষের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিই, তাহলে আমাদের মামদানির পাশে দাঁড়াতে হবে।’

কোন পথ বেছে নেবে নিউইয়র্ক, মঙ্গলবারেই তা নিশ্চিত হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
  • ব্যালটে মামদানি, অদৃশ্য ‘প্রার্থী’ ট্রাম্প
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স